Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সচিবালয়ে বৈঠক শেষে এলজিআরডি মন্ত্রী

নদীর নাব্যতা বৃদ্ধিতে মাস্টারপ্ল্যান চূড়ান্ত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, রাজধানী ঢাকার চারপাশের নদীগুলো ও চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর দূষণ ও দখল রোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রণীত খসড়া ২টি মাস্টারপ্ল্যান চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া পদ্মা, মেঘনা নদীসহ ঢাকার তুরাগ ও পুংলী নদীর দখল, দূষণরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধিকল্পে ভিন্ন আরেকটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হবে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর সচিবালয়ে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণ রোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য মাস্টারপ্ল্যান তৈরি সংক্রান্ত কমিটির ষষ্ঠ সভা শেষে এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণ রোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধিকল্পে প্রণীত মাস্টারপ্ল্যানটি ৩টি অংশে সংগঠিত হয়েছে। দূষণ, দখল এবং নাব্যতা। মাস্টারপ্ল্যানটি ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণ, দখল এবং নাব্যতা প্রতিটি বিষয়ে সন্নিহিত জেলাসমূহের শাখা নদী, খাল এগুলোর বর্তমান পরিস্থিতি, ‘নদী দূষণ প্রতিরোধ কমিটি ২০০৮’-এর প্রতিবেদন বিশ্লেষণসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের চলমান বর্তমান প্রজেক্টসমূহ পর্যালোচনা করে প্রস্তুত করা হয়। তিনি বলেন, নদীর দূষণ রোধ, দখল রোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধিকল্পে প্রণীত মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে ৪টি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ক্র্যাশ প্রোগ্রাম (১ বছর), স্বল্পমেয়াদি (৩ বছর), মধ্যমেয়াদি (৫ বছর) এবং দীর্ঘমেয়াদি (১০ বছর)। খসড়া মাস্টারপ্ল্যানে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব ও কার্যাবলী নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের মতামত গ্রহণ করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং সেখানে চলাচলের রাস্তা ও পার্ক নির্মাণ ছাড়াও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলবে। উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণ ও দখলরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য মাস্টারপ্ল্যান তৈরির নিমিত্ত ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক এর সভায় এই কমিটি গঠনের সিদ্বান্ত হয়। পরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রীকে সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন)-কে সদস্য সচিব করে ২৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। ২০১৭ সালে কমিটির ২য় সভায় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন)কে সদস্য সচিব করে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়।
সভায় উপস্থিত বক্তব্য রাখেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব এস এম গোলাম ফারুক, পানি সম্পদ সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং নদী বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা।
নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহের কভারেজ শতকরা ৮৮ ভাগ
গতকাল সকালে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচই) কর্তৃক আয়োজিত ‘বিশ্ব পানি দিবস ২০১৯’-এর সেমিনারে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহে শতকরা ৮৮ ভাগ কাভারেজ অর্জন করেছে। আমরা এখন একটি নিরাপদ টেকসই পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির জন্য জোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। বর্তমানে আমরা ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহারে অগ্রাধিকার প্রদান করছি। ভূ-গর্ভস্থ পানি সম্পদের সীমাবদ্ধতার বিষয়টি বিবেচনা করে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধিতে বিভিন্ন নীতিমালা ও কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, নিরাপদ পানীয়জল মানুষের একটি মৌলিক অধিকার এবং জীবন ধারণের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় পানি সম্পর্কিত লক্ষ্য অর্জনে সবার জন্য পর্যাপ্ত ও সমতাভিত্তিক পানি নিশ্চিত করা, প্রত্যেক নাগরিকের জন্য পর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং অন্যান্য পানি সম্পর্কিত পরিবেশে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণকে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। নিরাপদ পানির গুরুত্ব উপলব্ধি করে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-৬ প্রণয়ন করা হয়েছে এবং এর অধীনে ছয়টি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন সন্তোষজনক।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব এস এম গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান। মূল নিবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. মুজিবুর রহমান। এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূত মিস চ্যারিওট্টা স্কি¬টার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ