মটর সাইকেল: নিউ নরমাল পরিস্থিতিতে (নতুন বাস্তবতায়)
মটরসাইকেল নিরাপদ, অধিক সুবিধাজনক, খরচ এবং সময় বাঁচায়। গণপরিবহনে একে অন্যের গা ঘেঁষে চলাচলে প্রতিদিন
কে এম বেলায়েত হোসেন
চলছে অবাধ তথ্য প্রবাহের যুগ। আর এতে বরাবরের মতোই শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে প্রিন্ট মিডিয়া। সেই সাথে যোগ হয়েছে অনলাইনভিত্তিক গণমাধ্যম। স্বচ্ছতা এবং টেন্ডার ড্রপিং কোনো রকম বাধা ছাড়াই নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে চালু হয়েছে ই-টেন্ডারিং। যা আগামী বছরের শুরুতেই সর্বস্তরে ই-টেন্ডারিং চালু করার চূড়ান্ত পরিকল্পনা করছে সরকার। ফলে তথাকথিত ছাত্র সংগঠন, রাজনৈতিক দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন, এক শ্রেণির নেতাকর্মীর মাস্তানী ও দৌরাত্ম্য বন্ধ এবং টেন্ডার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু ইতোমধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠানে ই-টেন্ডারিং চালু হওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে মধ্যম শ্রেণি ও আঞ্চলিক পর্যায়ের সংবাদপত্র। কারণ এসব প্রতিষ্ঠানের অন্যতম আর্থিক যোগান আসে সরকারি বিজ্ঞাপন থেকে। ই-টেন্ডারে বিজ্ঞাপনের আকার (সাইজ) ছোট হওয়ার কারণে এবং সরকারি নীতিমালায় ন্যূনতম একটি ইংরেজি ও একটি বাংলা কাগজে প্রকাশের নির্দেশনা থাকায় সরকারি কর্মকর্তারাও এর ব্যত্যয় ঘটাতে নারাজ। ফলে এসব বিজ্ঞাপন চলে যাচ্ছে প্রথম সারির পত্রিকাগুলোতে। সঙ্গত কারণে গ্যাঁড়াকলে পড়তে হচ্ছে মধ্যম সারির ও আঞ্চলিক সংবাদপত্রগুলো।
তথ্যপ্রযুক্তির যুগে ই-টেন্ডারিংকে অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। তা ছাড়া স্বাধীনতার পর থেকে তথাকথিত ছাত্র সংগঠন, রাজনৈতিক দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের এক শ্রেণির মাস্তানদের দৌরাত্ম্যে টেন্ডার জমা দিতে গিয়েও বাধাগ্রস্ত হয়। এ কারণে কোথাও কোথাও মারামারি, প্রাণহানি, সরকারি কর্মকর্তারা হেনস্তার শিকার হন। এ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ই-টেন্ডারিংয়ের কোনো বিকল্প নেই। প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে এ লেখা কেন?
তথ্য প্রবাহের এ যুগে প্রিন্ট মিডিয়ার বিকল্প নেই। তাই এ গণমাধ্যমকে টিকিয়ে রাখতে বিজ্ঞাপনের রেট বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে সংবাদকর্মীদের বেতনও। কিন্তু বিজ্ঞাপনের আকার এত ছোট করা হয়েছে যে, এর মাধ্যমে প্রাপ্ত আয় দিয়ে মধ্যম সারির আঞ্চলিক সংবাদপত্রের ব্যয় সংকুলান কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তা ছাড়া একটি বিজ্ঞাপন ১টি বাংলা ও ১টি ইংরেজি পত্রিকায় দেওয়ার বিধান করা হয়েছে, যা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। এখানে ন্যূনতম দুটির পরিবর্তে ৪টি বাংলা এবং একটি ইংরেজি পত্রিকায় প্রকাশের দাবি অনেকদিন থেকে সংবাদপত্রগুলো করে আসছে। পাশাপাশি ই-টেন্ডারিংয়ের সাথে সাথে ই-টেন্ডারিংয়ের ওয়েব পোর্টালে যে আকারে (সাইজ) বিজ্ঞাপন যাচ্ছে প্রিন্ট মিডিয়াতেও ছোট না করে একই আকারে প্রকাশের দাবিও দীর্ঘদিনের। এ বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে একাধিক আবেদন ইতোমধ্যে করা হয়েছে।
সাধারণ জনতা দেশের উন্নয়ন কর্মকা- প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারে। যেহেতু এখনো ইন্টারনেটের আওতায় গণমানুষ আসেনি সেহেতু প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে তারা আরো জানতে পারে তাদের এলাকার ব্রিজ, কালভার্ট, সড়ক, স্কুল-কলেজসহ যে কোনো উন্নয়ন কর্মকা-ের তথ্য। ফলে যেখানে অবাধ তথ্য প্রবাহের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে ই-টেন্ডারিং অবাধ তথ্য প্রবাহকে এ ক্ষেত্রে ব্যাহত করছে।
আজকের দিনে করপোরেট হাউজগুলো গণমাধ্যমের মালিক হওয়ার কারণে এ বিষয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। বর্তমান সরকার সংবাদপত্রকে শিল্প ঘোষণা করে সংবাদপত্র তথা গণমাধ্যমকে ১টি স্বপ্ন দেখিয়েছে। ফলে সেটিকে রক্ষা করতে হলে সরকারকেই এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ শিল্প বিশেষ গোষ্ঠীর হাতে চলে গেলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশ ও জাতি।
ষ লেখক : গণমাধ্যমকর্মী
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।