পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামে অব্যাহত খুনোখুনিসহ অপরাধ দমনে হার্ডলাইনে পুলিশ। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে সাঁড়াশি অভিযান। এ অভিযানে মাত্র আট ঘণ্টার মাথায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীর মৃত্যুতে আতঙ্কে সন্ত্রাসীরা। আন্ডারওয়ার্ল্ডের বাসিন্দারা এখন জীবন বাঁচাতে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে। হঠাৎ করেই নগরীতে খুন, চাঁদাবাজির ঘটনা বেড়ে যায়। চলতি মাসের গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত মহানগর এবং জেলায় ২০টি খুনের ঘটনা ঘটে। চাঁদা না দেওয়ায় এক ব্যবসায়ীকে ড্রিল মেশিনে পা ছিদ্র করে দেয় চাঁদাবাজরা। বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ বেড়ে যায় ডাকাত ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য।
পরিস্থিতি সামাল দিতে মাঠে নামে পুলিশ। সোমবার বিকেলে নগরীর আছদগঞ্জে পুলিশের সাথে গোলাগুলিতে মারা যায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ওয়াসিম। এ ঘটনার আট ঘণ্টার মধ্যে নগরীর আগ্রাবাদে কথিত অপর এক বন্দুকযুদ্ধে প্রাণ হারায় আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী। জাবেদ নামে তালিকাভুক্ত এ সন্ত্রাসী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন সোহেল হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। পুলিশ জানায়, সে তালিকাভুক্ত ছিনতাই ও ডাকাত দলের সদস্য, ভাড়াটে খুনি। পুলিশের এক কর্মকর্তার বাসা থেকে ডাকাতি করে নিয়ে যাওয়া অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে তার কাছ থেকে।
তার আগে নগরীর বাকলিয়া থানার কল্পলোক আবাসিক এলাকায় পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যায় যুবলীগ ক্যাডার মো. সাইফুল। গত কয়েকদিনে বন্দুকযুদ্ধে নিহত এ তিনজনই যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ করতেন। এদের করুণ পরিণতির পর সরকারি দলের অঙ্গ সংগঠনের নামধারী সন্ত্রাসীরাও শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। চলতি মাসেই চট্টগ্রামে র্যাব-পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ প্রাণ হারিয়েছেন চার শীর্ষ সন্ত্রাসী। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে। তারা পুলিশের উপর গুলি ছুঁড়লে পুলিশ নিরব থাকবে না। সন্ত্রাসীদের দমনে পুলিশ বাহিনীও সর্বশক্তি নিয়োগ করবে।
সর্বশেষ সোমবার রাতে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যান সন্ত্রাসী মো. জাবেদ। নগরীর জাম্বুরি মাঠ এলাকায় মধ্যরাতে পুলিশের সাথে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এ সময় ডবলমুরিং থানার ওসি সদীপ দাশসহ আহত হয়েছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। বন্দুকযুদ্ধে পুলিশ ১৭ রাউন্ড গুলি করার কথা স্বীকার করেছে। নিহত মো. জাবেদ (২২) সোহেল হত্যা মামলার আসামি কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা মো. সাবের আহম্মেদের ঘনিষ্ঠ।
পুলিশের ডবলমুরিং জোনের এসি আশিক বলেন, একদল লোক ডাকাতির উদ্দেশে ওই এলাকায় জড়ো হয়েছে খবর পেয়ে পুলিশ অভিযানে যায়। তারা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি করে, পুলিশও তখন পাল্টা গুলি চালায়। কিছুক্ষণ পর গোলাগুলি থামলে সেখানে জাবেদকে গুলিবিদ্ধ পড়ে থাকতে দেখা যায়। চমেক হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় থানার ওসি সদীপ কুমারসহ তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
ঘটনাস্থল থেকে একটি চায়নিজ পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন, ছয়টি বুলেট, দুটি এলজি, ১৩ রাউন্ড গুলি ও ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। থানার ওসি সদীপ কুমার দাশ বলেন, ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন সোহেলকে গণপিটুনি দেওয়ার সময় জাবেদ ছুরি মেরে মৃত্যু নিশ্চিত করেছিল, ভিডিও ফুটেজে সেটা দেখা গেছে। পাহাড়তলী রেলওয়ে বাজারে হয়ে গত ৭ জানুয়ারি সকালে মহিউদ্দিন সোহেলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। সোহেলের ভাই শাকিরুল ইসলাম শিশির ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
নিহত মো. জাবেদ হোসেন (২১) কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থানার দয়ার বাড়ি গ্রামের মো. ইউসুফের পুত্র। পুলিশের দাবি, সে একজন পেশাদার অস্ত্রধারী ডাকাত, ছিনতাইকারী, ভাড়াটে খুনি। ইতোমধ্যে সে বেশ কয়েকটি ঘটনায় ভাড়ায় মানুষ খুন করে। গত বছরের ৫ মে নগরীর সদরঘাট থানায় কর্মরত এসআই সোহরাব হোসেনের খুলশীর ভাড়া বাসা থেকে তার নামে ইস্যুকৃত ৭.৬২ এমএম পিস্তল ও ১৬ রাউন্ড গুলি চুরি করে সে। বন্দুকযুদ্ধের পর তার কাছ থেকে ওই অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে।
তার আগে নগরীর আছদগঞ্জ শুটকিপট্টি কলাবাগিচায় পুলিশের সাথে গোলাগুলিতে শীর্ষ সন্ত্রাসী মো. ওয়াসিম মারা যায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন ছয় পুলিশ। পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ওয়াসিমের বিরুদ্ধে ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও ভূমি দখলের অভিযোগে ১৪টি মামলা রয়েছে। পুলিশ জানায়, ওয়াসিম ও তার সহযোগীরা খাল দখল করে ঘর তৈরি করেছে, যেটি তারা আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করে। ওই আস্তানা থেকে এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ পরিচালনা করত তারা। ওয়াসিম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এলাকায় জমি দখলেরও অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করছিল তারা।
গত ৯ এপ্রিল নগরীর কল্পলোক আবাসিক এলাকায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে মারা যায় যুবলীগ ক্যাডার মো. সাইফুল। পুলিশ জানায়, নগরীর বাকলিয়া খালপাড় এলাকায় বাহিনী গঠন করে নানা অপকর্ম করত সে। তার দুই দিন আগে গোলপাহাড় এলাকার অপর যুবলীগ ক্যাডার লোকমান হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে সে। এ হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি হিসেবে ফটিকছড়ি থেকে গ্রেফতারের পর খুনের দায়ও স্বীকার করে সাইফুল। এরপর বন্দুকযুদ্ধে তার মৃত্যু হয়। গত ১০ এপ্রিল বাঁশখালীর ছনুয়ায় র্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে মারা যায় শীর্ষ নৌদস্যু দেলোয়ার হোসেন। সেখান থেকে র্যাব সদস্যরা একটি বিদেশী পিস্তলসহ তিনটি বন্দুক ও ১৪৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।