Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাটকল শ্রমিকদের আন্দোলন স্থগিত বিলুপ্তির পথে সোনালি আঁশ

আবু হেনা মুক্তি : | প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

এক সময়কার সোনালী আঁশ খ্যাত পাট সেক্টর অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি এবং পাট মন্ত্রণালয় ও বিজেএমসি’র অবহেলার কারণে আজ ধ্বংসের পথে। রাষ্ট্রায়ত্ব খাতের পাটকল গুলোকে বেশ কয়েক বছর যাবত নানা সংকট মোকাবেলা করতে হচ্ছে। যার ফলে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং শ্রমিক অসন্তোষ ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে ৩ শর্তে পাটকল শ্রমিকদের চলমান আন্দোলন এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগদান করে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নয়টি সরকারি পাটকলে শ্রমিকদের আন্দোলনের বিষয়টি নিয়ে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে খুলনার জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) ও শ্রমিকদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পর টানা ১৫ দিন ধরে চলা আন্দোলন স্থগিত করা হয়। বৈঠকশেষে পাটকল শ্রমিক লীগের খুলনা ও যশোর অঞ্চলের আহŸায়ক মুরাদ হোসেন এ ঘোষণা দেন। চার ঘণ্টা আলোচনার পর শ্রমিকরা ঘোষণা দেন- চলতি সপ্তাহে দুটি বকেয়া এবং এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো বকেয়া দেয়ার পাশাপাশি আজ বুধবার বন্ধ মিলগুলোতে জরুরিভাবে কর্মরত শ্রমিকদের হাতে মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন করে পে ¯িøপ দেয়ার শর্তে আন্দোলন স্থগিত করা হয়।
বিজেএমসির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারনে গত ১০ বছরে রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলের লোকসানের পরিমাণ সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। যদিও দেশের বেসরকারি পাটকলগুলো লাভ করছে। এ পরিস্থিতির জন্য রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল শ্রমিকরা এবং শ্রমিক নেতারা কারখানা পরিচালনায় দক্ষ ব্যবস্থাপনার অভাব এবং কাঁচা পাট কেনায় অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতিকে দায়ি করেছেন।
অপরদিকে, বিজেএমসি বিগত ১৫ দিনে খুলনা-যশোর অঞ্চলের ৯ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে উৎপাদন ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৫ মেট্রিকটন পাটজাত পণ্য। অর্থাৎ যার বিক্রয়মূল্য দাঁড়ায় ১৫ কোটি টাকা। খুলনা-যশোর অঞ্চলের ৯ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে এ পর্যন্ত শুধু শ্রমিক মজুরি বকেয়া পড়েছে ৪২ কোটি টাকা। আর কর্মকর্তা-কর্মচারিদের গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত বকেয়া বেতনের পরিমাণ ১৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রায় ৬০ কোটি টাকা বকেয়া পড়েছে শুধু মজুরি ও বেতন। পক্ষান্তরে ৯ মিলের উৎপাদিত পণ্য মজুদ রয়েছে ৩শ’ কোটি টাকারও বেশি। গত ৫ মে বিকেল থেকে খুলনা-যশোর অঞ্চলের ৯ পাটকলে কর্মবিরতি শুরু হয়ে ১৩ মে থেকে সারাদেশের ২৬টি পাটকলে এ কর্মবিরতি পালন করা হয়। সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ, খুলনার আহŸায়ক এড. কুদরত-ই খুদা বলেন, ১০ হাজার শ্রমিক গত তিন মাস ধরে মুজরি না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের ৪০০ এর অধিক এসএসসি পাস শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারছে না। ঈদের আগে বকেয়া মজুরি পরিশোধ করে শ্রমিকদের দাবি দাওয়া মেনে নেয়ার আহŸান জানান। বক্তারা আরো বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটগুলোকে প্রাইভেট খাতে দেয়ার যে ষড়যন্ত্র চলছে তা কঠিন আন্দোলনের মাধ্যমে রুখে দেয়া হবে। রাষ্ট্রায়ত্ত মিলগুলোকে আধুনিকায়ন করে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার আহŸান জানান।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ