বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বেড়ে যাচ্ছে গ্রামীণফোন গ্রাহকদের কলরেট ও ইন্টারনেট চার্জ। টেলিযোগাযোগ বিভাগের বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে বাড়তি অর্থ গুণতে হবে অপারেটরটির গ্রাহকদের। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে বুধবার অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, টেলিযোগাযোগ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস, বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হকসহ বিভাগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণফোনকে সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার (এসএমপি) অপারেটর ঘোষণা করায় বেশকিছু বিধিনিষেধের আওতায় আসছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অপারেটরটির সর্বনি¤œ কলরেট বাড়ানো হবে। বেড়ে যাবে ইন্টারনেট সেবার চার্জও। যদিও এই বাড়তি অর্থের পুরোটাই গুণতে হবে গ্রাহকদের। প্রতিবেশী দেশ ভারত-পাকিস্তানসহ বিশ্বের বহু দেশে এই পদ্ধতি রয়েছে। কোন দেশের টেলিকম মার্কেটে কোনো অপারেটর বাজারের একটি বড় অংশ শেয়ারের নিয়ন্ত্রণ করলেই সেটিকে এসএমপি ঘোষণা করা হয়।
বিটিআরসির প্রবিধানমালায় বলা হয়েছে-মোবাইল সেবা সংশ্লিষ্ট বাজারের নির্ণায়কসমূহ তথা গ্রাহক সংখ্যা, অর্জিত রাজস্ব ও কমিশনের বরাদ্দকৃত তরঙ্গ- এই তিনটি নির্ণায়কের মধ্যে কোনো মোবাইল অপারেটর ন্য‚নতম একটিতে মোট বাজারের অন্তত ৪০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করলেই সেটিকে এসএমপি হিসেবে নির্ধারণের বিধান রয়েছে। এর মধ্যে গ্রাহক সংখ্যা ও রাজস্ব আয়ের দিক থেকে এসএমপির শর্তের মধ্যে পড়েছে গ্রামীণফোন। বর্তমান বাজারে গ্রামীণফোনের রাজস্ব শেয়ার ৫০ শতাংশের বেশি। আর পুরো মার্কেটের ৪৭ শতাংশের বেশি গ্রাহক এই অপারেটরটির। এজন্য গত ১১ ফেব্রæয়ারি গ্রামীণফোনকে দেশের প্রথম এসএমপি অপারেটর হিসেবে ঘোষণা করে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)।
এ ব্যাপারে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, কলরেটের ওপর নিয়ন্ত্রণারোপ ছাড়া কেউ তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। কিন্তু কী পরিমাণ রেট বাড়ানো হবে, তা এখনও আমরা চূড়ান্ত করিনি। বর্তমানে যেকোনো মোবাইল অপারেটরের সর্বনিম্ন কলরেট হচ্ছে মিনিটে ৪৫ পয়সা। মূল্য সংযোজন ও অন্যান্য কর যোগ করলে সেটি দাঁড়ায় ৫৪ পয়সা। তবে বাজারের গড় কলরেটের চেয়ে গ্রামীণফোনেরটা এমনিতেই বেশি। অপারেটরটির বর্তমান কলরেট ৭০ পয়সা। সে ক্ষেত্রে গ্রামীণফোনের ডেটা বা উপাত্ত চার্জ বাড়ানো হতে পারে।
গ্রামীণফোনের কলরেট ও ডেটার রেট বাড়লে গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কিনা জানতে চাইলে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ইতোমধ্যে এমএনপি (নম্বর পরিবর্তন না করে অন্য অপারেটরে যাওয়ার সুযোগ) সেবা চালু হয়েছে। কাজেই যদি গ্রাহক মনে করেন, এটির কলরেট গ্রহণযোগ্য নয়, তবে সহজেই তারা অন্য নেটওয়ার্ক বেছে নিতে পারেন। এতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এক্ষেত্রে গ্রামীণফোনের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ থাকছে। কেনা গ্রাহক এমএনপি সেবার মাধ্যমে গ্রামীণফোন থেকে অন্য অপারেটরে গেলে ৯০ দিন পর ফের এমএনপি সেবা নিতে পারবেন। তবে অন্য অপারেটর থেকে গ্রামীণফোনে আসলে ৩০ দিন পর তা পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে। এছাড়া গ্রামীণফোনের কলড্রপের হার, সেবার মান বৃদ্ধি, নতুন গ্রাহক বৃদ্ধিতে বাধাসহ আরও কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় ওই বৈঠকে।
বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, ১১ ফেব্রæয়ারি গ্রামীণফোনকে এসএমপি ঘোষণার পর গত ১৮ ফেব্রæয়ারি অপারেটরটির ওপর চারটি বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এর মধ্যে এমএনপিতে আসা গ্রাহক আটকে রাখার সীমা কমানো, কর্পোরেট সেবার ক্ষেত্রে এক্সক্লুসিভিটি বা একক অধিকার না রাখতে দেয়া, কলড্রপের হার কমিয়ে দেয়া, নিজেদের সেবার প্রচার-প্রচারণা বন্ধ রাখা। ১ মার্চ থেকে এসব বিধিনিষেধ মেনে চলতে নির্দেশনা দেয় কমিশন। তবে এসব বিধিনিষেধ আদালতের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ করে গ্রামীণফোন। উচ্চ আদালতে স্থগিতাদেশ দেয়া হয়। একই সঙ্গে হাইকোর্ট পুরো প্রক্রিয়াটিকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চায় বিটিআরসির কাছে। আইনি প্রক্রিয়া মোকাবেলার পাশাপাশি আগের বার পুরোপুরি বিধি অনুসরণ না করায় নতুন করে প্রক্রিয়া শুরু করতে হয় কমিশনকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।