Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নওগাঁর সাপাহার আমের মোকাম ল্যাংড়া ও হিম সাগরের দখলে

নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০১৯, ৫:২১ পিএম

নওগাঁর সাপাহার উপজেলা সদরে রাস্তার দু’পার্শ্বে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে স্থাপিত কয়েক শ’ আমের আড়ত এখন বরেন্দ্র ভুমিতে উৎপাদিত সুমিষ্ট রসালো ফল হিমসাগর ও ল্যাংড়া আমের দখলে।
মধু মৌসুমের শুরু থেকেই দেশের এ সর্ব বৃহত আমের মোকামে গুটি, গোপালভোগ, খিরশাপাতি, (হিমসাগর) ও ল্যাংড়া আম ব্যাপক হারে আমদানী হতে দেখা গেছে। স্থানীয় ভাবে সাপাহার উপজেলা সহ আশে পাশের সকল উপজেলায় আম বাগান তৈরী হওয়ার কারনে এখানে আমের বৃহত মোকাম গড়ে উঠেছে। দেশের রাজধানী ঢাকা সহ চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার শত শত আম ব্যাবসায়ী এখানে এসে আমের আড়ৎ খুলে প্রতিদিন হাজার হাজার মন আম কেনা বেচা করছে। বিশেষ করে সরকারী ভাবে আমের বাজার নিয়ন্ত্রনে চলতি বছরে গাছ থেকে আম পাড়ার তারিখ নির্ধারণ করে দেয়ার কারনে আড়ৎ গুলোতে প্রতিদিন প্রচুর পরিমানে অনুমোদিত ও পরিপক্ক আম আমদানী করা হচ্ছে। বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যাবহার রোধে প্রশাসনের কঠোর ভুমিকা থাকায় স্বাস্থ্য সম্মত ফরমালিন মুক্ত আম এই এলাকায় উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। সাপাহারে উৎপাদিত হিমসাগর ও লেংড়া আমের কারেন দেশের সর্ব স্থরের মানুষের নিকট এ উপজেলা ইতিমধ্যে বিশেষ ভাবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। বর্তমানে উত্তর বঙ্গের সর্ব বৃহত এ আমের মোকামে প্রতিদিন যে পরিমান আম আমদানী ও কেনা বেচা হচ্ছে তাতে রুপালী আম বাজারে আসলে মোকামের চিত্র অনেকটাই পাল্টে যাবে বলেও আম ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি শ্রী কার্তিক শাহা জানিয়েছেন। উপজেলার কৃষকগন এবারে ধানের মূল্য বিভ্রাটে কিছুটা হিমশিম খেলেও আমের বাজার ভাল থাকায় ধানের সে ক্ষতি কিছুটা হলেও আমের উপর উঠে আসবে বলেও আম বাগান মালিকগণ মনে করছেন। এ বিষয়ে উপজেলার সদরের বাগান মালিক শাহজাহান আলী,জামিল হোসেন, শিতল ডাঙ্গা গ্রামের কামরুল ইসলাম,কাশিতারার এনামুল হক,হাসান আলী সহ বেশ কয়েকজন বাগান মালিকের সাথে কথা হলে তারা জানান যে, ধান চাষ করে ন্যায্য দাম না পাওয়ার কারনে অনেকেই অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতি গ্রস্থ্য হয়েছে তাদের আমবাগান থাকায় ধানের সে ক্ষতি আম থেকে উঠে আসছে। বর্তমানে আবহাওয়া আমচাষীদের অনুকুলে থাকায় আমের বাজার দর মোটামুটি ভালো আছে। এখন প্রতিমন লেংড়া আম বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা, খিরশা, গোপালভোগ ও হিমসাগর আম বিক্রি হচ্ছে ১৬শ থেকে ২ হাজার টাকা মণ। তবে আম্রপালী আম ব্যাপক উৎপাদন হওয়ায় এবার শেষ দিন পর্যন্ত দাম সহনিয় পর্যায় থাকবে বলেও আড়ৎদার ও বাগান মালিক গন জানান। সাপাহার উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ি উপজেলায় প্রায় ৫হাজার হেক্টোর জমিতে বিভিন্ন প্রকার উন্নত জাতের আম চাষ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের হিসেব মতে প্রতি হেক্টর জমিতে ১৭মে:টন আম উৎপাদন হয়। সাপাহার উপজেলায় এবারে ৮০ থেকে ৯০ হাজার মে:টন আম উৎপাদন হবে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৩০কোটি টাকা। প্রতি বছর আমের মৌসুমে আম ব্যবসা ও বাজারজাত করনে এলাকার হাজার হাজার শ্রমজীবি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। বৃহতর এই আমের মোকাম ও উৎপাদিত আমের কারনে উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ অর্থনৈতিক ভাবে উপকৃত হচ্ছে। অপর দিকে সর্ব বৃহত এ আমের মোকামের আড়ৎদার,আম ব্যবসায়ি,আম চাষি ও বাগান মালিকদের সকল প্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করনে প্রতিদিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে সদরে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এ উপজেলার সর্বত্র আম কেন্দ্রীক উৎসব ও আমেজ বিরাজ করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ