রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
সুন্দরবন উপক‚লের হাজার হাজার জেলে পরিবারের মাঝে এবারের ঈদে তেমন কোনো উৎসবের আমেজ ছিলো না। অন্যদিনগুলোর মতই তারা এইদিনটি কাটিয়েছেন। সাগর এলাকায় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় এসব জেলে পরিবারে ঈদের আনন্দ ম্লান হয়ে যায়।
জেলেরা বলছেন, সাগরে মাছ ধরতে যেতে পারিনি, হাতে কোন টাকা পয়সা নেই। ধার-দেনা করে কোনরকমে চলতে হচ্ছে। এ অবস্থায় ঈদ উদযাপনতো দূরের কথা, পরিবার পরিজন নিয়ে কি খাব সে চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি।
২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিয়েধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। বঙ্গোপসাগরে টানা ৬৫ দিনের মাছ ধরার উপর এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকরী হওয়ার পর থেকেই সুন্দরবন উপক‚লের হাজার হাজার জেলে এখন বেকার সময় পার করছে।
সাগরে মাছ ধরার উপর জীবিকা নির্ভরশীল সুন্দরবন সংলগ্ন মংলা, রামপাল, শরণখোলা, দাকোপসহ আশপাশ এলাকার জেলেদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ অঞ্চলের গরিব মানুষের একটি বড় অংশই সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। মাছ ধরার ওপরে নির্ভর করে তাদের জীবন জীবিকা। মাছ বিক্রীর টাকা দিয়ে তাদের সংসার চালাতে হয়। কিন্তু এবার সাগরে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করার ফলে মৌসুমের শুরুতেই তারা মাছ আহরণ করতে যেতে পারছেন না। এ অবস্থায় রোজার মধ্যে তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। অনেক পরিবারে টাকার অভাবে ঠিকমতো ইফতার ও সেহরি পর্যন্ত খেতে কষ্ট হয়েছে।
মংলার সুন্দরবন সংলগ্ন জয়মনী ঘোলের বেশ কয়েকজন জেলে বলেন, মা ইলিশের ডিম ছাড়ার মৌসুমে ২১ দিন সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধের নির্দেশ মেনে নিয়েছি। ঝাটকা ইলিশ সংরক্ষণের জন্য ছয় মাস ধরে ছোট ফাঁসের জাল দিয়ে মাছ ধরা বন্ধ করা হয়েছে, তাও মেনে নিয়েছি। এরপর ইলিশের ভরা মৌসুমে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকলে আমাদের অস্তিত্ব রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এম সাইফুল ইসলাম খোকন জানান, সরকারের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞায় সুন্দরবন অঞ্চলের হাজার হাজার জেলে বেকার হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে দারুণ আর্থিক কষ্টে পড়েছেন। জেলেদের পরিবারে এবার ঈদের আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে। এ ছাড়া ঋণের বোঝায় বিপুল সংখ্যক ফিসিংবোট মালিক দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম।
এ মৎস্য ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন, বাংলাদেশের জলসীমায় ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দিলেও পাশের দেশ ভারতের জেলেদের কিন্তু সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকবে না। এ সময় ভারতীয় জেলেরা এ দেশের জলসীমা লাগোয়া বিপুল পরিমান মাছ আহরণ করছে। এতে করে প্রকারান্তরে বাংলাদেশের জেলেরাই আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
এ ব্যাপারে মংলা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. নাহিদুজ্জামান বলেন, সরকার মাছের প্রজনন বৃদ্ধির জন্যই এ পদক্ষেপ নিয়েছে। নিষেধাজ্ঞার ৬৫ দিনে জেলেদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ সময় বেকার জেলেদের পরিবার প্রতি চাল বরাদ্দ দিয়ে সরকার সহায়তা করছেন।
মংলা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. তৌহিদুর রহমান জানান, মৎস্য প্রজনন বৃদ্ধির জন্য সাগরে সরকার মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিলেও জেলেদের খাদ্য সহায়তার চাল বিতরণ শুরু করার কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে। মংলা উপজেলায় সরকারিভাবে নিবন্ধিত ছয় হাজার ৬৬৫ জন জেলেকে ৪০ কেজি করে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।