পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামীকাল ঈদুল ফিতর। গতকাল ছিল শেষ কর্মদিবস। আজ থেকে সরকারনির্ধারিত তিনদিনের ছুটির শুরু। নাড়ির টানে গ্রামের পানে ছুটছে রাজধানীবাসী। যে শহরে যানজট নিত্যসঙ্গী, সেখানে বদলে গেছে দৃশ্যপট। এখন চেনা রাজধানী পুরোই অচেনা! বাসের অসহ্যকর শব্দ নেই, যানজটের ভোগান্তি নেই, পড়িমরি করে যানবাহনে ওঠার চাপ নেই। চাপ যতোটুকু এখন বাস, রেল, নৌ ও বিমানবন্দরে। আর ফুসরত মেটাতে ঈদ কেনাকাটার জন্য মার্কেটেগুলো দিকেই যত ভিড় নাগরিকদের। ঈদ আসলেই কোটির বেশি মানুষ ঢাকা ছেড়ে পাড়ি জমান গ্রামের বাড়িতে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটছে না।
গতকাল সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, রাজধানীর শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, কলাবাগান, ধানমন্ডি, মালিবাগ, রামপুরা, মিরপুর, গুলশান, বাড্ডা, তেজগাঁও, যাত্রাবাড়ী, ফার্মগেটে মানুষের তেমন একটা ভিড় নেই। প্রাইভেটকার, সিএনজি, রিকশার সংখ্যাও ছিল অনেক কম। এসব এলাকা ঘুরে চোখে পড়েনি কোনো যানজট ও কোলাহল। রাজধানীর বিভিন্ন রুটের অধিকাংশ বাস ফাঁকা। তবে বিভিন্ন টার্মিনালগামী বাসে রাজধানী থেকে অদূর জেলার মানুষদের সংখ্যাই বেশি।
গতকাল ভোর থেকে রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী, মিরপুর, ধানমন্ডি, মগবাজারসহ বিভিন্ন টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সেহেরির পরপরই বাড়ির পানে রাস্তায় বের হয়েছেন লোকজন। তবে এদের বেশিরভাগই ছাত্র আর পরিবারের সদস্যরা। পরিবার প্রধানরা কিংবা কর্মজীবীরা সোমবার অফিস শেষ করে বিকেল কিংবা মঙ্গলবার রাজধানী ছাড়বেন। যে কারণে রাজধানী এখন ফাঁকা। রাস্তায় তেমন একটা গাড়ির চাপ নেই বললেই চলে। তবে বেড়েছে ঢাকার বাইরের গাড়ি।
ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা শেখ সায়েম আব্দুল্লাহ সেহেরি খেয়েই বাড়ির উদ্দেশে বেরিয়েছেন। যাচ্ছেন মহাখালী বাস টার্মিনালে। কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন গাড়ির জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষার্থী বলেন, ক্লাস-পরীক্ষা কিছু নেই। তাই কয়েকদিন আগেই ফিরছি। আর এই ভোরে মহাসড়কে জ্যাম থাকে না। তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে যেতে পারবো।
গণমাধ্যমকর্মী প্রশান্ত মিত্র বলেন, ঈদে ঢাকাতেই আছি। অনেক সহকর্মী ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন। যারাও বা ঢাকায় আছেন তাদের অনেকে ছুটছেন টার্মিনালগুলোতে। দুপুরের পর পুরো ফাঁকা হয়ে যাবে এ নগরী। আবার মঙ্গলবার সকালেও অনেকে ঢাকা ছাড়বে। এখনই বদলে গেছে রাজধানীর চিত্র। যানজট নেই। শ্যামলী থেকে শাহবাগ যেতে আগে যেখানে সময় লাগতো এক ঘণ্টার বেশি, সেখানে গতকাল ১৫ মিনিটেই পৌঁছাতে পেরেছি। দেখা গেছে, সিটিং বাসে রাজধানীর পল্টন থেকে উত্তরবাড্ডায় যেতে সময় লাগতো কমপক্ষে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা, এখন লাগছে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট। তবে ব্যাংকপাড়া খোলা থাকায় মতিঝিলে মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। তবুও রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কম, নেই যানজট, নেই হকারদেও কোলাহল।
কল্যাণপুরের বাসিন্দা মেহেদি হাসান বলেন, শনিবার রাতেই ঢাকার সড়কগুলো ফাঁকা হয়ে গেছে। গতকাল সোমবার আরও ফাঁকা হয়েছে। কল্যাণপুর থেকে সদরঘাট যেতে মাত্র ৪০ মিনিট সময় লাগছে, যা অন্য সময় লাগতো ৪-৫ গুণ বেশি।
এদিকে ঈদযাত্রায় মানুষের গন্তব্য এখন ঘাট, টার্মিনাল কিংবা স্টেশনের দিকে। আর এতেই দুর্ভোগে পড়েছেন রাজধানীর সাধারণ মানুষ। রাজধানীতে লোকাল ট্রান্সপোর্ট হিসেবে সবচেয়ে বেশি যাত্রীসেবা দেয় বাস সার্ভিসগুলো। কিন্তু ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে অনেক পরিবহনই দূরপাল্লার ট্রিপ ধরেছে। ফলে রাজধানীতে কমে গেছে বাসের সংখ্যা। যেগুলো আছে সেগুলোর বেশিরভাগই চলছে গেট বন্ধ হয়ে। রুটের বাসগুলো সরাসরি যাত্রী ছাড়া মাঝপথের কোনো যাত্রী নিচ্ছে না। এই অবস্থায় যারা রাজধানীতেই অবস্থান করছেন কিংবা ঈদযাত্রীদের অনেকের ভরসা সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবা। আবার যান হিসেবে রিকশাও বেছে নিচ্ছেন অনেকে। এতে বিপত্তিও ঘটছে। কারণ গাড়ি না পাওয়ার দুর্ভোগ তারওপর অটোরিকশা কিংবা রিকশায় তিনগুণ ভাড়া। রাজধানীর মিরপুর, মগবাজার, কল্যাণপুর, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে।
অনেকটাই ফাঁকা রাজধানী। তাই স্টপেজের বা মোড়ের যানজট ঠেলে বেরিয়ে বেপরোয়া গাড়ি চালাচ্ছে একেকজন। মোটরসাইকেল, অটোরিকশা কিংবা বাস সবারই কী যেন এক তাড়া। এতে সাধারণ মানুষের মনে উদ্বেগের সৃষ্টিও করছে। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।