বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
এই দুনিয়ায় নৈতিকতার বড় বড় শিক্ষক যুগে যুগে জন্মগ্রহণ করেছেন, যাদের সংস্পর্শে এসে বড় বড় জাতিসমূহ আদবকেতা বা শিষ্টাচারের পাঠ নিয়েছে, অনুপ্রাণিত হয়েছে এবং আদব ও আখলাকের ওই সবক শিক্ষা করেছে যা হাজার হাজার বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও আজ পর্যন্ত স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। সত্য কথা হলো এই যে, বর্তমান বিশ্বের যেখানেই যতটুকু উচ্চ চরিত্রের নমুনা পাওয়া যাবে তা তাদেরই শিক্ষা গ্রন্থের একটি পাতা বিশেষ। কিন্তু এ ক্ষেত্রে নিরীক্ষাধর্মী দৃষ্টি দ্বারা এ প্রশ্ন অবশ্যই দেখা দিতে পারে যে, এই নৈতিকতা শিক্ষাদানকারী ওস্তাদগণের মাঝে পরস্পর সম্পর্ক কি? এবং তাদের নৈতিক শিক্ষাক্রমের তারতীব কি কি বিধানের ওপর প্রতিষ্ঠিত? এবং তাদের সারা বিশ্বের সর্বশেষ ও প্রধান শিক্ষক রাসূল সা.-এর কি কি বৈশিষ্ট্য গুরুত্বপূর্ণ মর্যাদার অধিকারী? এ ব্যাপারে মুখ্য উদ্দেশ্যকে ব্যাখ্যা করে বলার প্রয়োজন আছে।
কারণ, লক্ষ করলে দেখা যায় যে, রাসূলে আকরাম সা.-এর পূর্ববর্তী নৈতিক শিক্ষকদের দু’টি শ্রেণী রয়েছে। তাদের একটি শ্রেণী নিজেদের শিক্ষার বুনিয়াদ পরজগতের ধর্মকর্মের ওপর প্রতিষ্ঠা করেছে। যেমন সাধারণভাবে নবী-রাসূলগণ ও কোনো কোনো ধর্মের প্রতিষ্ঠাতাগণ এ পথ বেছে নিয়েছিলেন। আর দ্বিতীয় শ্রেণী যারা নিজেদের দর্শন, বিজ্ঞান, প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিমত্তার ওপর শিক্ষার ইমারত দাঁড় করিয়েছিলেন। আমরা এই শ্রেণীদ্বয়ের প্রথমটিকে আম্বিয়া এবং ধর্মীয় সংস্কারক হিসেবে এবং দ্বিতীয়টিকে হুকামা বা দার্শনিক হিসেবে অভিহিত করতে পারি। এই উভয় শ্রেণীই নিজ নিজ শিক্ষা ও শিক্ষাদান পদ্ধতির পৃথক পৃথক তরীকা গ্রহণ করেছিলেন।
পয়গাম্বরগণ এবং ধর্মের প্রতিষ্ঠাতাগণ নিজেদের শিক্ষার উৎস আল্লাহর নির্দেশকে নির্ধারিত করেছিলেন। এই নির্দেশেও ফরমানে ইলাহী ছাড়া তাদের শিক্ষা ও তালীমের দ্বিতীয় কোনো বুনিয়াদ নেই। তাদের শিক্ষর মাঝে না কার্যকারণ সম্পর্কের তত্ত¡ানুসন্ধান জীবনধর্মী বৈশিষ্ট্যাবলির বিশ্লেষণ, নৈতিকতার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ ব্যবহারিক শক্তির সীমারেখা নির্দিষ্টকরণ সবকিছুই আছে। কিন্তু পর্যালোচনা ও অনুসন্ধিৎসার পূর্বে আমল বা ব্যবহারে দরজা ও মর্তবা শুধু রঙিন প্রলেপ বিশেষ। আর এতে মর্যাদা যদি থেকেও থাকে তা সামগ্রিকভাবে নমুনাবিহীন ও বিস্বাদ ছাড়া কিছুই নয়। তবে এই দু’টি লক্ষ্যমাত্রা অনুধাবন করতে হলে মনে রাখতে হবে যে, দুনিয়ার সর্বশেষ শিক্ষক রাসূলে পাক সা.-এর শিক্ষার মাঝে আল্লাহর নির্দেশাবলি এবং সূ² বিশ্লেষণ আছে। আরো আছে ঐশী নির্দেশ ও প্রাকৃতিক হুকুমের নির্যাস এবং কিতাব ও হিকমতের মধুর সংমিশ্রণ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।