Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হত্যার পর স্ত্রীর গায়ে আগুন দিল স্বামী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

ফেনীতে মাদরাসা ছাত্রী নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যাকান্ডের রেশ না কাটতেই আবারও গায়ে কেরোসিন ঢেলে পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। এবার রাজধানীতে স্ত্রীকে হত্যা শেষে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক স্বামীর বিরুদ্ধে। আলামত ধ্বংশে স্ত্রীকে হত্যার পর তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল রাজধানীর মুগদাপাড়ায় হাসি বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তার গায়ে কেরোসিন দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে স্বামী কমল হোসেনকে গ্রেফতার করে। গতকাল বুধবার ভোর থেকে সকাল ৮টার মধ্যে কোনও এক সময়ে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
নিহত হাসির গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার রুস্তমনগর এলাকায়। তিনি স্বামীর সঙ্গে দক্ষিণ মুগদা ব্যাংক কলোনির ১/৩৯ নম্বর ভবনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন।
নিহতের বড় বোন আলপনা আক্তার বলেন, ৮ মাস আগে প্রেম করে কমল হোসেনকে বিয়ে করে তার ছোট বোন হাসি। এটি তাদের দু’জনের দ্বিতীয় বিয়ে ছিল। আগের ঘরে শুভ নামে ৭ বছর বয়সের একটি ছেলে রয়েছে। ব্যাংক কলোনির সালামত উল্লাহ’র ফ্ল্যাটটি তারা ভাড়া নিয়ে থাকেন। তিন রুমের ফ্ল্যাটের একটি রুমে তিনি তার বৃদ্ধ বাবাাকে নিয়ে থাকেন। বাকি দুটি রুমে তার ছোট বোন হাসি বেগম তার দ্বিতীয় স্বামী কমল ও আগের ঘরের সন্তানকে নিয়ে থাকতেন।
আলপনা আরও বলেন, গতকাল সকাল ৮টার দিকে কমল তার (আলপনার) কক্ষে এসে জানায় যে- ঘরে আগুন লেগেছে। তারা ছুটে গিয়ে দেখতে পান যে মেঝেতে হাসি পড়ে আছে। তার শরীরের কাপড়ে আগুন জ্বলছিল। এটা দেখে তাদের সন্দেহ হয়। তারা শরীরের বিভিন্ন স্থানের আগুন নিভিয়ে দেখে যে হাসি আগেই মারা গেছে।
খবর পেয়ে মুগদা থানার পরিদর্শক মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন। পুলিশ জানায়, নিহতের দু’পা দগ্ধ হওয়ার পাশাপাশি শরীরের বিভিন্নস্থানে ফোস্কা পড়েছে। তার মাথার চুলের কিছু অংশ পুড়ে গেছে।
নিহতের বাবা আলতাফ ঢালী অভিযোগ করেছেন, তার মেয়েকে ভোরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। পরে বিষয়টি আত্মহত্যা বলে প্রচার করার জন্য শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। পারিবারিক সূত্র জানায়, কমল হোসেনের রাজধানী সুপার মার্কেটের সামনে একটি মোটরপার্টসের দোকান রয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার কমলের ঝগড়ার কারণে হাসির প্রথম ঘরের সন্তান শুভকে শরীয়তপুরে তার বাবার বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হয়।
মুগদা থানার ওসি প্রণয় কুমার সাহা বলেন, বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে ঝগড়া-কলহ লেগেই ছিল। গতকাল ভোরেও তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। পরে কোনও এক সময় কমল তার স্ত্রীকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করে। হত্যাকান্ডের আলামত মুছে ফেলার জন্য স্ত্রীর লাশে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করলে কমলকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
ঢামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, আগুনে হাসির শরীরের আনুমানিক ৪৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। বিকালে ঢামেকের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ