Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মৌলভীবাজারে বোরোর বাম্পার ফলন

কিছুদিন পরই ঘরে উঠবে সোনালি ফসল

মৌলভীবাজার থেকে এস এম উমেদ আলী | প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

আকাশের ঈষাণ কোনে কালো মেঘ জমলেই এখন হাওর পাড়ের কৃষকের মনে সৃষ্টি হয় চরম উদ্বেগ, উৎকন্ঠা ও আতঙ্ক। এই বুঝি ভারী বর্ষণে তলিয়ে যাবে পুরো বছরের জিবিকার একমাত্র ভরসা বোরো ধান। তবে আরো প্রায় সপ্তাহ তিনেক আবহাওয়া ভালো থকালে হাওর পারের কৃষকরা পুরো ধান ঘরে তোলতে পারবেন।
প্রতি বছরই কম বেশী দুর্যোগ লেগেই থাকে রোরো ধান চাষে। গত কয়েক বছর বন্যা, শিলাবৃষ্টি, ঝরের কারণে মাঠ থেকে অধিকাংশ কৃষক বোরো ফসল উঠাতে পারেননি। চলতি বছর এ পর্যন্ত ধান সংগ্রহ চলছে তবে আকাশের কালো মেঘ জমলেই চরম উদ্বেগ, উৎকন্ঠা ও দু:শ্চিন্তা বেড়ে যায় চাষিদের। চলতি বোরো মৌসুমে নানা প্রতিকুলতার পরও ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
জেলার সবক’টি হাওর ও নদী তীরে এখন দোল খাচ্ছে আধাপাকা ও পাকা বোরো ধান। চোখ যতদূর যায় দিগন্ত জুড়ে শুধু সোনালি ধানের মাঠ। ধানের মাঠের এমন দৃশ্যে হাওর পাড়ের কৃষকরা নবউদ্যমে স্বপ্ন বুনছেন। কিছু দিন পরই ধুম পড়বে ধান কাটার। তখন রাত দিন ব্যস্ত সময় পার করবেন কৃষাণ কৃষাণীরা। প্রত্যাশার বোরো ধান গোলায় তোলতে পারলেই তাদের সব কষ্ঠই স্বার্থক।
এ জেলায় রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকি। হাকালুকি হাওর ছাড়াও এ জেলায় রয়েছে মনু প্রকল্পের অধিন কাউয়াদিঘি হাওর, হাইলহাওর, বড়হাওর, করাইয়ার হাওর, কেওলার হাওর। সবক’টি ছোট বড় হাওরের এখন বোরো ধান কমবেশী ঘরে তোলছেন কৃষকরা। তাদের সে স্বপ্ন ও প্রত্যাশা পূরণ হবে কিনা এমন দু:শ্চিন্তাও ঘুরপাক খাচ্ছেন। বন্যা শিলাবৃষ্টি আর বজ্রপাতে মাঠের ধান মাড়াই ঝাড়াই শেষে গোলায় তোলতে পারবেন কি না এ নিয়ে শঙ্কিত তারা। আকাশে বৃষ্টির আভাস দেখলেই এমন দু:শ্চিন্তায় বেড়ে যায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাহাজাহান গতকাল সোমবার মাঠ পরিদর্শন শেষে জানান, হাওরের নিচু অংশের ১৬ ভাগ ধান সংগ্রহ হয়েছে। আরো ৭দিন আওহাওয়া অনুকুলে থাকলে হাওরের নিচু অংশের ধান তোলা পুরোপুরি শেষ হবে। হাওরের উপরি ভাগের পুরো ধান সংগ্রেহে আরো ২০ দিনেরমতো সময় লাগবে। অপরদিকে মনুপ্রকল্পের ভেতর বোরো ধান উঠাতে কোন সমস্য হবে না। গত বছর প্রকল্পের পাম্পসেট নতুন করে স্থাপন করা হয়েছে।
জেলায় এ বছর ৭ উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৩ হাজার ১’শ ১৬ হেক্টর। এর মধ্যে আবাদ অর্জিত হয়েছে ৫৩ হাজার ১’শ ৬২ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৬ হেক্টর ধান বেশি উৎপাদন হয়েছে।
হাকালুকি হাওর পাড়ের ভূকশিমইল ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল খালিক, মজনু মিয়া, লেচু মিয়া ও মানিক মিয়াসহ অনেকেই জানান, আবাদকৃত জমিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বোরো চাষের প্রথম দিকে ব্রি-২৮, ২৯ ও গাজি ধানে ছত্রাকের আক্রমণে ধান লাল হয়ে পচে যেতে থাকে। এমন সব রোগবালাই রোধ হয়ে এখন বাম্পার ফলনের উঁকি দিচ্ছে হাওর অঞ্চলের জীবন জীবীকার একমাত্র ফসল স্বপ্নের বোরো ধান।
মনু প্রকল্পের আওতাধিন কাউয়াদিঘি হাওর এলাকার কৃষক কালাম মিয়া, জামাল আলী জানান, প্রকল্পের বেড়িবাঁধের ভেতর তাদের জমি থাকায় একটু দেরিতে ধান রোপন করেন জমিতে। ধানের ফলন ভাল হয়েছে। পাম্পগুলো চালু রেখে পানি নিষ্কাসন করা হলে বোরো ফসল ঘরে তোলতে ব্যাঘাত হবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ