Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিপাকে বছিলার কয়েকশ’ মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ জুন, ২০১৯, ১২:৪৩ এএম

আইনি প্রক্রিয়ায় নদী জায়গা উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযানের প্রতি সকলেরই সমর্থন রয়েছে। কিন্তু উচ্ছেদ অভিযানে যদি কাউকে ছাড় দেয়া হয় বা বিনা কারণে কোন স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয় তবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে মেঘনা নদীর উচ্ছেদ অভিযান থেকে রহস্যজনকভাবে বাদ পড়েছে মেঘনা গ্রুপ। বিআইডবিøউটিএ-এর অভিযানে মেঘনা নদী দখলে রাখা বেশ কয়েকটি কোম্পানীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও মেঘনা গ্রুপের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়ায় জনেমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। একইভাবে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করে বিআইডবিøউটিএ’র কর্মকর্তাদের উচ্ছেদ অভিযানের কারণে বিপাকে পড়েছেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকার (কাটাসুর মৌজা) কয়েক’শ মানুষ। তাদের অভিযোগ, উচ্ছেদ কার্যক্রমে অংশ নেয়া বিআইডবিøউটিএ’র কর্মকর্তারা অবৈধদের পাশাপাশি উদ্দেশ্যমূলকভাবে কিছু বৈধ জমির মালিকদেরও ভিটেমাটি ছাড়া করছে। এমন শোক সইতে না পেরে কয়েকজন মারাও গেছে।

ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, সিএস ম্যাপ, আরএস ম্যাপ, বন্দোবস্ত আইন এবং হাইকোর্টের রীট পিটিশন নং ৩৫০৩/২০০৯ আইনের অপব্যবহার করে উদ্দেশ্যমূলকভাবেই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে বছিলার কাটাসুর মৌজার ১৩৭/৮৯০ নং দাগের ২৯৬৩ ও ২৯৬৭ নং দলিলে বন্দোবস্ত হওয়া জমিতে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের (স্পেশাল অরিজিনাল জুরিসডিকশন) রীট পিটিশন নং ৩৫০৩/২০০৯ আদেশে দুইভাবে জরিপ কাজ সম্পন্ন করতে বলা হয়। প্রথমত: সিএস ম্যাপ অনুসারে জরিপ। দ্বিতীয়ত: আরএস ম্যাপ অনুসারে জরিপ। একই রায়ে আইনানুগভাবে প্রদত্ত বিলিবন্দোবস্ত সাপেক্ষে অবশিষ্ট সকল ভূমি সুচিহ্নিতকরণপূর্বক গত ৩০-১০-২০১০ তারিখের মধ্যে সরকারি পিলার স্থাপন করতে বলা হয়। কিন্তু পিলার স্থাপন করা হয় ২০১২ সালে। পরে সেখানে ২০১৪ সালে তরিঘড়ি করে পার্শবর্তী বছিলা গার্ডেন সিটির এমডি শামীম আহমেদ’র কারসাজিতে বিআইডবিøউটিএ’র কিছু অসাধু কর্মকর্তা সরকারিভাবে আবারো নির্ধারিত সীমানা ছাড়াই বৈধ জমির ৫০০ ফিট ভেতর ৫টি পিলার অবৈধভাবে স্থাপন করে। এরপর বিষয়টি নিয়ে জমি মালিকরা হাইকোর্টে মামলা করলে রায় অনুযায়ী পিলারগুলো সরিয়ে পুনরায় নির্ধারিত স্থানে স্থাপন করা হয়। এ বিষয়ের একটি মামলা এখনও হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। তবে হাইকোর্টের সেই রায় এবং চলমান মামলা উপেক্ষা করেই বৈধ জমিতে চলছে উচ্ছেদ অভিযান।

আমিন মোমিন হাউজিং এর মালিক মমিন মিয়া বলেন, আমার পূর্বপুরুষরা (অর্থাৎ আমার বাবা-দাদা এবং দাদার বাবা) এই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন। আমরা এখনও এই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। তিনি বলেন, এই জমি আমার জন্মের আগ থেকে অর্থাৎ ৭৪ বছর ধরে আমরা চাষ করে আসছি।

আমির হামজা নামে একজন অভিযোগ করে বলেন, উচ্ছেদের নামে আমাদের বৈধ জমি কেটে সেই বালু অবৈধভাবে বিক্রি করে দিচ্ছে বিআইডবিøউটিএ’র কর্মকর্তারা। শুধু তাই নয়, আমাদের বৈধ জমির বালু তুলে নিয়ে পাশের একটি খাল অবৈধভাবে ভরাট করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে বছিলায় অভিযান পরিচালনাকারী বিআইডবিøউটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওনারা (জমি মালিকরা) যে যুক্তি দেখাচ্ছেন তা সঠিক নয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ