Inqilab Logo

শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি রক্ষার স্বীকৃতি পেল ২৪ কারখানা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিভিন্ন সেক্টরের ২৪টি কারখানাকে ‘পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি উত্তম চর্চা পুরস্কার’ প্রদান করেছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এ বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করেছে। রোববার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০১৯’-উপলক্ষে রাজধানীর কেআইবি মিলনায়তনে আলোচনা সভায় এই পুরস্কার হস্তান্তর করা হয়।
২৪ টি কারখানার মধ্যে বিকেএমই-এ সদস্যভুক্ত ৫টি পোশাক কারখানা হলো- প্লামি ফ্যাশনস লিঃ, উইজডম অ্যাটায়ার্স লিঃ, নাফিসা অ্যাপারেলস লিঃ, মাদার কালার লিঃ, ফতুল্লা অ্যাপারেলস এবং বিজিএমইএ এর সদস্যভুক্ত ৭টি পোশাক কারখানা হলো: কমফিট কম্পোজিট নীট লিঃ, লায়লা স্টাইলস লিঃ, ইপিলিয়ন স্টাইল লিঃ, ইকোফ্যাব লিঃ, অনন্ত গার্মেন্টস লিঃ, ক্রাউন ওয়্যারস প্রাইভেট লিঃ, জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স লিঃ।
ফার্মাসিউটিক্যালস সেক্টরের ৩টি কারখানা হলো- স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ, সানোফি বাংলাদেশ লিঃ এবং চামড়াজাত পণ্য প্রস্তুতকারী ৩টি কারখানা হলো: ম্যাফ সুজ লিঃ, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিঃ, পিকার্ড বাংলাদেশ লিঃ।
চা শিল্প সেক্টরের ৩টি কারখানা হলো- জেরিন প্লান্টেশন লিঃ, মধুপুর টি এস্টেট, শমসেরনগর চা বাগান এবং ৩টি জুট শিল্প কারখানা হলো: জনতা জুট মিলস লিঃ, ওহাব জুট মিলস লিঃ, নর্দার্ন জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিঃ।
উল্লেখ্য, কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা সম্পর্কে দেশব্যাপী সচেতনতার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে বাংলাদেশে চতুর্থবারের মতো আজ ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০১৯’ পালিত হয়েছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘নিরাপদ কর্মপরিবেশ, টেকসই উন্নয়নের পথে বাংলাদেশ’।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে টিপু মুনশি বলেন, পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি আমাদের সবার লক্ষ্য হওয়া উচিত। শ্রমিকদের দেখভাল না করলে শ্রমিকরা কীভাবে কাজ করবে?।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, বক্তব্যে বলেন, কর্মক্ষেত্রে সেইফটি নিশ্চিত করার জন্য শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীন দুই অধিদপ্তর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম অধিদপ্তর নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব উম্মুল হাসনা তাঁর বক্তব্যে পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি উত্তম চর্চার তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ব্যবসার উৎপাদনশীলতা নির্ভর করে কারিগরি উদ্ভাবন, দক্ষ কর্মীবাহিনী এবং নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশের উপর। কর্মীবাহিনীর কল্যাণ সাধনে ব্যবসায় সম্প্রদায়কে অনুপ্রাণিত করার জন্য আমাদের মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালে পেশাগত সেইফটি ও স্বাস্থ্য উত্তম চর্চা পুরস্কার প্রবর্তন করে।
বাংলাদেশে কলকারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও সেইফটি কমপ্লায়েন্স তদারকি করে থাকে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডাইফ)। ডাইফের মহাপরিদর্শক জনাব শিবনাথ রায় এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে পুরস্কার প্রাপ্তদের অভিনন্দিত করে বলেন, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে আমাদেরকে অবশ্যই নিরাপদ ও উন্নত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পউটিয়াইনেন বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে সেইফটি সংস্কৃতি গড়ে তোলার অব্যাহত প্রচেষ্টার জন্য বাংলাদেশ সরকার, ডাইফ, মালিক ও শ্রমিক সংস্থাসমূহ, ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সাধুবাদ জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প ক্রমাগত জেনে এসেছে কীভাবে এই শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের শিল্প দুর্ঘটনা ও মন্দ কর্মপরিবেশ থেকে রক্ষা করতে হয়। এসব শিক্ষা সকল শিল্প সেক্টরে প্রয়োগের সময় এসেছে। আর কর্মক্ষেত্রে সেইফটি ও স্বাস্থ্যের সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য যেকোনো নতুন উদ্যোগকে সমর্থন করতে আইএলও প্রস্তুত। উন্নয়ন সহযোগীদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডের হাই কমিশনার মান্যবর হ্যারি ভারওয়েজ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, পেশাগত সেইফটি ও স্বাস্থ্য উন্নয়নে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সাথে কাজ করে যাচ্ছি, একই সাথে আমরা আমাদের দেশের ব্রাান্ড ও ক্রেতাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যাতে তারা পণ্য ক্রয়ে আরো দায়িত্বশীল হন এবং বাংলাদেশের কারখানাসমূহে কর্মপরিবেশ উন্নয়নে সহযোগিতা প্রদান করেন।
শ্রমিক প্রতিনিধিদের পক্ষে শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব ফজলুল হক মন্টু বলেন, সেইফটি ও স্বাস্থ্য সুবিধাদি প্রত্যেক শ্রমিকের অধিকার। বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ)-এর প্রেসিডেন্ট কামরান টি রহমান বলেন, স্বাস্থ্যবান কর্মী অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে আর সেজন্যই শ্রমিকের অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করা ব্যবসার জন্য সুফলদায়ক।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-এর প্রেসিডেন্ট রুবানা হক পেশাগত সেইফটি ও স্বাস্থ্য উন্নয়নে বিজিএমই এর কাজকে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমাদের দেশে গ্রিন ফ্যাক্টরি সবচেয়ে বেশি কিন্তু আমরা পোশাকের গ্রীন (ন্যায্য) মূল্য পাচ্ছি না। আমাদের দেশের শ্রমিকদের অসংখ্য সাকসেস স্টোরি আছে। এগুলো সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিতে হবে।
বাংলাদেশ নীটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ)-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনসুর আহমদ বলেন, আমাদের কারখানাসমূহকে নিরাপদ করা গেলে আরো বেশি ক্রেতা আমাদের প্রতি আগ্রহী হবে এবং বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের সুনাম গোটা বিশ্বে বাড়বে। আলোচনা সভায় অন্যানের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধি এবং দেশি-বিদেশি দাতাসংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কারখানা

২৩ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ