বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঢাকা-বেনাপোল রুটে সা¤প্রতি দূরপালার যাত্রীবাহী বাসে বেড়েছে অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য। প্রতিদিনই কেউ না কেউ সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন। যাদের অধিকাংশ ভারতগামী পাসপোর্টধারী যাত্রী। যাত্রীদের অভিযোগ, নিরাপত্তায় বাস কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে অপরাধ বেড়েই চলেছে। অনেক ক্ষেত্রে বাস স্টাফদের হাতও থাকতে পারে। তবে পরিবহন কর্তৃপক্ষের দাবি, যাত্রীরা সচেতন হলেই চক্রটি কারও ক্ষতি করতে পারবে না।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ভারতে চিকিৎসা, ব্যবসা আর ভ্রমণে যেতে এ পথে যাত্রীদের ভিড় থাকে। প্রতিদিন প্রায় আট হাজার যাত্রী যাতায়াত করে এই পথে। অপরাধীরা জানে এই রুটের যাত্রীদের কাছে নগদ অর্থসহ মূল্যবান সামগ্রী থাকে। তাই এই রুটে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতাও বেশি। গত এক মাসে বেনাপোল পোর্ট থানায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পড়ে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়াদের তালিকা বেশ বড়। কেউ যাত্রী সেজে পিছু নিচ্ছে আবার কেউ মাঝ পথে ফেরিওয়ালা বা ডাব, রস বিক্রেতা হয়ে মানুষ ঠকাচ্ছে। গাড়িতে চড়ে পাশে বসেই যাত্রীদের সাথে তারা সখ্যতা গড়ে তোলে। পরে সুযোগ বুঝে যাত্রীদের অজ্ঞান করে সবকিছু ছিনিয়ে নেয়।
পুলিশের অভিযোগ, এই রুটে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে যারা সর্বস্বান্ত হন তাদের ১০ শতাংশ থানায় অভিযোগ করেন। আর ৯০শতাংশ ঝামেলা এড়াতে বিষয়টি চেপে যান। সাধারণত যাদের পাসপোর্ট খোয়া যায় তারাই থানায় অভিযোগ করেন।
গতকাল বেনাপোল বন্দর থানায় বসে কথা হয় ভারতের ২৪ পরগনার বেলপুর চয়নঘোনা এলাকার দিনেশ মালাকারের ছেলে অসিমমালাকারের (৩৫) সাথে। তিনি বলেন, আমরা চার বন্ধু ভারতে যেতে ঢাকা থেকে ঈগল পরিবহনে উঠি। ফেরিঘাটে নেমে আখের রস খেয়ে আবার বাসে উঠেছিলাম। এরপর আর কিছু জানি না। জ্ঞান ফিরে দেখি হাসপাতালে। আমাদের সবার পাসপোর্ট, টাকা, মোবাইল সবকিছুই খোয়া গেছে। বাড়ি ফিরতে থানায় অভিযোগ লিখিয়েছি।’
বেনাপোল আমদানী রপ্তানি কারক ইমরান হোসেন বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তায় এসব সংঘবদ্ধচক্রকে ধরতে প্রশাসনকে কঠোর ভ‚মিকা পালন করতে হবে। বিশেষ করে ফেরিঘাটে খাবার বিক্রেতাদের নজরদারিতে রাখতে হবে। এছাড়া দূরপালার বাসে টিকিট নিতে পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করতে হবে। তাহলে অপরাধ কিছুটা কমতে পারে।’
স্থানীয় বেনাপোল বাজার ফল ব্যবসায়ী আলী হোসেন বলেন, ‘আগে যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিতে যাত্রীদের ভিডিও ধারণ করা হতো। এতে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা অপরাধ করতে ভয় পেত। কিন্তু এখন সেটা করা হয় না। এতে রহস্যজনকভাবে বাসে যাত্রীরা অজ্ঞান পার্টির হাতে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন, এমনকি তাদের জীবনও নিরাপদ নয়। তাই বাসে নিরাপত্তা বাড়ালে যাত্রীরা রক্ষা পাবে।’
ভারতগামী যাত্রী ইলিয়াছ কবির বলেন, ‘বাস কর্তৃপক্ষের আচরণে মনে হয় অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের সাথে তাদের শখ্যতা রয়েছে। বাসে উঠার পর কেউ অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়লে তারা কোনো দায়িত্ব নিতে চায় না।
বেনাপোল সোহাগ পরিবহনের ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম বলেন ‘যাত্রীদের নিজ থেকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। তাছাড়া গাড়ি ছাড়ার সময় ও ফেরিঘাটে যাত্রীদের জ্ঞাতার্থে সতর্কতামূলক বার্তা প্রচার করতে হবে।
বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল লতিফ বলেন, ‘ঢাকা-বেনাপোল রুটে ইদানিং অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য বেড়েছে। তাদের খপ্পরে পড়ে প্রায়ই অনেকে নিঃস্ব হচ্ছেন। বাস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠছে। গত সপ্তাহে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে এক পাসপোর্ট যাত্রীকে রাস্তায় ফেলে যায় সোহাগ পরিবহনের সুপার ভাইজার।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।