Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুষ্টিয়ায় শতাধিক অবৈধ করাতকল

এস এম আলী আহসান পান্না, কুষ্টিয়া থেকে | প্রকাশের সময় : ১৫ জুন, ২০১৯, ১২:০৯ এএম

কাঠজাত সামগ্রী তৈরিতে করাতকলের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বের। তবে সে করাতকল হতে হবে বৈধ প্রক্রিয়ায়। কেউ যাতে অবৈধ উপায়ে করাতকল নির্মাণ করে অনুমোদন হীন বৃক্ষ উজাড় করতে না পরে সে জন্য করাতকল বিধিও রয়েছে। কিন্তু কুষ্টিয়ায় করাতকল বিধি কোনই কাজে আসছে না। বিধির প্রয়োগ না হাওয়ায় লাখ লাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। বিভাগীয় বন কর্মকর্তার দফতর সুত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ার ৬ উপজেলায় করাতকলের সংখ্যা ১৬৩টি। এরমধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় রয়েছে ৪৬টি করাতকল, কুমারখালি উপজেলায় ২৫টি, খোকসা উপজেলায় ১৫টি, ভেড়ামারা উপজেলায় ২২টি, মিরপুর উপজেলায় ২৭টি এবং দৌলতপুর উপজেলায় রয়েছে ২৮টি করাতকল। প্রতিষ্ঠিত এসব করাতকলের মধ্যে বৈধ লাইসেন্স রয়েছে মাত্র ৬১টির। বাকি ১০২টি করাতকলই চলছে অবৈধ প্রক্রিয়ায়। লাইসেন্স বিহীন এসব করাতকল চলছে কিভাবে।

গত দু’বছরে মধ্যে ওই সব করাতকলের বিরুদ্ধে বিধিগত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা এ সংক্রান্ত প্রশ্নের কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নিই বিভাগীয় বনকর্মকর্তার দপ্তর থেকে। তবে বিধিগত কিছু জটিলতাও রয়েছে বলে জানা যায় দপ্তর থেকে। করাতকল লাইসেন্স প্রদানের জন্য ২৫ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটি রয়েছে আবার প্রতিটি উপজেলায় রয়েছে ২৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি। যে কমিটির নাম উপজেলা ও জেলা পরিবেশ ও বন উন্নয়ন কমিটি। ওই কমিটির সুপারিশের প্রেক্ষিতে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা করাতকল লাইসেন্স প্রদান করতেন। বিধিটি ছিল করাতকল মালিক বান্ধব। ওই বিধিতে বলা হয়েছিল একজন করাতকল মালিক যে কোন সময় লাইসেন্স করতে পারবে। লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণের তিন মাসের মধ্যে মালিক তার সুবিধামতো সময় লাইসেন্স নবায়ন করতে পারবেন। সম্প্রতি করাতকল (লাইসেন্স) বিধিমালা ২০১২ নামে সংশোধিত বিধি প্রণিত হয়েছে। এ বিধিতে বলা হয়েছে মাত্র ৫ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটি গঠন করতে হবে। যে কমিটিতে জেলা প্রশাসক থাকবেন আহবায়ক, বিভাগীয় বনকর্মকর্তা/এসিএফ থাকবেন সদস্য সচিব। এছাড়া সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি কতৃক মনোনীত প্রতিনিধি, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি থাকবেন সাধারণ সদস্য। ৫ সদস্য বিশিষ্ট ওই কমিটি অনুমোদন দিলেই বিভাগীয় বন কর্মকর্তা প্রার্থীকে লাইসেন্স প্রদান করবেন। নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যেই লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে। নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে লাইসেন্স নবায়ন করতে ব্যর্থ হলে পরবর্তি তিন মাসের মধ্যে তাকে নতুন করে লাইসেন্স করতে হবে। আইনের এমন কঠোরতা সত্বেও করাতকল মালিকরা কিভাবে লাইসেন্স বিহিন ব্যবসা করে যাচ্ছে তা কারো বোধগম্য নয়। সূত্রমতে, করাতকল বিধি ২০১২ মাতে কুষ্টিয়ার সব কটি করাতকলই অবৈধ। কেননা লাইসেন্সধারী অধিকাংশ করাতকলই মেয়াদোত্তির্ণের তালিকায়। বিধির প্রয়োগ না ঘটায় করাতকল মালিকরা তাদের ইচ্ছেমত বৃক্ষ কর্তনপূর্বক বন উজাড় করছে। তবে করাতকল বিধির প্রয়োগ পূর্বক বন উজাড়কারী করাতকল মালিকদের লাগামটা এখনই টেনে ধরা দরকার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ