Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কেরানীগঞ্জ থানার ওসিসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

অপহরণ ও ধর্ষণের আসামীদের সহযোগিতা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যোবায়েরসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের আসামীদের সহযোগিতার অভিযোগে মামলা করেছেন এক নারী মানবাধিকার কর্মী। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৬ এর বিচারক শহিদুল ইসলামের আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়।

আদালত ওই নারীর জবানবন্দী গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী সাইফুল ইসলাম ও বাদীর আইনজীবী মোহাম্মদ জাকির হোসেন হাওলাদার সূত্রে এসব বিষয় জানা গেছে।

কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মোহাম্মদ যোবায়ের ছাড়া মামলার অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন- থানার পরিদর্শক (অপারেশন) গোলাম সরোয়ার, এসআই রেজাউল আমিন বাশার, মোহাম্মদ ফারুক, হায়দার, মোহাম্মদ ইকবাল, মোহাম্মদ হানিফ মেম্বার, মোহাম্মদ রফিক ও মোহাম্মদ বাবুল মধু।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২০ এপ্রিল সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে কেরানীগঞ্জের আরশি নগর আমিন মাদবরের সিমেন্টের দোকানে সামনের পৌঁছালে ২০/ ৩০ জনকে কিছু মানুষকে ধাওয়া করতে দেখেন। পাঁচ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে আমিন মাদবরের লোকদের মারধর ও ধাওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন তিনি। পরে বিষয়টি পুলিশের হেল্প লাইন ‘৯৯৯’ নম্বরে কল করে জানালে আসামিরা টের পেয়ে যায় এবং বাদীকে দেখে ফেলে। তারা বাদীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে চড় থাপ্পর, কিল-ঘুষি, লাথি ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতসহ শ্লীলতাহানি করে। এছাড়া আসামী ইকবাল তার স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তিনি ১ মাস ৫ দিনের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। মারধরের পর ঘটনাস্থল থেকে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ বাদীকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসা শেষে তিনি কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করতে গেলে ওসি জোবারের ও পরিদর্শক গোলাম সারোয়ার বাদীকে আপস করতে বলেন এবং তাকে ধমক দেয়।

এদিকে, গত ২৪ এপ্রিল মতিঝিল থেকে ফেরার পথে রাত ১১টায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এলাকার ঘাটখরচর প্রাইমারি স্কুলের সামনে পৌঁছালে আসামি হায়দার, রফিক, শফিফকসহ আরও অজ্ঞাতনামা দু’জন বাদীকে রিকশা থেকে নামিয়ে স্কুলের পেছনে নিয়ে ধর্ষণ করে এবং কাউকে জানালে খুন ও গুমের হুমকি দেয়। অভিযোগে আরও বলা হয়, ওইদিন রাতে বাদী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হলে সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই দু’দিন পর ২৭ এপ্রিল আসামিদের তদবিরে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে দেয়। ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় গেলে আবার প্রচন্ড ব্যাথা হলে ৩ মে আবারও মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসা নেন বাদী। এসময় চিকিৎসক আঘাতের কারণে তার পেটের সন্তান নষ্ট হয়ে গেছে বলে তাকে জানায়। এসব বিষয়ে বাদী মামলা করতে গেলে পুলিশ ধর্ষণের মামলা নিলেও আসামিদের গ্রেফতার না করে উল্টো তাকে বিষয়টি আপোষ-মিমাংসা করতে বলে।
মামলার নথিতে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ৩১ মে ঈদের কেনাকাটা করতে গেলে রাত ৯টার দিকে বছিলা ব্রিজের পূর্বপাশে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের সামনে বাদীকে রিকশা থেকে নামিয়ে মাইক্রোবাসে তোলার চেষ্টা করে আসামীরা। এসময় রিকশাচালক চিৎকার শুরু করলে আসামিরা পালিয়ে যায়। তবে আসামীরা তাকে হত্যা ও গুম করার হুমকি দেয় বলে নথিতে উল্লেখ করা হয়। এদিকে, থানা আসামীদের গ্রেফতার না করায় গতকাল তিনি আদালতে মামলা করেন বলে তার আইনজীবী জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ