পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্মরণকালের মহাব্যস্ততা চলছে দেশের প্রধান চট্টগ্রাম বন্দরে। আমদানি-রফতানিমুখী পণ্যবাহী জাহাজ এবং কন্টেইনারের যে আকস্মিক জট সৃষ্টি হয়েছে তা দ্রুত সময়ের মধ্যে সামাল দিতে চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ। এরজন্য দিনে-রাতে তিন শিফটে (২৪/৭) সারাক্ষণ কাজ চলছে। বন্দর সংশ্লিষ্ট শিপিং কোম্পানি, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, স্টিভিডোরস, সিএন্ডএফ, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার্স, পরিবহন এজেন্টস, ব্যংক-বীমা, গার্মেন্টসহ বন্দর কার্যক্রমের ওপর নির্ভরশীল বিভিন্ন খাত-উপখাতে এখন সমানতালে কর্মচাঞ্চল্য। বন্দর-শিপিংয়ের এই ব্যস্ততা অব্যাহত থাকবে পবিত্র ঈদের আগের দিন পর্যন্ত তথা রোজার মাসজুড়ে।
দুর্বল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ শেষ অবধি তেমন আঘাত না করলেও চট্টগ্রাম বন্দরে ৬ নম্বর বিপদ সঙ্কেত ঘোষণা করা হয়। এ কারণে গত ৩ ও ৪ মে চট্টগ্রাম বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম অচল হয়ে পড়ে। বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহের নিরাপত্তার লক্ষ্যে প্রতিটি জেটি-বার্থ ও বিশেষায়িত জেটিগুলো খালি করে দেয়া হয়। পণ্যভর্তি ও খালি জাহাজবহরকে বহিঃসমুদ্রে সরিয়ে নেয়া হয়।
বিপদ সঙ্কেত ঘোষণার পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্যসামগ্রী ওঠানামার জন্য জেটি-বার্থসমূহে এবং বহির্নোঙরে কাজ চলছিল মোট ১০২টি জাহাজে। তাছাড়া বিপদ সঙ্কেতের জেরে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বন্দরের কী গ্যান্ট্রি ক্রেন, আরটিজিসহ বিভিন্ন ধরনের মূল্যবান ভারী যান্ত্রিক সরঞ্জাম গুটিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়। বেসরকারি বন্দর ব্যবহারকারীরাও সবধরনের কাজ বন্ধ রাখে। থমকে যায় দেশের প্রধান বন্দর।
এ অবস্থায় ‘ফণি’র বিড়ম্বনার কারণে বন্দরে হঠাৎ করেই সৃষ্টি হয় কন্টেইনার এবং জাহাজজট। শতাধিক জাহাজের ভিড়ে বন্দরে দেখা দেয় বেসামাল জট। গত রোববারের পর বিপদ সঙ্কেত তুলে নিয়ে তা ৩ নম্বর সতর্ক সঙ্কেতে নামিয়ে নেয়া হয়। এরপরই বন্দরের জেটি-বার্থে ও বহির্নোঙরে জাহাজবহরে কাজকর্ম শুরু করা হয়। সেই সঙ্গে কন্টেইনারসহ পণ্যসামগ্রী খালাস, মজুদ, ডেলিভারি, পরিবহনের কাজ শুরু হয়। তখন থেকেই বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বন্দর ব্যবহারকারী তথা স্টেক হোল্ডারগণ ইতোমধ্যে সৃষ্ট পণ্যজট এবং জাহাজের জট সামাল দেয়ার জন্য রাতদিন চেষ্টা করে যাচ্ছে। শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও বন্দর-শিপিং সংশ্লিষ্ট সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সচল রেখে বন্দরকে জটমুক্ত করার প্রচেষ্টা চলছে। বর্তমানে বন্দর এলাকা ও আশপাশে কোনো জেটি এমনকি বিশেষায়িত জেটিগুলোও খালি নেই। রফতানি চালান শিপমেন্টের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ চলছে।
সেই সাথে চট্টগ্রাম বন্দরে রমজান মাসে দেশের নিত্য ও ভোগ্যপণ্যের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে অবিরত আসছে জাহাজে জাহাজে আমদানি চালান। বিশেষত রোজায় অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য যেমন- চিনি, ছোলা, খেজুর, মসুরসহ বিভিন্ন ধরনের ডাল, ভোজ্যতেল খালাস অব্যাহত রয়েছে। পুরোদমে ব্যস্ত প্রধান বন্দরে এখন দম ফেলার ফুরসত নেই। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে আমদানি-রফতানি পণ্যসামগ্রী খালাস ও শিপমেন্টের ডকুমেন্ট দাখিল এবং প্রসেস হচ্ছে আগের চেয়ে বেশিহারে। জট নিরসনে হিমশিম অবস্থায় পড়েছে বন্দর, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তবে কর্তৃপক্ষ আশাবাদী আগামী সপ্তাহের মধ্যে জটের উন্নতি হবে।
এদিকে মাহে রমজান শুরু হতেই চট্টগ্রাম বন্দরে রোজার মাসে অতিপ্রয়োজনীয় নিত্য ও ভোগ্যপণ্য খালাস, ডেলিভারি, পরিবহন কাজের তোড়জোড় বেড়ে গেছে। বহির্নোঙরে মাদার ভেসেলগুলো থেকে এবং সদরঘাট, বাংলাবাজার লাইটারেজ জেটি-ঘাটে হরেক ধরনের পণ্য খালাস ও পরিবহন কাজ চলছে। বৃহত্তর ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় চাহিদা অনুযায়ী সড়ক ও নৌপথে নিত্যপণ্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ মুহূর্তে প্রায় সাড়ে ৪শ’ লাইটারেজ কার্গোজাহাজ, কোস্টার ভাসছে রোজার পণ্যসামগ্রী বোঝাই অবস্থায়। গুদাম, ইয়ার্ড-শেড, ওয়্যার হাউসগুলোতে মালামাল মজুদ ও স্থানান্তর কাজ চলছে।
বর্তমানে বন্দর, বহির্নোঙরে পণ্য খালাস কাজের চাপের পাশাপাশি আগামী দুই সপ্তাহের সিডিউল অনুযায়ী আরও ৪০টি দেশি-বিদেশি বড় জাহাজে আমদানি পণ্যসামগ্রী খালাস করা হবে। চলতি মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে পূর্ববর্তী ৪ মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে রোজায় সাহরী ও ইফতারের অতিপ্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য যেমন- চিনি, ছোলা, খেজুর, বিভিন্ন ধরনের ডাল, ভোজ্যতেল আমদানি ও খালাস করা হয়েছে। যা চাহিদার বিপরীতে পর্যাপ্ত পরিমান। গুদাম-আড়তগুলোতেও পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। চিটাগাং চেম্বার নেতৃবৃন্দ, আমদানিকারক, পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, পুরো রোজার মাসে কোনো খাদ্যপণ্যের ঘাটতির কারণ নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।