Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেপরোয়া বাসে পিষ্ট ২ জন

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম


রাজধানীর মৎস্য ভবন সংলগ্ন সড়কে বেপরোয়া পাল্লা দিতে গিয়ে বাসের নিচে পিস্ট হয়ে দুই জনের করুন মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনায় এক স্কুল শিক্ষার্থীসহ আহত হয়েছেন আরো ৩জন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম সুমন(২৫)। রিকশা চালক সুমন টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ি থানার রনগুাপাড়া গ্রামের আবদুর রহিম ও বানেছা বেগমের ছেলে। নিহত অপর পুরুষের বয়স আনুমানিক ৬০। আহতরা হলেন- শরীফ (২০), নুর আলম (৩০) ও স্কুল ছাত্র আয়াত (১২)। বেপরোয়া গতির বাসটি ধাক্কা দিয়ে বাস, রিকশা ও প্রাইভেটকারসহ অন্তত ৬টি গাড়ি দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে স্বাধীন পরিবহনের চালক মো. নজরুল ইসলামকে (৪৩) গ্রেফতার করে পুলিশ। বাসসহ কয়েকটি গাড়ি আটক করা হয়েছে। রমনা থানার (ওসি-তদন্ত) জহিরুল ইসলাম জানান, সকাল ৭টার দিকে মৎস্য ভবন সংলগ্ন সড়ক খালি পেয়ে পাল্লাপালি­ শুরু করে ৬টি গাড়ি। এর মধ্যে রয়েছে প্রাইভেটকারও। এ সময় গাড়িচাপায় দুইজনের মৃত্যু হয়। আহত হন তিনজন। গাড়িগুলো জব্ধ করে থানায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে একটি স্বাধীন পরিবহনের (মিরপুর-মাওয়া রুটে চলাচল করে) বাস রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানিয়েছেন, গতকাল সকাল সোয়া ৭টার দিকে স্বাধীন পরিবহনের বাসটি গুলিস্থানের দিকে যাচ্ছিল। দ্রæত গতিতে মৎস ভবন মোড় ঘোরার সময় সেটি সামনে থাকা পরমাণু শক্তি কমিশনের আরেকটি বাসকে ধাক্কা দেয়। পাল্লাপাল্লির সময় সেই বাসটি সামনে একটি রিকশাকে ধাক্কা দেয়। এক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্বাধীন পরিবহনের বাসটি অপর একটি রিকশাকে চাপা দিলে চালক ও আরোহী গুরতর আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দুর্ঘটনায় পড়া বাসসহ অপর বাহনগুলো সরিয়ে নেয়। এবং গুরুতর আহত চারজনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষনা করেন। পরে মো. সুমন নামে একজনের পরিচয় শনাক্ত হলেও নিহত অপরজনের পরিচয় মেলেনি। অজ্ঞাত পরিচয়ের ওই ব্যাক্রি আনুমানিক বয়স ৬০ বছর।
আহতদের উদ্ধারকারী ও প্রত্যক্ষদর্শী মনির হোসেন জানান, তিনি স্বাধীন পরিবহনের বাসের পেছনের দিকের সিটে ছিলেন। মৎস ভবন মোড় ঘোরার সময়ে হঠাৎ করে অন্য একটি বাসকে ধাক্কা দেয়। এরপরও বাসটি থামেনি। একটি প্রাইভেটকার ও রিকশায় ধাক্কা দিয়ে বাসটি ফুটপাতে ধাক্কা খায়। এতে ভেতরে থাকা যাত্রীরা সামান্য আহত হলেও একটি রিকশা থাকায় যাত্রী ও চালক একেবারেই পিস্ট হয়ে যায়। মনির আরো বলেন, স্বাধীন পরিবহনের বাসটি ফুটপাতে ধাক্কা খেয়ে থামার পর তিনিসহ কয়েকজন আহতদের উদ্ধার করেন। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা আসেন।
অপর দিকে ঢামেক সূত্র জানায়, এ দূর্ঘটনার খবর পেয়ে সুমনের স্ত্রী শান্তা আক্তার, মা বানেছা বেগম ও বোন জেসমিন আক্তার দুপুরের দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে গিয়ে সুমনের লাশ শনাক্ত করেন। দুপুরের দিকে তারা টিভিতে খবর দেখে নিশ্চিত হন বাসের চাপায় সুমন মারা গেছে। তিনি দায়ী বাস চালকের ফাঁসি দাবি করেন।
নিহত সুমনের স্ত্রী শান্তা আক্তার বলেন, সুমন ভোর ছয়টার দিকে শাহজাহানপুরের বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন রিকশা নিয়ে। ২০১১ সালে তাদের বিয়ে হয়। সংসারে শেফায়েত ও শাহাদাত নামে চার ও পাঁচ বছরের দুইটি শিশুসন্তান রয়েছে। সুমনই ছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। মাত্র তিন হাজার টাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন তারা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ