পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের প্রধান রফতানি পণ্য হলো তৈরি পোশাক। অথচ ঈদকে ঘিরে অভিজাত বিপণি বিতান থেকে শুরু করে ছোট, বড় শপিংমলে নারীদের পোশাকসহ প্রায় পুরো বাজারটাই ভারতীয় পোশাকের দখলে চলে যায়।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পুরো বাংলাদেশের বাজার দখল করে নিয়েছে ভারতীয় পোশাক। আর বিক্রেতারা বলছেন, ভারতীয় নিত্য-নতুন ডিজাইনের পোশাক চড়া দাম হলেও এসবের প্রতি বিশেষ আগ্রহ ক্রেতাদের। তাই রমজানের ঈদকে কেন্দ্র করে দেশের অন্যান্য শপিং কমপ্লেক্সের মতো কুমিল্লার বিপনী বিতানগুলোতে ভারতীয় পণ্য আসতে শুরু করেছে।
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে ঘিরে কুমিল্লায় ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে অবাধে আসছে ভারতীয় শাড়ী-থ্রিপিসসহ বিভিন্ন পণ্য। সীমান্ত দিয়ে পাড় হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার হচ্ছে এইসব পণ্য। ইতিমধ্যে চোরাকারবারিরাও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ঈদুল ফিতরকে টার্গেট করে কুমিল্লার বাণিজ্যিক শহরে প্রায় তিনশ’ কোটি টাকার ভারতীয় কাপড় মজুদ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। চোরাকারবারীসহ বিভিন্ন সোর্সে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসব ভারতীয় কাপড় আনা হয়েছে।
এখানকার ঈদ বাজার ভারতীয় কাপড়ে সয়লাব হয়ে পড়েছে। এখান থেকে রেল, সড়ক পথে রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। সীমান্ত দিয়ে চোরাপথে আসা মালামালগুলো ‘বানের পানির মতো’ কুমিল্লায় আসছে। কুমিল্লা সীমান্ত হয়ে আসা মালামাল প্রধানত বাই সাইকেলে করে ৫ কিলোমিটার দূরের পথ কুমিল্লায় নিয়ে আসা হয়। এসব পণ্য পরে সময় ও সুযোগ বুঝে ট্রেন, বাস, ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে পৌঁছে দেয়া হয়। এ কাজে যারা বাধা দিবে তাদের সঙ্গে চোরাচালানিদের গভীর সখ্যতা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, কুমিল্লার ভারত সীমান্তবর্তী ৭৪ কিলোমিটার এলাকায় চোরাচালান সিন্ডিকেট চক্র তৎপর হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ এই সীমান্ত এলাকাজুড়ে রয়েছে কুমিল্লার ব্রাক্ষণপাড়া, বুড়িচং, আদর্শ সদর, সদর দক্ষিণ ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলা। চোরাচালানসহ অপরাধ দমনে ভারত সরকার কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করলেও থেমে নেই মালামাল পাচার। সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সীমান্তে চোরাচালানী তৎপরতা সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে বলে প্রচার করা হয়।
তবে দায়িত্বশীল ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা ব্রাক্ষণপাড়া উপজেলার চড়নলনগর, তেতাভূমি, বাঁশমঙ্গল, শশীদল, আশাবাড়ি, নয়নপুর, বুড়িচংয়ের চড়নলনগর, কালীকৃষ্ণনগর, পাহাড়পুর, শরীফপুুর, ছয়গ্রাম, সদর উপজেলার বেলবাড়ি, ভৈরবপুর, মতিননগর, কোটেশ্বর, শিবের বাজার, নিশ্চিন্তপুর, কেরানীনগর, আনন্দপুর, তেলকুপি, মীরপুর, জামবাড়ী, অরন্যপুর, গোলাবাড়ি, বিবির বাজার, সাহাপাড়া, সদর দক্ষিণের মথুরাপুর, বিরাহীপুর, কনেশতলা, যশপুর, একবালিয়া, সূর্যনগর, শ্রীপুর, উলুরচর, চৌয়ারা বাজার, সুর্বনপুর, ভাটপাড়া, বোলাই, দড়িবটগ্রাম, ভাগালপুর, বানীপুর চৌদ্দগ্রামের জয়নগর, শিবের বাজার, কালিকৃষ্ণ নগর, সফুয়া, লালারপুর, বাবুটিপাড়া, আমানগন্ডা, মতিয়াতলী, কোমারডোগা, বীরচন্দ্রনগর, নাটাপাড়া, কালির বাজার, আটগ্রাম, বসস্তপুর, চিওড়া, জগন্নাথদীঘি, সাতবাড়িয়া, পদুয়া প্রভৃতি সীমান্ত পথে প্রতিদিন দু’দেশে অবৈধভাবে পাচার হচ্ছে বিভিন্ন মালমাল।
পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় মনোহরপুরের সাত্তার খান কমপ্লেক্স, খন্দকার হক টাওয়ার, ময়নামতি গোল্ডেন টাওয়ার, সাইবার ট্রেড, নূর মার্কেট, আনন্দ সিটি সেন্টার, হিলটন টাওয়ার, নিউ মার্কেট, হোসনেআরা ম্যানসন, সাইবার ট্রেড, নূর মার্কেট, গণি ভূঞা ম্যানসন, চৌরঙ্গী শপিং সেন্টার, লাকসাম রোডে বিবি সমতট, রামঘাট এলাকায় কুমিল্লা টাওয়ার, রেইসকোর্সে ইস্টার্ণ ইয়াকুব প্লাজায় রাজগঞ্জ বাজার এলাকার বিভিন্ন দোকানে ভারতীয় নিত্য নতুন পোশাকে আর কসমেটিকসে ভরপুর।
সরেজমিন দেখা যায়, মাকের্টের দোকানগুলো ভারতীয় পণ্যে ঠাসা অবৈধপথে আসা পণ্যের মাঝে নামিদামি ব্র্যান্ডের কটন ও জর্জেটের থ্রিপিসের মধ্যে রয়েছে হাসেনা-২, আইস্তা, রাখী, বর্ষা, কাভি, কোরা, কিলল, জিবা, রিলেসা, সামার, মিলান, আনজারা, ইন্ডিয়ান নেট, স্টোনের জ্যাকেট বডি, সুপার নেট সূতি, রাজশ্রী, সীমার বডি, কুমকুম কোঁ, রাগিনী নামের ভারতীয় শাড়ি এবং অক্টোপাস, নেট, বেলা, জি বাংলা, মাসাককালি, সোহানা, সাকিরা, সানিয়া মির্জা, স্টোনের মাসকিন সিল প্রভৃতি নামের থ্রিপিস।
রিলেশানের পরিচালক আলী হায়দার কামাল জানান, তরুণীদের পছন্দের তালিকায় ভারতীয় ড্রেসের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। কুমিল্লা খন্দকার ম্যানশনের এক শো-রুমের দায়িত্বে থাকা বিক্রেতা তোফায়েল আহমেদ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমাদের দেশ পোশাক তৈরিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও দুই ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে বিদেশি পোশাকের আধিক্য থাকে, যেটা বহুকাল ধরেই চলে আসছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।