বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ফেনীর পরশুরামের সুবার বাজার ফাজিল মাদরাসায় এক খন্ডকালিন শিক্ষকের মারধরে ৮ম শ্রেণির ছাত্রী আহত হয়ে পড়লে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আহত ছাত্রী ও তার পরিবারের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের মনিপুর গ্রামের সিএনজি চালক মো. ভুট্টু ও শিরিনা আক্তারের মেয়ে আছমা আক্তার সুবার বাজার ফাজিল মাদরাসার দাখিল ৮ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত রয়েছে।
পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনের ২য় তলার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ৪ নম্বর কেবিনে শুয়ে তার উপর খন্ডকালিন শিক্ষক জহিরুল ইসলাম দুলালের নির্দয় নির্যাতনের বিষয়টির বর্ণনা দিলেন আছমা আক্তার। প্রতিদিনের মতো গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার সময় ৮ম শ্রেণির গণিতের ক্লাস চলছিল। আছমাকে দেখেই শিক্ষক দুলাল বলে উঠে “তোকেইতো আমি খুঁজছি”। একথা বলে কয়েকটি বেত নিয়ে তাকে এলোপাথাড়ি মাথায়, পিঠে, কাঁধে, কোমরে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারতে থাকেন।
মারধরের একপর্যায়ে আছমা জ্ঞান হারালে তার বাবাকে খবর দেওয়া হয়। আছমার বাবা আহতাবস্থায় মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে মেয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আছমা আরো জানায়, দুলালের কাছে যেসব ছাত্রীরা প্রাইভেট পড়ে না তাদেরকেই চিহ্নিত করে মারধর করা হয়। এসএসসি পাশ করা খন্ডকালিন শিক্ষক দুলালের প্রাইভেট চার্জ আড়াই হাজার টাকা। তাই দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হওয়ায় আছমার পক্ষে এত টাকা দিয়ে প্রাইভেট পড়া সম্ভব হয় না। গত ২ দিন ধরে সে সূত্র না জানার বাহানা দিয়ে ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীদের বেত্রাঘাত করে আসছিল।
আছমার মা শিরিনা ও বাবা ভুট্টু জানান, মেয়েকে মারধরের কথা জিজ্ঞাসা করা হলে দুলাল তাদের গালাগাল করে তেড়ে মারতে আসেন। তারা বিষয়টি অধ্যক্ষকে অবহিত করে। পরে মেয়েটিকে পরশুরাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হাসপাতালে ভর্তি করেন। আছমার বাবা মা জানান, বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ভুট্টু ও তার বাবা হাজী মোস্তফাকে জানানোর পর তারা সমাধান করে দিবে বলে থানায় মামলা করতে দেয়নি। মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আনোয়ার শাহ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে, কমিটির জরুরি সভা ডেকে ঐ শিক্ষককে বহিস্কার করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান। অভিযুক্ত শিক্ষক দুলাল মনিপুর গ্রামের আমানউল্লাহ চৌধুরীর ছেলে।
আছমাকে হাসপাতালে ভর্তির পর খবর পেয়ে পরশুরাম মডেল থানার তদন্ত ওসি খালেদ হোসেন, এসআই মোতাহের ঘটনার তদন্তে যায়। তার দেয়া জবানবন্দী অনুসারে বেত্রাঘাতের ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষক দুলালকে আটক করা হয়। এ বিষয়ে জানতে পরশুরাম থানার ওসি শওকত হোসেন, তদন্ত ওসি খালেদ হোসেন ও এসআই মোতাহেরের কাছে ফোন করা হলে কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে মাদরাসার অধ্যক্ষ আনোয়ার শাহ ও স্থানীয় এক সাংবাদিক দুলালকে আটক করার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।