বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ক্ষমতাসীনদের প্রশ্রয়েই নুসরাত জাহান রাফি হত্যা হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন সকালে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের মানববন্ধনে বক্তৃতাকালে এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, কবিরহাটের একজন নির্যাতিত নারীর খবর শুনতে না শুনতেই ঘটে গেলো সূবর্ণচরে। কী পৈশাচিক? তারা কারা? তারা ক্ষমতাসীন দলের লোক। কবিরহাটে কারা? তারা ক্ষমতাসীন দলের লোক। তারপরে আসলো ফেনীতে নুসরাত জাহান রাফি। মাদরাসায় পড়েন। ওই শ্লীলনতাহানির সাথে জড়িত প্রিন্সিপাল ক্ষমতাসীন দলের সাথে সস্পৃক্ত। কত বড় তার সাহস! জেলখানা থেকে সে তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের বলে দিলেন ওকে (রাফি) পুড়িয়ে মারতে হবে। দুই দিনের মাথায় নিষ্পাপ ছাত্রীর গোটা শরীর অগ্নিদগ্ধ হয়ে গেলো। এই বাংলাদেশে আমরা বাস করি, এই বাংলাদেশের আমরা বেঁচে আছি- আমাদের সামনে আমাদের ছোট বোনরা, আমাদের সন্তানরা আজকে ক্ষমতাসীনদের তান্ডবের কাছে, বিভীষিকার কাছে, পৈশাচিকতার কাছে তাদের দেহ ছাই হয়ে গেছে।
রিজভী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তারপরও আমরা উৎসব করবো, ইলিশ মাছ খাবো, নতুন কাপড় পড়বো? এটা আমরা করতে পারি না। শত শত নারী-শিশু নির্যাতিত ও লাঞ্ছিত হচ্ছে। সরকার একটা গ্রেফতার দেখিয়ে আরেকজনকে রক্ষার চেষ্টা করছে। যারা রক্ষক প্রশাসন তারাও সরকারের কথা শুনে। আজকে এমন পরিস্থিতি করেছে যে, কারো কোনো বাঁচার কোনো উপায় নেই। সেইদিন প্রথমে ওই প্রিন্সিপাল যে অন্যায় করেছিলো পুলিশ পদক্ষেপ নিলে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র ও যুব নেতারা নুসরাতকে আগুনে পুড়ে ফেলতে পারতো না।
নুসরাত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়ে স্থানীয় পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, সোনাগাজী থানা পুলিশের ওসিও আইনের পদক্ষেপ নিলেন না। বরং রাফির সাথে খারাপ আচরণ করলেন। তার ভিডিও ছবি তুলে সেটি ভাইরাল করে দিলেন। এটি কি হতে পারে? এটা হতে পারে না। আমরা এমন একটি অবস্থায় বসবাস করছি যেখানে কারো নিরাপত্তা নেই। আজকে আপনার সন্তান স্কুলে যাবে সে ফিরে আসবে অগ্নিদগ্ধ হয়ে না জীবন্ত আসবে তার কোনো নিশ্চিয়তা নেই। কেনো নেই? এই সরকারের কারণে। যে সরকার মধ্য রাতে নির্বাচন করে, যে সরকারের কথায় নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসন চলে সেই সরকার আইনের সরকার নয়।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি করে তিনি বলেন, জাতীয়তাবাদের প্রতীক দেশনেত্রী আজ কারাগারে। আমাদের আশা ছিলো তাকে নিয়ে পহেলা বৈশাখ করবো। আমরা পারিনি। দেশে শান্তি ফিরে আসবে, আমরা সেটা পারিনি। কী করে নুসরাতের অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার পর আমরা উৎসব দেখতে পারি। সেই নির্যাতিত নারীর চেহারা দেখে আমরা উৎসব করতে পারছি না। পহেলা বৈশাখের শ্বাশত উৎসব ও ঐতিহ্য, সহাবস্থান হরণ করেছেন শেখ হাসিনা। আমাদের উসবের প্রাঙ্গনে শান্তি নেই, আছে শুধু ভয় আর আতঙ্ক। এটা আর চলতে পারে না।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহিলা দলের উদ্যোগে নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে এই মানববন্ধন হয়। রাফির অগ্নিদগ্ধ ছবি হাতে মহিলা দলের নেতাকর্মীরা বিচারের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলটি কাকরাইলের নাইটেঙ্গল মোড় পর্যন্ত যায়। সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি নূরজাহান ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সস্পাদক হেলেন জেরিন খানের পরিচালনায় মানববন্ধনে বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নূরী আরা সাফা, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের নেওয়াজ হালিমা আরলি, শাম্মী আখতার, ইয়াসমিন আরা হক, পেয়ারা মোস্তফা, আমিনা খাতুন, মমতাজ বেগম, শামসুন্নাহার বেগম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।