বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
‘দানকারিদের মাতা-পিতা সুখে রাইখো কবরে, রোজার মাসে দান করিলে যাইবে না দান বিফলে, রোজার মাসে করেন ভাইগো বেশি বেশি দান, সওয়াব পাইবেন বেশি বেশি মুমিন মুসলমান’...। সুরে বেসুরে এরকম অনুরোধের কথামালা পথচারিদের কানে ভেসে আসে কুমিল্লা নগরীর পথ-ঘাটে হেঁটে যাওয়া বা রাস্তার পাশে দল বেঁধে বসে থাকা ভিক্ষুকের কণ্ঠ থেকে। ঈদ সামনে রেখে কুমিল্লা নগরীতে প্রতিদিন বাড়ছে মৌসুমি ভিক্ষুকের বহর। রোজার শুরু থেকেই শিশু-কিশোর ও বয়স্ক নারী-পুরুষ ভিক্ষুকের দখলে নগরীর পথঘাট।
রোজার মাসে দান খয়রাতের পরিমাণ বেশি পাবার আশায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কুমিল্লায় ভিক্ষুকদের ব্যাপক সমাগম ঘটে। রাজধানী ঢাকার পর কুমিল্লাকেই ভিক্ষাবৃত্তির অন্যতম স্থান হিসেবে বিবেচনা করে ভিক্ষুকরা। নগরীর কান্দিরপাড় লির্বাটি মোড়, পূবালী চত্বর, নজরুল এ্যাভিনিউ, বাদুরতলা, ঝাউতলা, রাজগঞ্জ, চকবাজার, শাসনগাছা বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, টমসমব্রীজ, জাঙ্গালিয়া বাসস্ট্যান্ড, পদুয়ার বাজারসহ জনবহুল স্থানে প্রতিবছর রোজার মাসে ঈদ সামনে রেখে ভিক্ষাবৃত্তি জমে ওঠে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার শবেবরাতের সময় বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে যেসব ভিক্ষুকরা কুমিল্লা নগরীতে এসেছিল তারা আর ফিরে যায়নি। রোজা শুরুর দিন থেকে এসব ভিক্ষুকরা কান্দিরপাড়সহ জনবহুল স্থানগুলোতে অবস্থান করছে। আবার রোজার শুরু থেকেই চাঁদপুর, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, মুন্সিগঞ্জ, নোয়াখালী থেকে সহস্রাধিক মৌসুমি ভিক্ষুক কুমিল্লা নগরীতে ভিক্ষা সংগ্রহে নেমেছে। এসব ভিক্ষুকদের অনেকেই শারিরিকভাবে অনেকটা সবল। এরা নিজ গ্রামের মাঠেঘাটে কাজ করতো। এখন কাজের আকাল চলছে। তাই নিজ জেলার লোকদের চোখের আড়ালে কুমিল্লায় এসে ভিক্ষাবৃত্তিতে নেমেছে ঈদের খরচ যোগানোর জন্য। গত শুক্রবার রোজার প্রথম জুমায় নগরীর প্রতিটি মসজিদের বাইরে ভিক্ষুকের ঢল নেমেছিল।
কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার মধ্যে ভিক্ষাবৃত্তির অন্যতম স্থান হলো লাকসাম। ভিক্ষুকদের রাজধানীও বলা হয় লাকসামকে। এ অঞ্চলের অধিকাংশ ভিক্ষুক শারিরিক প্রতিবন্ধী ও দৃষ্টি শক্তিহীন। রোজার প্রথম জুমারদিন থেকে লাকসামের অসংখ্য ভিক্ষুকের সমাগম ঘটে কুমিল্লা নগরীতে। রাতে ঘুমানোর জন্য ভিক্ষুকরা নগরীর খোলামেলা মার্কেটের বারান্দায় বা রেল স্টেশনে থাকার ব্যবস্থা করে নিচ্ছে। ঘুমানোর ঘটনা নিয়ে প্রায় রাতেই পুরানো ও নতুন ভিক্ষুক গ্রুপের মধ্যে ঝগড়া ঘটনাও ঘটছে। এদিকে ঈদ সামনে রেখে কুমিল্লা রেলস্টেশনে স্থায়ী ভিক্ষুকের পাশাপাশি মৌসুমী ভিক্ষুকের সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুন। এসব ভিক্ষুকদের সঙ্গে যোগ হয়েছে শিশু ভিক্ষুকও। রেলস্টেশনে অনেক আগ থেকেই ভিক্ষাবৃত্তি নিয়ন্ত্রন করার দালাল সিন্ডিকেট রয়েছে। এছাড়াও নগরীর বাসা বাড়িতে নারী ভিক্ষুকদের পদচারণা বেড়েছে। সবমিলে পুরো রোজার মাস ভিক্ষুকের দখলে থাকবে কুমিল্লা নগরীর পথ-ঘাট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।