Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

‘উগ্রবাদীরা অনুপ্রাণিত হতে পারে’শ্রীলঙ্কায় সিরিজ বোমা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম


 শ্রীলঙ্কায় সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ ও বিশ্বজুড়ে ঝিমিয়ে পড়া উগ্রবাদীরা অনুপ্রাণিত হতে পারে। তবে বাংলাদেশে সুসংগঠিতভাবে কোনো ধরনের হামলার সক্ষমতা তাদের নেই। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘মিট উইথ মনিরুল ইসলাম’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনটের প্রধান ডিআইজি মনিরুল ইসলাম এ সব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব)।
জঙ্গি সংগঠন আইএস থেকে নিজ নিজ দেশে ফিরতে চাইছেন অনেকেই। বাংলাদেশিরা ফিরতে চাইলে তাদের ফেরত নেয়া হবে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান বলেন, কেউ যদি ফিরতে চায়, তাদের বিষয়ে আইনগত দিক দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, এক দেশের ঘটনায় অন্য দেশের সন্ত্রাসীরা উৎসাহী হয় এবং অনুকরণ করার চেষ্টা করে। হলি আর্টিসানে হামলার পর ইন্দোনেশিয়ার একটি গোষ্ঠী উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের মধ্যে প্রচারণা চালিয়েছিল। সর্বশেষ নিউজিল্যান্ডে হামলার পর কিছু গোষ্ঠী তাদের নিজেদের চ্যানেলগুলোতে খ্রিস্টান বা ইহুদি বিরোধী প্রচারণায় তৎপর হতে দেখা গেছে। শ্রীলঙ্কায় হামলার ঘটনায়ও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে উগ্রবাদীদের অনুপ্রাণিত করতে পারে। দেশে কারো কারো মনে আসতে পারে-আমরা কিছু করব। কিন্তু বাংলাদেশে কারো পক্ষে এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর সাংগঠনিক সক্ষমতা নেই। যারা আছে তারা বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। ভবিষ্যতেও যেন কোনো গোষ্ঠী প্রস্তুতি নিয়ে কোনো ধরনের নাশকতা চালাতে না পারে এমন তৎপরতার কথাও জানান তিনি।
তিনি বলেন, হলি আর্টিসানে হামলার পর বিভিন্ন দেশ ভেবেছে আমরা ঠেকাতে পারব না। কিন্তু সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি এবং সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতায় জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। তবে নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গিবাদ যেহেতু একটা মতবাদ, তাই কেউ না কেউ এই মতাদর্শের থেকেই যায়। যারা এই মতবাদের তাদের অনেককেই ইতোমধ্যে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া অনেকে নজরদারিতে রয়েছে।
তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কায় দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গৃহযুদ্ধ ছিল। লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলমের (এলটিটিই) নামে একটি আত্মঘাতী বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রæপ তৎপর ছিল সেখানে। গতবছর সর্বশেষ শ্রীলঙ্কায় যে দাঙ্গাটি হয়েছিল, সেটি বৌদ্ধ এবং মুসলমানদের মধ্যে। এছাড়া এলটিটিই কখনও কোনো ধর্মীয় গোষ্ঠীকে টার্গেট করে হামলা চালায়নি। তাদের টার্গেট গভর্নেন্স মেকানিজমে যারা রয়েছে তারা। কিন্তু শ্রীলঙ্কার গির্জা এবং হোটেলে যে হামলাটি হয়েছে, এটি নিঃসন্দেহে সন্ত্রাসবাদ।
মনিরুল ইসলাম বলেন, মূলত ২০১৪ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশ থেকে আইএসে যোগদান করে অনেকে। আমাদের ধারণা মতে, তাদের কেউ ধরা পড়েছে, কেউ নিহত হয়েছে অথবা কেউ চিহ্নিত হয়েছে। তারা (বর্তমানে আইএসে থাকারা) যদি এখন দেশে ফিরতে চায়, তাহলে তাদের অবশ্যই এয়ারক্রাফট দিয়ে দেশে ফিরতে হবে। এর জন্য তাদের পাসপোর্ট লাগবে। যেহেতু তারা ২০১৪ সালের শেষের দিকে গিয়েছিল, তাদের পাসপোর্ট মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার কথা। দেশে ফিরতে হলে তাদের নতুন করে পাসপোর্টের আবেদন করতে হবে। আমরা সিরিয়াসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে যখন পাসপোর্ট আবেদন পাচ্ছি সেগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে যাচাই-বাছাই করে পাসপোর্ট দিচ্ছি। তাই আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশে আসা সম্ভব নয়। তাছাড়া কেউ যদি ফিরে আসতে চায়, তাহলে আইনগত দিক বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স¤প্রতি আইএস’র একটি ভিডিওতে বাংলাদেশে খলিফা নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আইএস’র নিজস্ব দাবি। বাংলাদেশে তাদের কোনো খলিফা নেই। রোহিঙ্গাদের জঙ্গিবাদে জড়ানোর সম্ভাবনার বিষয়ে সিটিটিসি বিভাগের প্রধান বলেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। তারা দীর্ঘদিন এ দেশে থাকলে সোশ্যাল ডিজঅর্ডারসহ নানা কর্মকাÐে জড়িয়ে যেতে পারে। তারা ভবিষ্যতে উগ্রবাদে জড়িয়ে পড়তে পারে। তবে দেশের সব গোয়েন্দা সংস্থা তাদের নজরদারিতে রেখেছে। অনুষ্ঠানে ক্র্যাবের সভাপতি আবুল খায়ের, সাধারণ সম্পাদক দীপু সারওয়ার, ডিএমপি মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসি মাসুদুর রহমানসহ ক্র্যাব সদস্য ও সিটিটিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ