পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
লন্ডন বা প্যারিসের মত বড় বড় শহরের তুলনায় রাজধানী ঢাকার বেশির ভাগ রাস্তা কম প্রশস্ত নয়। কিন্তু ঐসব শহরে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট লেগে থাকবে তা কল্পনাতীত হলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তা নিত্য দিনের ঘটনা। এখানে নিতান্ত প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হলে যানজটের খাঁচায় বন্ধী হয়ে অসহায় পাখির মত ছটফট করতে হয়। রমজান শুরুর পর থেকে গত কয়েকদিনে ঢাকার এ অবস্থা মাত্রা ছাড়ায়।
গত ৩ দিনে ঢাকার যানজট পরিস্থিতি ছিলো ভয়াবহ। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকা সত্তে¡ও জরুরী প্রয়োজনে রাস্তায় বের হয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছে নগরবাসি। গতকাল রোববার বেলার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে যানজট। বিকেলে মতিঝিল এলাকায় একপর্যায়ে স্থবির হয়ে পড়ে জনজীবন। ফলে আধা বা একঘণ্টার পথ পায়ে হেঁটে কয়েক ঘন্টায় পাড়ি দিতে হয়েছে অফিস আদালত থেকে বাসায় ফেরা মানুষদের।
রোববার সকাল থেকে ধানমন্ডি, শাহবাগ, পল্টন, কাকরাইল, শান্তিনগর, মতিঝিল, ফার্মগেট, মিরপুরের আগারগাঁও, প্রগতি সরণি, বনানী, মিরপুর, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী, পুরান ঢাকার নবাবপুর, এয়ারপোর্ট ও উত্তরায় তীব্র যানজট পরিলক্ষিত হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে পরিস্থিতি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
রমজানে যানজটের কারণে রোজাদারদের দূর্ভোগে পড়তে হয়েছে। ভূক্তভোগীরা বলছেন, কয়েকদিন ধরে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে মহাসড়কের অনেক পথ বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে রাজধানীতে গাড়ির চাপ বেড়ে যায়। পাশাপাশি প্রায় পুরো ঢাকা জুড়ে নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের কারণে বড় বড় সড়কগুলোর দুই-তৃতীয়াংশ দখল করে রাখা হয়েছে।
রাস্তায় যানজটের কারণে নগরজুড়ে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে চলা মানুষের সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি। ব্যস্ত সড়ক আটকে থাকার পাশাপাশি অলিগলির রাস্তায়ও রিকশাযাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে দেখা যায়। যানজটে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন নারী, শিশু ও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা।
ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, যানজটের কারণে প্রতিদিন চলতে থাকা আমাদের প্রতিদিনকার ভোগান্তি চোখে পড়ার বা আমলে নেয়ারও যেন কেউ নাই। সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা নব্য উচ্চ শ্রেণীর লোকজনের নিচের দিকে তাকানোর বা সাধারণ মানুষের খোঁজ নেয়ার ফুঁসরতই পান না।
ডিএমপির ট্র্যাফিক বিভাগ সূত্র জানায়, ফুটপাতে ইফতারের দোকান বসতে না দেয়া, ফুটপাত হতে হকার উচ্ছেদ, অবৈধ পার্কিং রোধ, যত্রতত্র যাত্রী ওঠানাম রোধে রমজানজুড়ে কার্যক্রর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি সহায়তা করছে কমিউনিটি পুলিশ। মার্কেট ও বাস টার্মিনালকেন্দ্রিক ট্র্যাফিকের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।
শাহবাগ থেকে মতিঝিলের পথে আসা নুরুল ইসলাম বলেন, মতিঝিল যাওয়ার জন্য দুপুরে বাসে উঠে আধা ঘন্টার মত বসে থাকলেও বাস একটুও আগাতে পারেনি। পরে নেমে হাঁটা শুরু করি। ১৫ মিনিটের রাস্তায় যেতে সময় লেগে যায় ১ ঘন্টা।
এদিকে যানজটের কারণে চরম মানবিক বিপর্যয়ে পড়েন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জরুরী চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বারডেমসহ গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালমূখী যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। মতিঝিলের জ্যামে আটকে থাকা এক এ্যম্বুলেন্স চালক বলেন, লক্ষীপুর থেকে এসেছি। জ্যামের কারণে এমন অবস্থা এ্যম্বুলেন্স যাওয়ারও উপায় নাই। গাড়ীর ভিতর থাকা রোগীর স্বজন বলেন, রোগীর অবস্থা খুব মারাত্মক। সঠিক সময়ে হাসপাতালে নেয়া না গেলে খারাপ কিছু ঘটে যেতে পারে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মীর রেজাউল আলম এ বিষয়ে বলেন, যানজট কমাতে নিরলসভাবে কাজ করছে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। মেট্রোরেল নির্মাণ, গ্যাসলাইন এবং ওয়াসার খোঁড়াখোড়ির কারণে রাস্তা সংকুচিত হয়ে জ্যামের সৃষ্টি হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।