Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বপ্ন সারথী ফুয়াদ

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : | প্রকাশের সময় : ৯ জুন, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ছোটকাল থেকেই স্বপ্ন নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। সেই থেকে পথচলা। স্কুলজীবন থেকেই অত্যন্ত মেধাবী। পেশা হিসেবে সফল ব্যবসায়ীর তকমা অর্জন করেও বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত নন। তিনি হলেন নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার গোখলা গ্রামের যুবক মো. মাহফুজুল হক (ফুয়াদ)। প্রকৃতির টানে সখের বসে ২৫ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন সমন্বিত কৃষি খামার মেসার্স মিআ এগ্রো ফার্মস।
বিলের পাশে মনোরম পরিবেশে কৃষি খামার করে বিপ্লব সৃষ্টি করেছেন তিনি। শুরুটা হয়েছিলো ২০১৩ সালে। নতুন কিছু উদ্ভাবনের চিন্তা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন তাকে এ খামার গড়তে উৎসাহ জুগিয়েছে। কৃষির পাশাপাশি মৎস্য চাষ করে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে অংশীদার হতে চান। তবে তার চিন্তা ও মননে শুধু নিজ এলাকা। সমন্বিত খামার গড়ে তোলার পর থেকেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের। আয়কর ও কোম্পানি আইন পেশায় নিয়োজিত থেকেও কৃষি খামার করে সফল হয়েছেন। শুধু সফলই নয়, তিনি এলাকায় বেকার যুবকদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। কিন্তু তার সফলতার পথটা এতটা মসৃন ছিলনা। নানা প্রতিবন্ধকতা পেড়িয়ে দাঁড়াতে হয়েছে তাকে। তবুও হাল ছাড়েননি, রয়েছেন অবিচল।
সরেজমিন দেখা যায়, সবুজ বৃক্ষরাজি আর বিভিন্ন প্রজাতির ফসলের সমারোহ ঘটেছে খামার এলাকায়। খামারের ভেতরে উন্নত জাতের গরু ও ভেড়া। এগুলো দেখাশোনার জন্য বেশ কয়েকজন লোক নিয়োজিত রয়েছেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করেন তারা। আর পুরো বিষয়টি তদারকি করেন ফুয়াদ নিজেই। সাড়ে ৬ একর জমিতে পুকুর করে মৎস্য চাষ করছেন। সেখানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ হয়। পুকুর পারে ও সমতল ভূমিতে গড়ে তুলেছেন বিশাল কলাবাগান। কলাগাছে ঝুলছে সবুজ রঙের কলা। নিয়মিত বিক্রি করছেন বাজারে। অপরদিকে তিনি তার পুকুরের চারপাশে পেঁপে, শিম, ডাটা, বেগুন, ঢেঁড়শ, লাউ, পুঁইশাকসহ শাকসবজি চাষ করেছেন। এ সবজি বাগান থেকে ফার্মে কর্মরত শ্রমিক এবং নিজের বাসার সারা বছরের সবজি চাহিদা প‚রণ হয়ে থাকে। পুকুর পারের পূর্ব পাশে তাকালেই যে কারো চোখ আটকে যাবে। সেখনে দেখা যায় সুদৃশ্য বিদেশি ফল ড্রাগন বাগান। বাগানের গাছে গাছে ড্রাগন ফল। ২০০ গাছে ফল ধরেছে।
১৪২ টি ভিয়েতনাম নারকেল, ১০০টি মাল্টা, ১৫০টি আম ও ১৫৭টি আতা গাছ বেড়ে উঠছে আপন মনে। ১১৫ টি লটকন গাছের লটকনে পাক ধরেছে। কিছু দিনের মধ্যেই বিক্রির আশা করছেন। রয়েছে ৭৫ টি গরু ধারনক্ষমতা সম্পন্ন দুটি শেড। সেখানে এখন গরু রয়েছে ১৭টি। খামারের চারদিকে চাষ হচ্ছে বোরো ধান। সমন্বিত খামার থেকে যে পরিমাণ মাছ, দুধ, গোশত এবং বিষমুক্ত ফল উৎপাদন হচ্ছে তা এলাকাসহ আশপাশের কয়েকটি জেলার পুষ্টি চাহিদা পূরণে ব্যাপক ভ‚মিকা রাখছে।
এ বিষয়ে খামার মালিক মাহফুজুল হক (ফুয়াদ) বলেন, মূলত: এলাকার টানে প্রকৃতিকে ভালবেসে এ খামার প্রতিষ্ঠা করি। খামারের নামকরণ করা হয় মেসার্স মিআ এগ্রো ফার্মস। সমন্বিত এ খামারের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে এখানে নিয়মিত এবং অনিয়মিত ২০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। পুরো প্রকল্প সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এন আর বি গেøাবাল ব্যাংক অর্থায়নে সহযোগিতা করছে প্রকল্পে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা পেলে আগামীতে এ খামারটি পর্যটন এলাকায় পরিণত করতে পারব। এতে অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ