পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রচন্ড তাপদাহে সারাদেশে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। স্বস্তির বৃষ্টির আশায় সবার চোখ আকাশপানে। কাক্সিক্ষত মেঘ বৃষ্টি নেই। তবে আবহাওয়া বিভাগ বৃষ্টির সুখবর দিয়ে জানায়, আগামী দুই-তিনদিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
টানা কয়েক সপ্তাহের তীব্র গরমের কারণে ঘরে ঘরে অসুস্থ হয়ে পড়েছে মানুষ। গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে সর্বত্র বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট বিরাজ করছে। সেই সাথে বিদ্যুৎবিভ্রাট ও লোডশেডিংয়ে বেড়ে গেছে জনদুর্ভোগ। অবিরাম তাপদাহে সমুদ্রপৃষ্ঠ উত্তপ্ত অবস্থায় থাকায় আবারও বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের আলামত দেখা দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ফণি বাংলাদেশে দুর্বল হয়ে কেটে গেলেও আবহাওয়ায় কোনো পরিবর্তন হয়নি। গত এপ্রিল মাস থেকেই সমগ্র এশিয়াজুড়ে বিরাজ করছে বৈরী আবহাওয়া।
বৈশাখ শেষ প্রান্তে। জ্যৈষ্ঠ মাস দরজায় কড়া নাড়ছে। খরতপ্ত রুক্ষ অসহনীয় আবহাওয়ায় কাহিল হয়ে পড়ছে মানুষ, প্রাণিকুল, পরিবেশ-প্রকৃতি। দিনের তাপমাত্রা ইতোমধ্যে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে গেছে। রাতের তাপমাত্রার পারদও ২৯ ডিগ্রিতে। ঢাকায় বাস্তব তাপের দহন ৪৪ ডিগ্রিরও বেশি। সবখানে অসহনীয় ভ্যাপসা গা জ্বলা গরম।
ভোরবেলায় পূবাকাশে সূর্য উঁকি দেয় তপ্ত কড়াইয়ের মতো। দিনভর আগুনের মতো রোদের দহনে মানুষ অতিষ্ঠ। ফ্যানের বাতাসেও আগুনের হলকা। স্বস্তি নেই বাড়িঘর, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, দোকান-পাট, শিল্প-কারখানা কোথাও। রাতের বেলায় গরমে হাঁসফাস অবস্থা। বিদ্যুৎবিভ্রাট ও লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় মানুষের কষ্ট অশেষ। শহর-নগরে মাঝেমধ্যে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের অবস্থা আরও শোচনীয়। আবার বিশুদ্ধ পানির অভাবে অনেক এলাকায় পানির হাহাকার অবস্থা বিরাজ করছে। নদ-নদী, খাল, পুকুর, দীঘি, কুয়া, ঝরণা, নলকুপসহ পানির উৎসগুলো শুকিয়ে গেছে।
অবিরাম প্রায় এক মাসের তাপদাহে সর্বস্তরের মানুষের উৎপাদন ক্ষমতা কমে গেছে। হতদরিদ্র দিনমজুর, দিনে এনে দিনে খাওয়া লোকদের আয়-রোজগার কঠিন হয়ে পড়েছে। স্কুল কলেজ মাদরাসার শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে পথচারীরা বরফ ও লেবু মেশানো শরবৎ, আইসক্রিম মুখে তুলে ইফতারির সময় গলা ভেজানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু রাস্তার ধারে বিক্রি হওয়া এসব পানীয় স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ বলছেন, তীব্র গরমের সময়ে শরীর সুস্থ রাখতে বিশুদ্ধ পানি, লেবুর শরবৎ পান এবং দেশীয় ফলমূল দিয়ে ইফতার গ্রহণ করতে হবে।
এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। এরফলে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস এবং রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে।
বর্তমানে টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নোয়াখালী, রাজশাহী ও পাবনা অঞ্চলসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত হলে তাপমাত্রা কিছুটা প্রশমিত হতে পারে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় তাপমাত্রা হ্রাসের সম্ভাবনা রয়েছে।
বৃষ্টির সম্ভাবনা কমবে তাপদাহ
গতকাল রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশের কয়েক স্থানে বিক্ষিপ্ত হালকা বৃষ্টিপাত হয়েছে। আজও (সোমবার) দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এরফলে কমবে তাপদাহের তীব্রতা। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে নেত্রকোনায় ২১, নিকলিতে ১১, স›দ্বীপে ৬, চাঁদপুরে ১, সিলেটে ১৯, শ্রীমঙ্গলে ৮, ডিমলায় ২, রাজারহাটে ১১ মিলিমিটার এবং ঢাকা ও ময়মনসিংহে ছিটেফোঁটা বৃষ্টিপাত হয়েছে।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৫.৮ এবং সর্বনিম্ন ২৫.৪ ডিগ্রি সে.।
গতকাল সন্ধ্যায় আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
টাঙ্গাইল, রাঙ্গামাটি, নোয়াখালী, রাজশাহী ও পাবনা অঞ্চলসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা প্রশমিত হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সে. হ্রাস পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।