পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বয়সসীমা নির্ধারণ না করে ধারাবাহিকভাবেই করার দাবি জানিয়ে আসছে বিলুপ্ত কমিটির নেতারা। এই দাবিতে মঙ্গলবার দিনভর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান, গেইটে তালা ঝুলিয়ে দেয়া, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নও করে দেন তারা। ভেতরে অবস্থান করা ছাত্রদলের পূর্ব শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম নয়নসহ বেশ কয়েকজনকে মারধর করে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। এমনকি বিক্ষোভ চলাকালে কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে উদ্দেশ্য করে অশালীন ভাষায় গালাগালি ও তাকে কার্যালয় থেকে বের করে দেয়ার জন্য এম্বুলেন্সও আনেন ছাত্র নেতারা। বিলুপ্ত কমিটির নেতাদের আন্দোলনের মধ্যে গতকাল বিকেলে কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন সহ-সভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগরীর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের ডেকে নিয়ে বৈঠক করেন ছাত্রদলের সাবেক নেতারা (যাদেরকে কাউন্সিল আয়োজনের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে)। বৈঠকে বিক্ষুব্ধদের দাবির বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে আলোচনার আশ্বাস দেন তারা। তাদের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ২৪ ঘণ্টার জন্য কর্মসূচি স্থগিত করেন বিলুপ্ত কমিটির নেতারা। তবে গতকাল রাত ৮টায় এই রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত গুলশানে বৈঠকে বসেছিলেন সাবেক ছাত্র নেতারা। অন্যদিকে কোন সিদ্ধান্ত না জানানোয় সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির পাশে বৈঠকে বসেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র নেতারা।
আন্দোলনকারীদের বৈঠকে উপস্থিত একাধিক ছাত্র নেতা জানান, কমিটি গঠনে বয়সসীমা তুলে দিয়ে ধারাবাহিকভাবে সিনিয়রদের দিয়ে কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন তারা। সেই দাবির বিষয়ে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছিলেন সাবেক ছাত্র নেতারা। তাদের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ২৪ ঘণ্টার জন্য আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছিল। কিন্তু রাত ৮টা পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত না আসায় আজ বৃহস্পতিবার থেকে ফের আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন তারা। ছাত্রদলের এক সহ-সভাপতি জানান, গুলশানে যে বৈঠক সেখান থেকে যদি আমাদের জন্য ইতিবাচক কোন সিদ্ধান্ত না আসে তাহলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। কি ধরণের কর্মসূচি দেয়া হবে জানতে চাইলে ওই ছাত্র নেতা বলেন, আমরা কোন সহিংসতায় জড়াবো না। আগামীকাল (আজ) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে আমরা অবস্থান নেবো। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে ছাত্রদল ও বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, ছাত্রদলের বিক্ষোভকে পুঁজি করে একটি অংশ নিজেদের ফায়দা লুটতে চায়। ওই সূত্রগুলো জানায়, ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধরা কমিটিতে পদ-পদবী পাওয়ার জন্য আন্দোলন করলেও তাদের এই ইস্যু দিয়ে বিএনপির একটি অংশ নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। বিশেষ করে দলের সঙ্কটকালীন সময়ে যখন অন্য নেতারা ঘর থেকে বের হননি সে সময় গ্রেফতারভীতি দূরে ঢেলে দিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ১৬ মাস ধরে ঘর-বাড়ী ছেড়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করছেন। অন্য যে কোন নেতার চেয়ে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। তার এসব কর্মকান্ডই অনেক নেতার চক্ষুশ্যূল হয়েছে। এজন্য তাকে কার্যালয় থেকে বের করতে এবং দপ্তরের দায়িত্ব বিএনপির এক সিনিয়র নেতার ঘনিষ্ঠজনকে (সাবেক ছাত্র নেতা) দিতে নানামুখী চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ৩ জুন ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পর ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী নেতারা বিএনপির সিনিয়র কয়েকজন নেতার সাথে বৈঠক করেন। সাবেক ছাত্র নেতাদের দুইজন ছাত্রদের বিক্ষোভকে নিজেদের ফায়দা হাসিলের জন্য দায়িত্ব নেন। তারা বিক্ষুব্ধদের নিয়ে দুই দফা বৈঠকও করেন। সেই বৈঠকে ছাত্রদল নেতাদের বোঝানো হয় কমিটি বিলুপ্ত করা এবং সিনিয়রদের বাদ দেয়ার পেছনে দায়ী রুহুল কবির রিজভী। এজন্য বিল্প্তু কমিটির নেতাদের উস্কে দেয়া হয় রুহুল কবির রিজভীকে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বের করে দেয়ার। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতা জানান, রিজভীকে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বের করে দিয়ে সেটি দখলে নিতে মরিয়া একটি সিন্ডিকেট।
সিন্ডিকেটের সদস্যরা ছাত্রদলের নেতাদের নিয়ে কয়েকদফা বৈঠকে কমিটি বিলুপ্ত করা ও বয়স নির্ধারণের ব্যাপারে রিজভীর কাছে জবাবদিহি চাইতে সবাইকে দফতরে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এ ইস্যু নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে একপর্যায়ে রিজভী আহমেদকে কার্যালয় থেকে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দেয়ার পরামর্শও দেয়া হয়েছে। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছাত্রদলের বিক্ষুপ্ত কমিটির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব শর্ত জানান।
বিগত দিনে আন্দোলন-সংগ্রামে শতভাগ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে ছাত্রদল। খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর কোন সভা-সমাবেশের ডাকও দেয়নি সংগঠনটির নেতারা। মাঝে মধ্যে লোক দেখানোর জন্য দু’একটি ঝটিকা মিছিল বের করার চেষ্টা করেন তারা। যেসব মিছিল গুটানো ব্যানার খুলে মেলে ধরার আগেই শেষ হয়ে গেছে। এমনকি গত ২৯ মে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের সাথে বৈঠকের ডাক দিলে ৭৩৬ সদস্যের মধ্যে দুই শতাধিকও সেই সভায় যোগ দেয়নি। এছাড়া কমিটি গঠন নিয়ে বাণিজ্যের তথ্য-প্রমাণ সবই হাতে পেয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এসব কারণে গত ৩ জুন ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। তারেক রহমানের নির্দেশে কমিটি বিলুপ্ত ও কাউন্সিলের নির্দেশনা দিয়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠান রুহুল কবির রিজভী। বিগত দিনগুলোতে ব্যর্থতার কারণে সিনিয়রদের বাদ দিয়ে যারা ২০০০ সালে এসএসসি পাস করেছে তাদের দিয়ে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির সিনিয়র (২০০০ সালের আগে এসএসসি পাস যাদের) নেতারা।
ইন্ধনদাতাদের খুঁজছে হাইকমান্ড: নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা দেওয়ার পেছনে ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির বিক্ষুদ্ধ নেতাদের ইন্ধন দেওয়া বিএনপি নেতাদের খুঁজছে দলের হাইকমান্ড। একই সঙ্গে দলের সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে কার্যালয় থেকে বের করা, তাকে তুলে নিতে অ্যাম্বুলেন্স ডাকা ও তার বিল পরিশোধ করা নেতাকেও খোঁজা হচ্ছে। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। তবে প্রাথমিকভাবে ইন্ধনদাতা হিসেবে বেশ কয়েকজন নেতার নাম ঢাকা থেকে লন্ডনে তারেক রহমানকে জানানো হয়েছে। ইন্ধন দাতাদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য, উপদেষ্টা, সার্চ কমিটির নেতা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীক ছাত্রদলের সাবেক একজন নেতার নাম রয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের অনুসারী ছাত্রদল নেতারা নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা দিয়েছেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।