রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে মাগুরা, ময়মনসিংহের ফুলপুর ও পিরোজপুরে ইন্দুরকানীতে ক্রেতারা চুড়ি, গহনা আর কসমেটিকসের দোকানের দিকে ছুটছেন। ইতোমধ্যে ঈদ পোশাক, জুতা কেনা শেষ করছেন। এ বিষয়ে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন-
মাগুরা থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, এখন ক্রেতারা ভিড় করছেন প্রসাধনীর দোকানে। প্রতিদিন এসব দোকোনে ক্রেতাদের ভিড় লেগেই আছে। ভিড় এড়াতে অনেকেই আগাম কেনাকাটা সম্পন্ন করেছেন। এ দিকে অন্যান্য দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে দোকানিরা হিমসিম খাচ্ছেন। দর্জির দোকানে কয়েকদিন আগে থেকেই অর্ডার নেয়া বন্ধ। প্রতিবারেরমতো এবারও শহরে মহিলাদের ভিড় দেখা যাচ্ছে বেশী। দেশী কাপড়ের তুলনায় ভারতীয় পোশাকের চাহিদা বেশি। দাম একটু বেশি হলেও চাহিদা মতো নানা ডিজাইনের কাপড় কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা। অপরদিকে অভাবী মানুষ পড়েছেন মহাবিপাকে। পরিবারের ছেলে মেয়েদের চাহিদা পূরণ করতে তারা হিমসিম খাচ্ছেন।
মাগুরা শহরের অভিজাত শাড়ি কাপড়ের দোকানিরা জানান, এ বছর বিক্রি ভালই হচ্ছে। ভারতীয় এবং দেশী শাড়ির ব্যাপক সমাহার ঘটানোর ফলে ক্রেতাদের মাঝে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এবার বিক্রি অনেকটা বেশি বলেও তারা মনে করছেন।
ব্যবসায়ী আরোব আলী জানান, এবার মনে হচ্ছে শেষ মুহূর্তে বেচাকেনা ভালই হবে। তিনি জানান, দেশী পোশাকের চেয়ে ভারতীয় পোশাকের চাহিদা বেশি। মাগুরা কলেজ পাড়ার গৃহবধূ লাবনী জানান, এখন ড্রেসের সাথে মিলিয়ে চুড়িমালাসহ কসমেটিক কিনতে তারা ব্যস্ত। মাগুরার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল থেকে আসা মহিলারা ভিড় করেছে দোকানগুলোতে। পছন্দের কেনাকাটা করতে ঘুরছে এক দোকান থেকে আরেক দোকানে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত শহরের বেবী প্লাজা, নূরজাহান সপিংমল, টুনাটুনি মার্কেট, খান মার্কেট, সুপার মার্কেটসহ প্রতিটি মার্কেটে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। সে সাথে নিম্নআয়ের মানুষেরা তাদের সামর্থের মধ্যে কেনাকাটা করতে শহরের ফুটপাথগুলোতে ঈদ উপলক্ষে গড়ে ওঠা দোকানগুলো থেকে কিনছে তাদের পছন্দের সামগ্রী।
ঈদ উপলক্ষে শহরের রাস্তার ওপরে ছোট ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন চুড়ি ও কম দামী কসমেটিক নিয়ে দোকান সাজিয়ে বসে যান। এতে জনজটের সৃষ্টি হচ্ছে। গত কয়েক দিন মানুষের ভিড়ে শহরে চলাচল কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এজট ট্রাফিক পুলিশ সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছে।
ফুলপুর (ময়মনসিংহ) থেকে মো. খলিলুর রহমান জানান, ময়মনসিংহের ফুলপুরে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। উপজেলা সদর থেকে শুরু করে খুপরি বস্তি পর্যন্ত সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে উৎসবের আমেজ। দামি গাড়ি হাকানো ধনাঢ্য ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ‘নুন আনতে পান্তা ফুরোনো’ দরিদ্র শ্রমজীবী, সবার মাঝেই ছড়িয়ে পড়ছে আনন্দের রঙ।
ফুলপুরে মার্কেট, বিপনিবিতান, ফ্যাশনহাউস থেকে শুরু করে খোলা আকাশের নিচে পশরা সাজিয়ে বসা ফুটপাথের অস্থায়ী দোকান সর্বত্র বাড়ছে ভিড়। ফুলপুরে মার্কেটগুলো যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে মার্কেটে মার্কেটে ক্রেতা সমাগমও ততোই বাড়ছে। সব বয়সী মানুষের মাঝে এখন ঈদ বাজার নিয়ে চলছে আলোচনা। ঈদে সবাই চায় নতুন জামা-কাপড়, জুতা ও প্রসাধনী। মুসলিম জাহানের বড় উৎসব ঈদ উল ফিতর। এই ঈদে চাই নতুন পোশাক। নতুন পোশাক ছাড়া যেন ঈদকে কল্পনাই করা যায়না। সামর্থ অনুযায়ী সবাই চায় পরিবারের সদস্যদের চাহিদা মেটাতে। কিন্তু সাধ আর সাধ্যের মধ্যে যদি থাকে তফাত তখনই ঘটে যত বিপত্তি। তাই সাধ থাকলেও সাধ্যে কোলায়না অনেকেরই পছন্দের জামা-কাপড় কেনার। আবার যাদের সাধ্যে আছে তারা কেনা কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছে। আবার কেউবা ফেল ফেল করে তাকিয়ে দেখছে। তারপরও ঈদকে সামনে রেখে বিপনী বিতান ও মার্কেটগুলোতে রয়েছে দেশী বিদেশী হরেক রকম পোশাক।
ফুলপুর উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত যমুনা সুপার মার্কেট, মেঘনা সুপার মার্কেট, পদ্মা সুপার মার্কেট, সরকার গার্মেন্টস, আশিক বস্ত্রালয়, রাজ্জাক নর্থ ও সাউথ প্লাজা, লতিফ প্লাজা, মসজিদ মার্কেট, আঞ্জুমান সুপার মার্কেট ও আমুয়াকান্দা কয়েকটি মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, আগের তুলনায় গত কদিনে বিক্রি বেশ বেড়ে গেছে। দেদারছে চলছে বেচাকেনা। সেই সাথে ব্রিজ সংলগ্ন ফুটপাতের পাশে ক্ষুদ্র মার্কেটে দেখা গেছে মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষের প্রচন্ড ভিড়। এখন চলছে গ্রীষ্মকাল। ঈদ পোশাক কেনাকাটায় এ বিষয়টিও মাথায় রাখছেন অধিকাংশ ক্রেতা। বরাবরের মতো এবারও তারুণ্যের ঈদ-পছন্দে রাজত্ব করছে ভারতীয় পোশাক। এবারের ঈদের কেনা কাটায় পুরুষের চেয়ে মহিলাদের বেশি দেখা যাচ্ছে। ফুলপুর থানা রোডে জুতার দোকানগুলোতেও প্রচন্ড ভিড়। মার্কেটগুলোতে দেখা যাচ্ছে রীতিমত তাক লাগানো রকমারি পোশাক ও প্রসাধনী। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। ব্যবসায়ীরা ক্রেতা চাহিদা পুরনে বাহারি ও বৈচিত্র্যময় পোশাকে দোকান সাজিয়েছেন। শিশুসহ সব বয়সী মানুষের পোশাকই পাওয়া যায়। থ্রি পিস পাওয়া যাচ্ছে মানভেদে ৩শ’ থেকে ৫ হাজার টাকায়। ২০০ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে শিশুদের চমৎকার সব পোশাক।
ইন্দুরকানী (পিরোজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ইন্দুরকানীতে জমে উঠেছে ঈদের বাজার। ঈদের নতুন পোশাক কেনার ধুম। গতকাল শনিবার উপজেলার ইন্দুরকানী বাজার ঘুরে দেখা যায়, পোশাকের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। ক্রেতারা তাদের মনেরমত পছন্দ করে পোশাক কিনছেন। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে মেয়েদের গাউন, লং থ্রি-পিস ও ফ্রোক। ইন্দুরকানী বাজারের উৎসব গার্মেন্টস্, খান বিপনী বিতান, ইমা গার্মেন্টস, লাকী সুপার গার্মেন্টস এন্ড বস্ত্রালয়, রুবেল বিপনী বিতানে সবচেয়ে বেশি ক্রেতারা ভিড় করছেন। এছাড়া কসমেটিকস ও জুয়েলারি দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে লিমন কসমেটিকস, মানান স্টোর, সাঁজনিন স্টোর, খান কসমেটিকস ও আখি সাজঘরে ক্রেতারা বেশি ভিড় করছেন। জুয়েলারী দোকানের মধ্যে সামিয়া জুয়েলার্স, সুমন জুয়েলার্সে ক্রেতারা তাদের পছন্দের অলংকার নিতে ব্যস্ত।
লাকী সুপার গার্মেন্টস এন্ড বস্ত্রালয়ের মালিক মিরাজুল ইসলাম জানান, গত বছরের চেয়ে এ বছর কেনাবেচা অনেক ভাল। প্রত্যাশার চেয়ে এবছর ঈদের পোশাক বেশি বিক্রি হচ্ছে এবং দামও ভাল পাচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।