বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ও বৈশাখী মেলা থেকে ফেরার পথে পৃথক স্থানে ধর্ষণের শিকার হয়েছে দুই কিশোরী। এছাড়া কৌশলে ঘর থেকে ডেকে পরিত্যক্ত খামারে নিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক স্কুল ছাত্রী। তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ধর্ষক পালিয়ে যায়। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল মিমাংশা করার চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হয়। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ধর্ষককে গ্রেফতার করে। অন্যদিকে পাবনায় বোনের বাড়ি থেকে ফেরার পথে সিএনজি চালক ও তার সহযোগীর দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৭ম শ্রেণির এক ছাত্রী। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন :
পাবনা থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, আমিনপুর থানা এলাকায় এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে সিএনজিচালক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। নববর্ষের দিন রোববার দুপুরে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নির্যাতিতা ছাত্রীর মা বাদী হয়ে দুই জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল সোমবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযুক্তদের কেউ আটক হয়নি। অভিযুক্তরা হলো আমিনপুর থানার বৃ-নান্দিয়ারা গ্রামের আবুল শেখ ওরফে আবু সাইদের পুত্র জহুরুল ইসলাম (২৬) ও একই গ্রামের আবুল সাপুরিয়ার পুত্র আলামিন (২৪)।
নির্যাতিত স্কুলছাত্রী জানায়, আমিনপুর থানার দিঘলকান্দি গ্রামে বোনের বাড়ি থেকে রোববার দুপুরে বাঘলপুর নিজ বাড়িতে ফেরার উদ্দেশ্যে অটোভ্যানে রওনা হয় সে। পথিমধ্যে অটোভ্যান নষ্ট হয়ে গেলে তাকে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় তুলে দেয় ভ্যানচালক। কিছু দূর আসার পর চালক আলামিন ও তার বন্ধু জহুরুল অটোরিকশাটি একটি নির্জন বাগানের মধ্যে নিয়ে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেয়। এ ঘটনায় ঐ ছাত্রীর মা বাদী হয়ে দুইজনকে আসামী করে রোববার রাতে আমিনপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
সোমবার দুপুরে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে স্কুলছাত্রীর ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। কর্তব্যরত গাইনী চিকিৎসক ডা. সাবেরা গুলরুখ সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় স্কুল ছাত্রীকে নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে।
নির্যাতিতা স্কুলছাত্রীর মা জানান, রোববার বিকেলে আমার মেয়েকে অসুস্থ অবস্থায় কয়েকজন লোক বাড়ি পৌঁছে দেয়। মেয়ের কাছ থেকে ঘটনার শুনে আমিনপুর থানায় মামলা দায়ের করেছি। দিনে দুপরে যারা আমার মেয়েকে এভাবে নির্মম নির্যাতন করেছে, তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী করেন তিনি।
আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, নির্যাতিতা শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ঘটনা বিস্তারিত শুনেেিছন। শিক্ষার্থীর পরিবার রোববার রাতে আলামিন ও জহুরুলকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। খুব শিগগিরিই তারা ধরা পড়বে।
রূপগঞ্জ (নারায়নগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানায়, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বৈশাখী মেলা শেষ করে বাসায় ফেরার পথে এক গার্মেন্টকর্মী (১৫) গণধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা তার বান্ধবী দৌড়ে পালিয়ে নিজেকে রক্ষা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিযে তিন ধর্ষককে আটক করেছে। রোববার রাতে রূপসী প্রধান বাড়ি সংলগ্ন বালুর মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
রূপগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক নাজিম উদ্দিন আটককৃত ধর্ষকদের জবানবন্দির বরাত দিয়ে জানান, রোববার রাতে ঐ দুই গার্মেন্টকর্মী রূপসী এলাকা থেকে বৈশাখী মেলা শেষ করে বরপা বাগানবাড়ি এলাকার বাসায় ফিরছিলো। পথিমধ্যে আগেই থেকেই উৎ পেতে থাকা ৬ বখাটে তাদের পথরোধ করে তুলে নেয়। পরে একজনকে রূপসী প্রধান বাড়ি সংলগ্ন বালুর মাঠে নিয়ে ৬ বখাটে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। আরেক গার্মেন্টকর্মীকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে সে দৌড়ে পাশ্ববর্তী মসজিদের ছাদে গিয়ে নিজেকে রক্ষা করে। এদিকে খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে জামালপুরের মেলান্দ টুপকার চর এলাকার আনিসুর রহমান, রূপসী প্রধান বাড়ির আনোয়ার হোসেনের ছেলে আকাশ মিয়া ও একই এলাকার ঈমান আলীর ছেলে ইসমাঈলকে আটক করেছে। উপরিদর্শক বলেন, বাকী তিনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ)উপজেলা সংবাদদাতা জানান, উপজেলার প্রভাকরদী এলাকায় এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। গত বৃহষ্পতিবার ঘটনাটি ঘটলেও রোববার রাতে পুলিশ ধর্ষক লিটনকে আটক করেছে।
আড়াইহাজার থানার এস আই ফায়জুর রহমান জানান, ১১ এপ্রিল প্রভাকরদী গ্রামের তোতার মিয়ার ছেলে বখাটে লিটন ১৪ বছরের শিশুকে কৌশলে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে পাশ্ববর্তী একটি গরুর পরিত্যক্ত খামারে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ধর্ষক পালিয়ে যায়। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে হলে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল মিমাংশা করার চেষ্টা করা হয়। চেষ্টাায় ব্যর্থ হওয়ায় থানায় অভিযোগ দেয়। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ধর্ষক লিটনকে গ্রেফতার করে।
পটিয়া(চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, বর্ষবরণ অনুষ্ঠান দেখতে গিয়ে চট্টগ্রামের পটিয়ায় এক কিশোরী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। রোববার বিকেলে অজ্ঞান অবস্থায় তাকে পটিয়া হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ধর্ষক রিপন (২৭) লেগুনা গাড়ি চালকের সহকারী। তার বাড়ি উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নে। তবে তার পিতার নাম জানা সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের এক কিশোরী (১৭) পটিয়া বিসিক শিল্প নগরীর একটি গার্মেন্টসে চাকুরী করতেন। ধর্ষক রিপন বিসিক শিল্প নগরীতে মালামাল সাপ্লাই কাজে ব্যবহৃত লেগুনা গাড়ি চালকের সহকারী হিসেবে চাকুরী করে। পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রিপন তাকে পৌর সদরে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে নিয়ে যায়। সেখানে কিছুক্ষন অনুষ্ঠান দেখার পর বাসে করে তাকে শাহ আমানত ব্রীজের কাছে নিয়ে যায় এবং অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে কয়েকজন মিলে ধর্ষণ করে। বিকেলে কয়েক যুবক কিশোরীকে অজ্ঞান অবস্থায় পটিয়া হাসপাতালে নেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলে পটিয়া জরুরী বিভাগের ডাক্তার সায়মা আকতার জানান। বর্তমানে সে চমেক হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষনের মধ্যে রয়েছে।
কিশোরীর ভাই মো. দিদার জানান, তার বোনের চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হলে সব ঘটনা জানা যাবে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিন জানিয়েছেন, ধর্ষণের ঘটনাটি যেহেতু চট্টগ্রাম মহানগরীতে হয়েছে সেহেতু মামলাটি সে এলাকায় হবে। তিনি আরো জানান ধর্ষক রিপন মেয়েটিকে পটিয়া থেকে বিআরটিসি বাসে করে থাকে শাহ আমানত ব্রিজের কাছে নিয়ে যায়। এছাড়া ধর্ষণের শিকার হওয়ার বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিস্কারভাবে জানাতে পারেনি। এমনকি কর্ত্যবরত চিকিৎসক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া মেয়েটিকে যে যুবকেরা নিয়েছে তাদের আটক করে থানায় খবরও দেননি। হাসপাতালের জরুরী বিভাগের ডাক্তারদের অবহেলার কারণে ধর্ষকদের আটক করা সম্ভব হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।