রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
এক সময়ের জোয়ার-ভাটা খেলা করা মীরসরাই উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত অধিকাংশ খাল আজ প্রানহীন এক একটি বর্জ্য স্তূপের নর্দমা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের রূপ বৈচিত্র্য খালগুলো এখন মীরসরাইবাসীর দুঃখের কারণ হিসেবে পরিণত হচ্ছে। খালের দু’ধারে দখল করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসা-বাড়ি, দোকানপাট গড়ে ওঠা এবং বাজার ও বসতবাড়ির বর্জ্য ফেলার কারণে এক সময়ের প্রবাহমান খালগুলো আজ অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে। কয়েকটি খালের পানি প্রবাহিত না হওয়ায় এবং বর্জ্যের স্তূপের কারণে খালের পঁচাপানি দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ফলে এই খালগুলো পরিবেশ দূষণের জন্য অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মীরসরাই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় অধিকাংশ খাল আজ মৃতপ্রায়। বছরের পর বছর ধরে এই খালগুলো খনন না করায় খালে বর্জ্য আবর্জনায় প্রায় ভরাট হয়ে গেছে। স্থানীয়রা খাল পাড়ের জমিতে বসতবাড়ি নির্মাণের ফলে খালগুলো সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। বিলীন হয়ে যাচ্ছে খালের গভীরতা। দুই পাড়ের অবস্থা সঙ্কুচিত। খালপাড়ে বন-জঙ্গলে একাকার হয়ে আছে।
চলতি বর্ষায় এবারও ভারী বৃষ্টিতে খালগুলোর পানি উপচে পড়ে স্থানীয় জনপদে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন পরিবেশ বিশ্লেষকরা। উপজেলার ১নং করেরহাট থেকে ১৬ নং সাহেরখালী পর্যন্ত পুরো এলাকা জুড়ে অসংখ্য খাল ও ছড়া রয়েছে। যার অধিকাংশ এখন মৃত প্রায়। মীরসরাইয়ের অন্যতম একটি শান্তিরহাট হয়ে বয়ে যাওয়া খালটির একসময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। যেখানে ব্যবসয়ীরা প্রতিদিন নিত্যনতুন পণ্য নিয়ে ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে করে পন্য সামগ্রী এনে স্থানীয় শান্তিরহাট বাজারে বিকিকিনি করতো। এখানে কোন ইঞ্জিন চালিত ট্রলার আসে না। কারণ একেতো ব্যবসা মন্দা এবং খাল সঙ্কুচিত হওয়ার ফলে ট্রলার চলাচলের উপযুক্ত জায়গা নেই। জোরারগঞ্জ থেকে ইছামতি হয়ে বয়ে যাওয়া খালটির করুন দশা। বিশেষ করে খালপাড়ের জমিতে সম্প্রতি মানুষ তাদের বসতি করার ফলে খালের পাড়ের একাংশ নিয়ে তারা দেয়াল নির্মাণ করছেন ইচ্ছে মতো। এর ফলে খাল খননের সময় খাল পাড়ে মাটি রাখার কিংবা খাল সম্প্রসারনের কোন ব্যবস্থা থাকবে না।
এছাড়াও স্থানীয়দের ময়লা আবর্জনা ফেলে খাল ভরাট ও পরিবেশ দুষন করলেও স্থানীয় প্রশাসনের কোন নজরদারিতা নেই। বিষুমিয়ারহাট থেকে নাহেরপুরের দিকে বয়ে যাওয়া ছোট ছড়াটি প্রায় মৃত। করেরহাট এলাকায় বারইয়ারহাট-করেরহাট সড়কে বেইলি ব্রিজ নির্মাণ ও খালের ওপর বাঁধ দেয়ায় এবং খালের সামান্য অংশ খোলা রাখায় এবার বর্ষায় পাহাড়ি ঢলের পানি চলাচল না হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। ফলে ওই এলাকায় অধিকাংশ ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে যাবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। করেরহাট বাজারে সামান্য বৃষ্টি এলেই হাটু পানি। গত বছর বাজারের বিশাল অংশে বছর জুড়ে দুর্ভোগ পোহায় সকলে। সর্বোপরী পুরো উপজেলা জুড়ে অবস্থিত অধিকাংশ খাল ও ছড়া দখল আর দুষণের ফলে মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। আবু তোরাব, বামন সুন্দর, খৈয়া ছড়া, গোভানিয়া, হিঙ্গুলী খালেরও একই দশা। একদিকে খনন না করার ফলে অধিকাংশ খাল সঙ্কুচিত হচ্ছে।
অপর দিকে ময়লা আবর্জনার ভাগাড়। তার উপর দখলদারদের আগ্রাসন। এ থেকে উত্তোরনের ব্যবস্থা না করলে প্রতি বছর বর্ষা এলেই পাহাড়ি ঢলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি বাড়ছে।
এ বিষয়ে মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, ‘আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে খাল খননের বিষয়ে কথা বলবো। খালের পাড় দখল এবং ময়লা ফেলে পরিবেশ দূষনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ফেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।