Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা

সৈয়দপুরে যৌতুকলোভী স্বামীর কান্ড

সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে নজির হোসেন নজু | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

নীলফামারীর সৈয়দপুরে যৌতুকের টাকা না পেয়ে এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করেছে যৌতুকলোভী স্বামী। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যাওয়া ওই গৃহবধূর নাম ইসমত আরা (২০)। এক কন্যা সন্তানের জননী ওই গৃহবধূ বর্তমানে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ইসমত আরার বাবার বাড়ি নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার ১ নম্বর কামারপুকুর বাজার সংলগ্ন এলাকায়।
অভিযোগে জানা গেছে, উল্লিখিত এলাকার দিনমজুর মো. রফিকুল ইসলামের মেয়ে ইসমত আরার প্রায় আড়াই বছর আগে বিয়ে হয় লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার উত্তর ডাউয়াবাড়ি গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে মেহেদী হাসান দুলুর সাথে। শ্বশুর রফিকুল ইসলাম মেয়ের বিয়ের সময় জামাতাকে তিন লাখ টাকা যৌতুক দিতে চাইলে সে টাকা দিতে পারেননি সংসারের নানা অভাব-অনটনের কারণে। তাই বিয়ের পর স্ত্রী ইসমত আরাকে নিয়ে যাওয়ার পর আর বাবার বাড়িতে আসতে দেয়নি স্বামী মেহেদী। যৌতুকের তিন লাখ টাকার জন্য স্ত্রীকে বাবার বাড়িতে না পাঠিয়ে সেখানে তাঁর ওপর নানাভাবে শারীরিক নির্যাতন চালায় স্বামী মেহেদী। এ সময়ের মধ্যে তাদের এক মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়। ইসরাত জাহান ফারিয়া নামের ওই মেয়ের বর্তমানে বয়স এক বছর।
আর এরই মধ্যে ইসমত আরার দিনমজুর বাবা রফিকুল ইসলাম মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে অনেক কষ্ট ও ধারদেনা করে জামাতাকে যৌতুকের ৫০ হাজার টাকা তুলেও দেন। আর বাকি টাকার জন্য স্ত্রীকে চাপ দেয় যৌতুকলোভী মেহেদি। এক পর্যায়ে গত তিন মাসে আগে মেহেদী তাঁর বাবার আবুল কাশেম আলীর সঙ্গে স্ত্রী ইসমত আরা ও তার কন্যা সন্তানকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। সেই থেকে ইসমত আরা ও তাঁর মেয়ে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিল।
ঘটনার আগের দিন গত বুধবার মেহেদি হঠাৎ শ্বশুর বাড়ির পাশে ভগ্নিপতি আব্দুল মিয়ার (ট্রাক চালক) বাড়িতে আসে। ঘটনার দিন গভীর রাতে সুযোগ বুঝে ইসমত আরা ঘরে ঢুকে গলায় ছুরি চালায়।
এ সময় ইসমত আরার পাশে থাকা তাঁর ছোট বোন রেশমী (৮) ঘটনাটি টের পেয়ে চিৎকার দেয়। তার আত্মচিৎকারে অন্য ঘরে থাকা বাবা-মা বের হয়ে এলে জামাতা মেহেদি দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। সে পালিয়ে যাওয়ার সময় তার ব্যবহৃত মোবাইল সেট ও একটি ব্যাগ পড়ে যায়। পরে গ্রামের অন্যান্য লোকজনের সহায়তায় গুরুতর আহত ইসমত আরাকে স্থানীয় ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করায়। তাঁর গলায় আটটি সেলাই করতে হয়েছে বলে হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। বর্তমানে সে হাসপাতালে তৃতীয় তলা নারী ও শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহজাহান পাশা জানান, গৃহবধূ ইসমত আরাকে তাঁর বাবার বাড়িতে গলা কেটে হত্যার চেষ্টার লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ