Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শৈলকূপায় আ’লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ লেগেই আছে ১৪০টি কেন্দ্র অধিক ঝুঁকিপূর্ণ

প্রকাশের সময় : ২৯ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা : নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই শৈলকূপার বিভিন্ন ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ ও একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মাঠ দখলের লড়াই তীব্র হচ্ছে। এ অবস্থায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কয়েকটি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ ও একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ সংঘাত লেগেই আগে। আগামী ৪ জুন শৈলকূপার ১৪টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মোট ১৪০চি কেন্দ্রের মধ্যে সবগুলো কেন্দ্র অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে শৈলকূপা উপজেলা নির্বাচন অফিস। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সিঁদুর রহমানও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হওয়ার বহু আগ থেকেই আবাইপুর, কাঁচেরকোল, মির্জাপুর, উমেদপুর ও বগুড়া ইউনিয়নে একাধিক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে হতাহতর ঘটনাও ঘটেছে। এরপর মনোনয়ন চূড়ান্ত ও মনোনয়ন পত্র দাখিলের পর থেকে শৈলকূপার ৭টি ইউনিয়নে ছড়িয়ে পড়ে সংঘাত। পুলিশকে এ সব সংঘাত থামাতে বেগ পেতে হচ্ছে। শৈলকূপা থানা পুলিশের দেওয়া তথ্য মতে গত এক মাসের ব্যবধানে শৈলকূপার মির্জাপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ প্রার্থী ফিরোজ ও একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মকবুল হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ প্রার্থী মফিজুল ও বিদ্রোহী প্রার্থী ফারুকের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত কয়েকদিন ধরে সেখানে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মারামারি লেগেই আছে। শনিবার রাতে নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নে এক সাংবাদিককে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। কদিন আগে নৌকায় ভোট দিতে রাজি না হওয়ায় কৌশুল্লা রানী নামে এক হিন্দু মহিলাকে মারধর করা হয়েছে। উমেদপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রার্থী সাবদার হোসেন মোল্লা প্রতিদ্বন্দি জেপি (জাতীয় পার্টি মঞ্জু) প্রার্থী মিজানুর রহমানের মার্কেটে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেন। এ ছাড়া জেপি প্রার্থীর একাধিক প্রচার মাইক ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। সারুটিয়া ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থী আবুল হোসেনের সমর্থকদের মারধর করা হয়েছে। কাচেরকোল ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রার্থী মামুন জোয়ারদারকে মারধর করেছে একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকজন। এই ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থী ইলিয়াস হোসেনের সমর্থকদের হুমকী ধমকী দেওয়া হচ্ছে। দিগনগর ইউনিয়নে তোজাম্মেল হোসেন পান্না খার সাথে বিদ্রোহী প্রার্থী জিল্লুর রহমানের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছে। দুধসর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ ও একই দলের বিদ্রোহী প্রাথী সফিউল ইসলাম মিল্টন ও সোয়েবুর রহমানের সমর্থকরা মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। নির্বাচনী মাঠ দখল নিতে সেখানেও সংঘর্ষ হয়েছে। শৈলকুপার সবচে ভয়ংকর ইউনিয়ন হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে আবাইপুর ইউনিয়ন। আবাইপুরে আওয়ামীলীগ প্রার্থী মুক্তার মৃধা ও একই দলের বিদ্রোহী প্রাথী হেলাল উদ্দীনের সমর্থকদের মধ্যে ১৫টির বেশি সংঘর্ষ হয়েছে। এতে শাতাধীক ব্যক্তি আহত হওয়ার পাশাপাশি কয়েক কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট হয়েছে। সর্বশেষ হাটফাজিলপুর, মিনগ্রাম ও আবাইপুরে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। আবাইপুরের বিভিন্ন গ্রামে বিরাজ করছে উত্তেজনা। পান থেকে চুন খসলেই বেধে যাচ্ছে সংঘর্ষ। এ নিয়ে নৌকার প্রার্থী মুক্তার হোসেন মৃধা সাংবাদিক সম্মেলন করে পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন। ভোটাররা জানান, আবাইপুর ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রাথী হেলাল উদ্দীনের ভাই দেশের বড় ডেভলপার গ্রুপ বিশ্বাস বির্ল্ডসের মালিক হওয়ার সুবাদে নির্বাচনী মাঠে টাকা উড়ছে মুড়ি মুড়কির মতো। এতে কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন নৌকার প্রার্থী মুক্তার মৃধা। ইতিমধ্যে বিশ্বাস বির্ল্ডসের মালিক নজরুল ইসলাম দুলাল হেলিকপ্টারে এসে ভাইয়ের পক্ষে নির্বাচনী সভা করে সবার নজর কেড়েছেন। এ বিষয়ে শৈলকুপা থানার ওসি মহিবুল ইসলাম জানান, ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪/৫টি ব্যতিত বাকী গুলোতে শান্তিপুর্ন অবস্থা বিরাজ করছে। তিনি জানান, কিছু ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ ও একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থকরা বিশৃংখলার চেষ্টা করছে। আমরা শক্ত ভাবে তা দমনের চেষ্টা করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ