বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বান্ধবীর সঙ্গে অবৈধ সর্ম্পকে জড়িয়ে ফেঁসে গেছেন সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। বান্ধবীর সঙ্গে অবৈধ সর্ম্পক জানাজানি হওয়ায় পর ব্যাপক সমালোচনা চলছে প্রশাসনে। বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পর্যন্ত গড়িয়েছে। সর্বশেষ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে অভিযোগ তদন্ত শুরু করেছে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ ইমতিয়াজ তার আগের স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। কিন্তু শ্বশুর পেশাদার উকিল হওয়ায় বিবাহ বিচ্ছেদ বিলম্বিত হচ্ছিল। এদিকে নতুন বান্ধবীর সঙ্গে সংসার করার তর সইছিল না তার। শেষ পর্যন্ত পৃথক বাসা নিয়ে সংসার শুরু করেন বিয়ের আগেই। এ অবস্থায় গর্ভবতী হয়ে পড়েন তার বান্ধবী। এ নিয়ে অভিযোগ ওঠায় তাকে চট্টগ্রাম থেকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় বদলি করা হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ওই নারীর (বান্ধবী) লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গত বছরের এপ্রিল মাসে বান্ধবীর মাধ্যমে আসিফ ইমতিয়াজের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে জানতে পারেন তার ডিভোর্স হয়ে গেছে। সেই সূত্র ধরে কয়েকদিন ফোনে কথা হয়। এরপর এপ্রিল মাসে তার সঙ্গে ঢাকায় সাক্ষাৎ করেন। প্রথম সাক্ষাতেই তাদের বিয়ে নিয়ে কথা হয়। এরপর মে মাসের প্রথম সপ্তাহে আসিফ মিরপুর-৬ নম্বরে একটি বাসা ভাড়া নেন। বাসা নেয়ার খবর দেয়ার পর তিনি ঢাকায় আসেন। ওই বাসায় আসিফের বোন-ভগ্নিপতির সঙ্গে কথা হয়। তাদের সামনেই মে মাসের মধ্যে বিয়ে করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন আসিফ। ওই সময় আসিফ জানান, তার আগের শ্বশুর আইনজীবী হওয়ায় বিবাহ বিচ্ছেদের প্রক্রিয়ায় একটু সময় বেশি লাগছে। যেদিন ডিভোর্স পেপার হাতে পাবেন পরের দিনই তাকে বিয়ে করবেন। এমন আশ্বাসের প্রেক্ষিতে এবং তার বোন ও ভগ্নিপতি সাক্ষী থাকায় আসিফের সঙ্গে থাকতে রাজি হন তিনি। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্নস্থানে একসঙ্গে থাকতেন।
ইউএনও আসিফের বান্ধবী বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারিতে আমি গর্ভবতী হই। এটা তাকে জানানোর পরই সে আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করে। ওই সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দেয়। এক সপ্তাহ পরই সে আমাকে ফেসবুকসহ সব যোগাযোগ মাধ্যমে বøক করে দেয়। তার সঙ্গে আমি কোনো যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। নানাভাবে তাকে ম্যাসেজ দেয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। পরে চট্টগ্রামে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার চেষ্টা করেও পারিনি। পরে ডিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ঘটনা বলার পর তিনি বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন এবং একজন এডিসিকে দায়িত্ব দেন। এডিসি আসিফের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে সে পুরোপুরি অস্বীকার করে। আমি সব ডকুমেন্ট দেয়ার পর এডিসি তাকে চট্টগ্রাম থেকে বদলির সুপারিশ করেন। তার সুপারিশ মতে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে তাকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়। এরপর থেকে তার সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। জানুয়ারি মাসে তার সঙ্গে আমার শেষ সাক্ষাৎ হয়। এরপর সে দেখা করতে চাইলেও আমি করিনি। এখন পর্যন্ত নানাভাবে সে আমাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
অপরদিকে তাহিরপুরে যোগদানের পর থেকে নিয়মিত অফিস না করার অভিযোগ রয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে। তিনি অফিস না করে বাসায় বসে ফাইল ও জরুরি কাগজপত্র দেখেন। মাঠে কম যান। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, নতুন ইউএনওকে অফিস করতে দেখা যায় না। বেশিরভাগ সময় তিনি বাসায় কাজ করেন। উনাকে ফোন দিলেও ফোন বেশিরভাগ সময় ধরেন না। তাছাড়া তার নামে যেসব শুনছি আর বর্তমানে যা দেখছি তাতে তার জন্য আমাদের উপজেলার সুনাম নষ্ট হচ্ছে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ ইনকিলাবকে বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছে। আমি কাজ শুরু করছি। এর বেশি কিছু বলা যাবে না। মন্ত্রিপরিষদ থেকে চিঠি পাওয়ার পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে তদন্ত করতে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ ইমতিয়াজ ইনকিলাবকে বলেন, আমি বিষয়টি জানিনা। আমার বিরুদ্ধে একটি চক্রকাজ করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।