Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চাল উৎপাদন বাড়ায় আমদানি কমছে দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। চালের উৎপাদন বাড়ায় আমদানি কমছে। এছাড়া টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে আমদানিতে ভাটা পড়েছে। যে কারণে আমদানির ক্ষেত্রে হঠাৎ স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। গত ফেব্রæয়ারি মাসে আমদানিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অন্যদিকে মার্চ মাসে রফতানি আয়েও নেতিবাচক ধারা লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ফেব্রæয়ারিতে ৩৩৮ কোটি ৩২ লাখ ডলার রফতানি আয় হলেও মার্চে রফতানি আয় হয়েছে ৩৩৪ কোটি ২ লাখ ডলার। এছাড়া গত জানুয়ারিতে পণ্য আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৬১২ কোটি আট লাখ ডলার। ফেব্রæয়ারিতে আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৪৭০ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। অর্থাৎ এক মাসে আমদানি ব্যয় কমেছে ১৪১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ২০১৮ সালের ফেব্রæয়ারি মাসের তুলনায় ২০১৯ সালের ফেব্রæয়ারিতে আমদানি ব্যয় কমেছে ছয় দশমিক ২৮ শতাংশ। ২০১৮ সালের ফেব্রæয়ারিতে আমদানি ব্যয় হয় ৫০১ কোটি ৯১ লাখ ডলার। ২০১৯ সালের ফেব্রæয়ারিতে আমদানি ব্যয় হয়েছে ৪৭০ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। যদিও ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে পণ্য আমদানিতে ব্যয় হয়েছিল ৫২৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে চাল ও গম আমদানি কমেছে। এই অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত আট মাসে চাল ও গম আমদানির জন্য লেটার অব ক্রেডিট বা এলসি খোলার পরিমাণ কমেছে ৬৬ শতাংশ। এমনকি শিল্পের জন্য ক্যাপিটাল মেশিনারির এলসি খোলার পরিমাণ কমেছে ২৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, এই সময়ে সার্বিক এলসি খোলার পরিমাণ কমেছে ২১ দশমিক ৭৭ শতাংশ। অবশ্য এ সময়ে এলসি নিষ্পত্তি বেড়েছে ৯ দশমিক ০৪ শতাংশ।
চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। চালের উৎপাদন বাড়ায় আমদানি কমছে। তবে ২০১৭ সালে শূন্য শুল্কের সুবিধা নিয়ে ব্যবসায়ীরা প্রচুর চাল আমদানি করে মজুত রেখেছেন। পর্যাপ্ত মজুত থাকায় এখন তারা চাল আমদানি করছেন না। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে আমদানিতে ভাটা পড়েছে। ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানিতে বেশি অর্থ খরচ হয়। ফলে অনেকেই আমদানিতে অনুৎসাহিত হন। তবে আগে খাদ্য আমদানি বেশি করার কারণে বর্তমানে খাদ্য আমদানি করতে হচ্ছে না। এছাড়া, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আগের মতো আমদানি করতে হচ্ছে না। এ কারণেও আমদানিতে ব্যয় কমে গেছে।
প্রসঙ্গত, জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পণ্য আমদানি ও রফতানিতে যে স্থবিরতা ছিল তা অনেকটাই কেটে গিয়েছিল। গত জানুয়ারি মাসে আমদানি ব্যয় বেড়েছিল ১৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ। একইভাবে ফেব্রæয়ারিতে রফতানি আয় বাড়ে ১০ দশমিক ১২ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের শেষ মাস অর্থাৎ ২০১৮ সালের জুনে রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল মাইনাস তিন দশমিক ০৯ শতাংশ। একইভাবে ২০১৮ সালের মার্চ মাসেও রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল মাইনাস এক দশমিক ৩৮ শতাংশ। গত ডিসেম্বর মাসে পণ্য রফতানি থেকে আগের বছরের একই মাসের তুলনায় মাত্র দুই দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি অর্থ দেশে এসেছে।২০১৮-১৯ অর্থবছরে পণ্য রফতানি করে ৩৯ বিলিয়ন (তিন হাজার ৯০০ কোটি) ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) বিভিন্ন পণ্য রফতানি থেকে বাংলাদেশ আয় করেছে তিন হাজার ৯০ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এই অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেশি।
এদিকে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য মতে, এই অর্থবছরের (জুলাই-মার্চ) নয় মাসে মোট রফতানি আয়ে তৈরি পোশাক খাতের অবদান ৮৩ শতাংশ। এই সময়ে তৈরি পোশাক খাতের রফতানি আয় এসেছে দুই হাজার ৫৯৫ কোটি ১৪ লাখ ডলার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ