রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
সরকারি সহায়তা না থাকায় বিলপ্তির পথে চাঁদপুরে লবন শিল্প। চাঁদপুর পুরানবাজার জমজমাট ব্যবসা কেন্দ্রে গড়ে উঠা ৪০টি মিলের মধ্যে ৩৫টি লবন মিল ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে টিকে থাকা বাকি ৫টিও বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
আর্থিক ক্ষতি আর প্রয়োজনীয় পুঁজির অভাবে বিলুপ্তের পথে চাঁদপুরের লবন শিল্প। বর্তমানে ৫টি মিল সচল থাকলেও কেবলমাত্র দুটি মিলে লবন উৎপাদন হয়। বাকি তিনটি মিল চলছে নাম মাত্র। মালিকরা লবন শিল্প বিলুপ্তের কারণ হিসেবে উৎপাদন ব্যয় এবং নানা সীমাবদ্ধতাকে দায়ী করছেন।
যোগাযোগের সুবিধা ও কাঁচামালের সহজলভ্যতার কারণে চাঁদপুর পুরানবাজারে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে পাকিস্তান আমলে গড়ে উঠেছিল লবন শিল্প। তখন দেশীয় পদ্ধতিতে পরিশোধন করা লবনের চাহিদা ছিল সর্বত্র। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে লবন শিল্প ডিজিটালাইজড হলেও চাঁদপুরে লবন শিল্প চলতে থাকে এনালগ পদ্ধতিতে। এতে করে একটা সময় লবন শিল্পে ভাটা পড়তে থাকে।
উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি আর উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় দিনের পর দিন আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে বাধ্য হয়ে লবন মিল বন্ধ করে দেয় মালিকরা। এর মধ্যে ২০/২৫টি লবন মিলের বর্তমানে কোন চিহ্ন নেই। কোন কোন লবন মিলের জায়গায় তৈরি হয়েছে বড় ইমারত। আবার কোনটিতে লবনের পরিবর্তে গড়ে উঠেছে রাইস মিল। অনেক প্রতিকূলতার মাঝেও এখনও পর্যন্ত বিসমিল্লাহ প্লাস সল্ট ফ্যাক্টরি ও জনতা সল্ট মিলস নামের দু’টি লবন মিল টিকে আছে চাঁদপুরে।
লবন শিল্পের সাথে জড়িত ব্যবসায়ীরা জানান, চাষিদের কাছ থেকে কাঁচা মাল কিনে চট্টগ্রাম থেকে ট্রলারযোগে চাঁদপুর আনতে অনেক খরচ পড়ে। অপর দিকে আয়োডিনের মূল্য বৃদ্ধি ও পুঁজির অভাবে মিলগুলো আধুনিকায়ন করতে না পারায় যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যবসায় কার্যক্রম চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। এতে করে লাভের চেয়ে লোকসানই গুনতে হয় তাদের। এছাড়াও ‘এসআইপি’ (সল্ট আইয়োডাইজেশন প্লান্ট) না থাকায় বাতিল করা হয় অনেক লবন মিলের রেজিস্ট্রেশন।
নানাবিধ কারনে ঋণ পরিশোধ করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। ব্যাংকের কাছে আবেদন করলেও ঋণ সুবিধা পাচ্ছেন না। এছাড়া সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগীতাও পাওয়া যাচ্ছে না। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে ব্যাংক ঋণের পাশাপাশি সরকারের কাছে প্রয়োজনী ভর্তুকি কামনা করেন লবন ব্যবসায়ীরা।
জনতা সল্ট মিলে কর্মরত কয়েকজন শ্রমিক বলেন, ‘লবন শিল্প ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় আমাদের সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। অনেক শ্রমিক কর্মহারা হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।’
বিসমিল্লাহ প্লাস সল্ট ফ্যাক্টরির মালিক মো. বিল্লাল হোসেন পাটওয়ারি বলেন, ‘চাঁদপুরে লবন শিল্প মৃতপ্রায়। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে জৌলুস অনেক আগেই হারিয়ে গেছে। এখন যে কয়টি লবন মিল টিকে রয়েছে তা বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের সহযোগিতা দরকার। ভর্তুকি এবং ব্যাংক লোনের ব্যবস্থা করলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবো।’
চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ সভাপতি জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম বলেন, একটা সময় চাঁদপুরে জমজমাট লবন ব্যবসা ছিল। যোগাযোগ ও বিভিন্ন সুবিধার কারণে এখানে প্রায় ৪০টির মত লবন ফ্যাক্টরি গড়ে উঠে। সেখানে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করতো। বর্তমানে মালামালের মূল্য বৃদ্ধি ও ব্যবসায়ীরা লোন সুবিধা না পাওয়ায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এই লবন শিল্প। এতে শ্রমিকরা বেকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।