Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেনাবাহিনীতে নিয়োগ বাপ-বেটার প্রতারণা

পঞ্চগড় জেলা সংবাদদাতা: | প্রকাশের সময় : ১৫ মে, ২০১৯, ১২:০৩ এএম


 পঞ্চগড়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বেসামরিক পদে নিয়োগ দেয়ার নামে বাবা ও ছেলের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। তাদের সহযোগিতায় একটি দালালচক্র প্রায় ৩৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের নামে থানায় লিখিত দেয়া হয়েছে। মাস পেরিয়ে গেলেও মামলা হিসেবে নথিভূক্ত করা হয়নি অভিযোগ। অভিযুক্ত বাবা ও ছেলেকে আটকও করেছিল স্থানীয়রা। তাদের পুলিশে দিতে বাধা দেন স্থানীয় ইউপি সদস্য। ওই জনপ্রতিনিধিসহ প্রভাবশালীরা বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রতারণার শিকার চাকরি প্রার্থীদের অভিযোগ, পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের নাককাটিপাড়া এলাকার ফরিদ হোসেনের ছেলে সোহাগ নিজেকে সেনাবাহিনীর বেসামরিক পদে চাকরিজীবী পরিচয় দেন এবং নিয়োগপত্রও দেখান। সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে তার যোগাযোগ রয়েছে বলেও প্রচার চালায়। মাস ছয়েক আগে (গত ডিসেম্বর) ফরিদ হোসেন ও তার ছেলে সোহাগ সেনাবাহিনীতে বেসামরিক পদে কয়েকজনকে নিয়োগ দেয়া হবে বলে স্থানীয়দের জানান। এ সময় তারা নিয়োগপত্র বুঝিয়ে দেয়ার শর্তে টাকার কথা বলেন। এক পর্যায়ে তারা সেনাবাহিনীর লোগো সম্বলিত ভূয়া নিয়োগপত্র দেখিয়ে চাকরি প্রত্যাশী সাত যুবকের কাছ থেকে ৩৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। বাবা এবং ছেলের অভিনব কৌশলে ওই ইউনিয়নের দালালপাড়া এলাকার আব্দুল জব্বারের ছেলে সিদ্দিকুর রহমান, শাল্টিয়াপাড়া এলাকার নুর আলমের ছেলে সুজন ইসলাম, একই এলাকার আব্দুল গফ্ফারের ছেলে শাহারিয়ার সৌরভ, টুনিরহাট এলাকার আব্দুল কাদেরের ছেলে মামুন ইসলাম, কামাতকাজলদিঘি ইউনিয়নের কুচিয়ারমোড় এলাকার নজির উদ্দিনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম, একই এলাকার তমিজ উদ্দিনের ছেলে রবিউল ইসলাম রুবেল ও তরিকুল ইসলামের ছেলে মাসুদ রানা প্রায় ৩৩ লাখ টাকা প্রদান করেন। এদের কাছে শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ি ২ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। এর বিপরীতে কোন পরীক্ষা ছাড়াই তাদের হাতে ভূয়া নিয়োগপত্র ধরিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু নিয়োগপত্র অনুযায়ি চাকরিতে যোগদান করতে গিয়ে তাদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরে। তবে অফিস সহকারির ভূয়া নিয়োগপত্র হাতে দিয়ে সিদ্দিকুর রহমান নামে এক যুবককে ঢাকার কচুক্ষেত সেনানিবাসের একটি ক্যান্টিনে ওয়েটারের কাজ নিয়ে দেয় দালালচক্রটি। পরে তিনিও এলাকায় ফেরত এসে বাবা ছেলের অপকর্ম ফাঁস করে দেন। নিয়োগের নামে প্রতারণার বিষয়টি জানাজানি হলে ফরিদ ও তার ছেলে সোহাগকে আটক করে স্থানীয়রা। তাদের পুলিশে দিতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য আজিজুল ইসলাম থানা পুলিশ না করে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমঝোতার আশ^াস দেন। অবশেষে গত ২৩ মার্চ প্রতারণার শিকার সিদ্দিকুরের বড় ভাই খাদিমুল ইসলাম ফরিদ হোসেন ও তার ছেলে সোহাগের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় থানায় একটি প্রতারণার অভিযোগ দাখিল করেন। বর্তমানে সোহাগ ও তার বাবা পলাতক রয়েছে। প্রতারণার শিকার সুজন আলী বলেন, সোহাগ এলাকায় সেনাবাহিনীর টিশার্ট পড়ে ঘুরতো। সে নিজেকে সেনাবাহিনীর অফিস সহকারি পদে চাকরিজীবী পরিচয় দিত। তার নিয়োগপত্র সবাইকে দেখাতো। প্রতিবেশি হওয়ায় আমরা তাদের সরল মনে বিশ^াস করেছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ