পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। সমস্ত হিংসা-বিদ্বেষ, রাগ-ক্রোধ, লোভ-মোহ, প্রতিহিংসা-জিঘাংসা থেকে আত্মশুদ্ধি-আত্মসংযমের প্রশিক্ষণের মাস। মানুষ আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য রোজা পালন করে। মানুষ পরকালের কথা ভেবে নিজেকে শুধরে নেয়। কিন্তু এই পবিত্র মাসেও মিডনাইট নির্বাচনের সরকার ও সরকার প্রধানের মধ্যে রমজানের মাহাত্ম্যের লেশমাত্র নেই। প্রতিহিংসাপরায়ণতা, দাম্ভিকতা, নৃশংসতা, নির্দয় ও মানবতাহীনতা তাদের তীব্রভাবে ঘিরে রেখেছে। এই সরকারই গণতন্ত্রকে ছিন্নমূল করেছে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের জন্য অকুতোভয় আপোষহীন সংগ্রামী বেগম খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ করেনি বর্তমান জনধিকৃত মধ্যরাতের অন্ধকারের সরকার। সুচিকিৎসা ও জামিনে বাধা প্রদানের পেছনে গভীর ভয়ংকর নীলনক্সা এখন দিনের আলোর মতো ষ্পষ্ট। পুরো আইনী প্রক্রিয়াতে প্রতিহিংসাপরায়ণতা আর জিঘাংসায় ভরপুর। দেশনেত্রীকে প্রাণহানির হুমকীর মুখে ফেলে রেখে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, লন্ডন থেকে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পরপরই সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দিয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার মামলা পরিচালনার জন্য কেরানীগঞ্জের কারাগারে আদালত বসাতে। গুরুতর অসুস্থ দেশনেত্রীকে পিজি হাসপাতাল থেকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে নেয়ার চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে।
তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি বিবেকবান মানুষ আশা করেছিলেন, এই পবিত্র রমজানে অন্তত: হিংসা-বিদ্বেষ, রাগ-ক্রোধ, লোভ-মোহ, প্রতিহিংসা-জিঘাংসা থেকে আত্মশুদ্ধি লাভ করবে সরকার ও সরকার প্রধান। জনগণের নেত্রীকে মুক্তি দিয়ে জনগণের মাঝে ফিরে আসতে দেয়া হবে। তাকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারাবন্দী করে মধ্যরাতের সরকার যে অপরাধ করেছে তা শুধরে নেবে। কিন্তু বাস্তবে তারা প্রতিহিংসাপরায়ণ মানসিকতা ত্যাগ করতে পারেন নি। আদালতকে কুক্ষিগত করে রেখে বেগম জিয়ার জামিনে পদে পদে বাধা দেয়া হচ্ছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, আগুন নিয়ে আর খেলবেন না। এই হিংসার আগুনে একদিন হয়তো আপনাদের নিজেদেরই সর্বনাশ হবে। খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে যে ছিনিমিনি খেলছেন এবার সেই ‘ডার্টি গেইম’ বন্ধ করুন। জামিনে হস্তক্ষেপ বন্ধ করুন। আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার বন্ধ করুন। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিদের মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবেন না। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য আদালতের স্বাধীনতাকে কারাগারে বন্দী করবেন না। অবিলম্বে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিতে হবে। আপনাদের বর্বর মতলব জনগণের কাছে ফাঁস হয়ে গেছে। জনগণ আর আপনাদেরকে রেহাই দেবেন না। সরকার যদি বারবার দেশনেত্রীর জামিনে বাধা দেয় তবে রাজপথেই হবে ফয়সালা।
কৃষকদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, এদেশের প্রাণ কৃষকদের এখন নাভিশ্বাস দশা। ধান চাষ করে লোকসান দিয়ে তাদের পথে বসার অবস্থা। কৃষকের ঘরে ঘরে এখন হাহাকার। এই মিডনাইট ইলেকশনের সরকারের হঠকারী সিদ্ধান্ত, বিদ্যুৎ-জ্বালানী ও সারের মূল্য বৃদ্ধিসহ কৃষকদের প্রতি উদাসীনতার কারণে উৎপাদন খরচ উঠছে না কৃষকের। প্রতি মন ইরি-বোরো ধানে লোকসান দিচ্ছেন ২০০ টাকা করে। বর্গাচাষিরা সর্বশান্ত হয়ে যাচ্ছেন। বিঘা প্রতি জমিতে লোকসান দিচ্ছে ৫ হাজার টাকা। লোকসানের পর ব্যাংক ঋণ, এনজিও’র কিস্তি, মহাজন ও সার-কীটনাশক ব্যবসায়ীদের দেনা শোধ করা দায় হয়ে পড়েছে। নানা ঋণে জর্জরিত কৃষক ক্ষোভে দুঃখে কষ্টে ধানের দাম না পেয়ে পাকা ধানক্ষেতে আগুণ দিচ্ছেন। বিক্ষোভ করছেন। সড়কে ধান ছিটিয়ে প্রতিবাদ করছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে ধান ক্ষেতে আগুন দেয়ার ঘটনা নজিরবিহীন।
তিনি বলেন, পরমুখাপেক্ষী গণবিরোধী অবৈধ সরকারের কৃষিবিরোধী নীতির কারণে কৃষকরা ধান ক্ষেতে আগুণ দিতে বাধ্য হচ্ছে। এই অবৈধ সরকার কৃষকদেরকে হাতেও মারছে, ভাতেও মারতে চাচ্ছে। কৃষকদের পীঠ আজ দেয়ালে ঠেকিয়ে দিয়েছে।এই গণদুশমন সরকারের যদি ন্যূনতম বিবেক বোধ থাকে তবে আজই পদত্যাগ করা উচিত। সবচেয়ে বড় আশংকার কথা হলো, কৃষকরা যদি লোকসান থেকে বাঁচতে আগামীতে ধানের ফলন কমিয়ে দেয়, তাহলে কি উপায় হবে? যার অবধারিত ফলাফল-দুর্ভিক্ষ।
সরকারের মন্ত্রীদের চাপাবাজী বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, দেশে কর্মসংস্থানের অভাবে চাকরির জন্য জীবনবাজি রেখে ইতালী পাড়ি দিতে গিয়ে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মারা গেছেন ৩৭ জন হতভাগ্য ভাই। তাদের জন্য আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা কেউ বাংলাদেশকে কানাডা-স্পেনের সাথে তুলনা করছেন, কেউ প্যারিস-লসএঞ্জেলস-সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা বলছেন। আবার নির্লজ্জের মতো এই সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন, সুইজারল্যান্ডের মন্ত্রী নাকি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এক টুকরো বাংলাদেশ চায়, আবার বেলজিয়াম নাকি বাংলাদেশ মডেলে চলতে চায় !! সরকারের উদ্দেশ্যে বলতে চাই-চাপাবাজী দিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে পারবেন না। আপনাদের উদ্ভট-অবাস্তব ও কা-জ্ঞানহীন কথাবার্তায় মানুষ হাসাহাসি করে, আমোদিত হয়। বাস্তবতা হলো জনগণের ভোট ছাড়াই জোর করে জনগণের ঘাড়ে চড়ে বসা সরকার দেশকে লুটপাট করে অর্থনীতিকে ফাঁপা-ফোকলা করে দিচ্ছে। বাড়ছে বেকারত্ব। ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডার, অনুগত আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসনের জুলুম ও অব্যবস্থাপনায় দিনকে দিন বসবাসের অযোগ্য হচ্ছে দেশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।