দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
উত্তর: রোজা অবস্থায় চোখে ঔষধ বা ড্রপ ব্যবহার: চোখে ড্রপ, ঔষধ, সুরমা বা মলম ইত্যাদি ব্যবহার করলে রোজা নষ্ট হবে না। যদিও এগুলোর স্বাদ গলায় উপলব্ধি হয়। কারণ, চোখে ঔষধ ইত্যাদি দিলে রোজা না ভাঙ্গার বিষয়টি হাদিছ ও ফিকহ শাস্ত্রের মূলনীতি দ্বারা প্রমাণিত। (যাদীদ ফিক্বহি মাসায়েল, পৃ. ১৮৩)
মুখে ঔষধ ব্যবহার করা: মুখের অভ্যন্তরে কোনো ঔষধ ব্যবহার করে তা গিলে ফেললে রোজা ভেঙ্গে যাবে। তা যত স্বল্প পরিমাণই হোক না কেন। অতএব, কেউ যদি রমযানে ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু গিলে ফেলে, তাহলে তার উপর উক্ত রোজার কাযা-কাফ্ফারা উভয়টা ওয়াজিব হবে। (ইসলাম ও আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান) রোজা অবস্থায় অক্সিজেন ব্যবহার: নাকে অক্সিজেন নিলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। যেহেতু শরীরের ভিতর বাহির থেকে কোন কিছু প্রবেশ করার যে চার নালি রয়েছে নাক তন্মধ্যে অন্যতম। (ফতোয়ায়ে রশিদিয়া, খ-১, পৃ. ২৫৩)
মহিলাদের ঋতুস্রাব অবস্থায় রোজা: মহিলাদের হায়েয (ঋতুস্রাব) এবং নেফাস অবস্থায় রোজা ছেড়ে দিতে হবে। আর যদি রমযান মাসের মধ্যে তারা পাকপবিত্র হয়ে যায়, তাহলে অবশিষ্ট রোজাগুলো তাদেরকে রাখতে হবে এবং রমযানের পর ছুটে যাওয়া রোজাগুলোর কাযা করে নিতে হবে। (বাহরুর রায়েক)
রোজা অবস্থায় ঔষধ সেবন করে ঋতুস্রাব বন্ধ রাখা: মহিলাদের ঋতু আসা একটি স্বভাবজাত বিষয়। সৃষ্টিগতভাবে ঋতুস্রাব চলাকালীন সময় শরিয়ত কর্তৃক তাদেরকে অপারগ গণ্য করে তাদের থেকে নামাজ-রোযা ইত্যাদির দায়িত্ব উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। সনাতন ও আধুনিক চিকিৎসার দৃষ্টিতেও নিয়মিত ঋতুস্রাব মহিলাদের সুস্থতার প্রমাণ বহন করে। এর ব্যতিক্রম ঘটলে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়, এমন কাজ থেকে বিরত থাকা চাই। তারপরেও যদি কোন মহিলা ঔষধ সেবনের মাধ্যমে ঋতুস্রাব বন্ধ করে রোজা আদায় করে, তবে তার রোজা শুদ্ধ হয়ে যাবে।
রোজা রেখে রক্ত দেওয়া ও নেওয়া: শরীরে রক্ত নিলে বা নিজ শরীর থেকে কাউকে রক্ত দান করলে কোনো অবস্থাতেই রোজা নষ্ট হবে না। কারণ, রক্ত দেওয়ার কারণে কোন বস্তু দেহের অভ্যন্তরে ঢুকেনা, তাই তাতে রোজা নষ্ট হওয়ার প্রশ্নই আসে না। আর রক্ত নিলে যেহেতু রক্ত শরীরের অন্যান্য ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে প্রবেশ করা হয়ে থাকে। সুতরাং রোজাবস্থায় কারো শরীরে রক্ত দান করলে বা নিজে রক্ত গ্রহণ করলে রোজা নষ্ট হবে না। (ফাতওয়ায়ে শামী)
রোজা অবস্থায় স্যালাইন ব্যবহার: স্যালাইন নিলে রোজা ভাঙ্গবে না। কারণ, স্যালাইন নেয়া হয় রগে। আর রগ রোজা ভঙ্গের গ্রহণযোগ্য কোন ছিদ্র ও রাস্তা নয়। তবে রোজার দুর্বলতা দূর করার উদ্দেশ্যে স্যালাইন নেওয়া মাকরূহ। (আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল ৩/২৮৮)
রোজা অবস্থায় ইনসুলিন ব্যবহার: রোজা অবস্থায় ডায়াবেটিস রোগী ইনসুলিন নিলে রোজা নষ্ট হবে না। কারণ ইনসুলিন রোজা ভাঙ্গার গ্রহণযোগ্য রাস্তা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে না এবং গ্রহণযোগ্য কোন খালি স্থানেও পৌঁছে না। (ফতোয়ায়ে শামী)
রোজা অবস্থায় ইনজেকশন নেয়ার হুকুম: ইনজেকশন নিলে রোজা নষ্ট হবে না। চাই তা গোস্তে নেওয়া হোক বা রগে। কারণ ইনজেকশনের সাহায্যে দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশকৃত ঔষধ গোস্ত বা রগের মাধ্যমেই প্রবেশ করানো হয়ে থাকে, যা অস্বাভাবিক প্রবেশ পথ, তাই ইহা রোজা ভঙ্গের গ্রহণযোগ্য কারণ নয়। (বাহরুর রায়েক)
নাকে ঔষধ বা ড্রপ ব্যবহার: নাকে ড্রপ, ঔষধ বা পানি ইত্যাদি দিয়ে ভিতরে টেনে নিলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। কারণ, নাক রোজা ভেঙ্গে যাওয়ার গ্রহণযোগ্য রাস্তা। নাকে ড্রপ ইত্যাদি নিলে তা গলা পর্যন্ত পৌঁছে যায়। (ফতোয়ায়ে শামি, খ-২, পৃ. ২০০)
উত্তর দিচ্ছেন: মুফতি ইবরাহীম আনোয়ারী
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।