Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

৮৪ বছর বয়সেও ফরিস উদ্দিন পাননি বয়স্কভাতা

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ফরিস উদ্দিন, বয়স ৮৪। বয়সের ভারে কোমর বেঁকে গেছে, চলার শক্তি না থাকায় লাঠিতে ভর দিয়ে চলেন। শরীরের চামড়া কুঁচকে গেছে। এই বয়সেও তিনি বয়স্ক ভাতা পাননি। বাসা বাড়িতে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলে তার জীবন। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের সরকারপাড়া আকেল মামুদ গ্রামের তার বাড়ি। এই বৃদ্ধের প্রশ্ন আর কত বয়স হলে তিনি ভাতা পাবেন। তিনি ওই গ্রামের মরহুম ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে। গত ২৬ বছর ধরে ভিক্ষা বৃত্তি করে দিনাতিপাত করছেন, বয়সের পড়ন্ত বেলায় এসেও তিনি সরকারের দেয়া সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
জানা যায়, উপজেলার ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদী বেষ্টিত দুর্গম চরাঞ্চল বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সরকার পাড়া আকেল মামুদ গ্রামের ফরিস উদ্দিনের জমি জমা ধরলা নদীতে বিলীন হয়েছে অনেক আগে। তিনি ৫ মেয়ের বাবা। নিজের শেষ সম্বল ভিটে মাটি বিক্রি করে পাঁচ কন্যার বিয়ে দেন তিনি। এরপর গত ২৬ বছর থেকে দারিদ্রতার বোঝা ঘাড়ে নিয়ে গ্রামে গ্রামে মানুষের বাড়িতে ভিক্ষা করে সংসার চালান। ১৫ বছর পূর্বে স্ত্রী ছকিনা বেগমের মৃত্যু হয়। বর্তমানে বয়স বেড়ে যাওয়ায় তার দেখা শুনা করার মত কেউ নেই। বৃদ্ধ বয়সেও মানুষের বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা না করলে তাকে না খেয়ে থাকতে হয়। ফরিস উদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, গত ৬ মাস থেকে দু’চোখে ভালো দেখতে পাই না। চোখে না দেখলে ভিক্ষা করবো কি করে?
তিনি আরও জানান, বেশ কয়েকবার মেম্বারের কাছে বয়স্ক ভাতার জন্য গিয়েও কোন লাভ হয়নি। টাকা ছাড়া ভাতা পাওয়া যাবে না বলে তাকে জানিয়েছেন মেম্বার। এ সময় তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বাবারে আর কত বয়স হলে বয়স্ক ভাতার কার্ড পাবো? ওই ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য সফিকুল ইসলাম বলেন, তার নামটি তালিকা ভূক্ত করতে হবে। বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য আমার স্বাক্ষরের প্রয়োজন হলে আমি দিব।
বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন জানান, ফরিস উদ্দিনের বয়স্ক ভাতার কার্ড আছে বলে আমি জানি। যেহেতু নেই আগামীতে তার কার্ডের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তোফাজ্জেল হক বলেন, বিষয়টি ওই এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে নামটি আসতে হবে। আপনারা যেহেতু বললেন, বিষয়টি আমি নিজেই দেখবো। এছাড়া এগুলো বিষয়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের বিরুদ্ধে টাকা পয়সা লেনদেনের অভিযোগ থাকেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ