Inqilab Logo

বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করতে হলে আইন মানতে হবে

এটকো’র সাথে বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

ডাউনলিংক করা বিদেশি টিভিতে বেআইনীভাবে বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধে সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। গতকাল বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (এটকো) এর সাথে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাবার পর বেঁধে দেয়া ৭ দিনের মধ্যেই ডিস্ট্রিবিউটররা জানিয়েছে যে, তারা বিদেশি চ্যানেলগুলোকে আইন মেনে বিজ্ঞাপনমুক্ত চ্যানেল স¤প্রচার করার কথা বলেছে। তারা বিস্তারিত কী কী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে তা মন্ত্রণালয়কে জানাবার জন্য সময় চেয়েছে। ১৫ দিন সময় দেয়া হয়েছে। যদি দেখা যায়, আইন কার্যকর করার জন্য যৌক্তিকভাবে আরো সময়ের প্রয়োজন, তা বিবেচনা করা হবে, কিন্তু আইন লঙ্ঘন করে বা পাশ কাটিয়ে যাবার জন্য কালক্ষেপণের সুযোগ নেই। বাংলাদেশে সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স নিয়ে যদি ব্যবসা করতে হয়, তাহলে আইন মানতে হবে, বলেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সর্বত্র একই আইন। যুক্তরাজ্যে যখন বাংলাদেশের চ্যানেলগুলো প্রদর্শন করা হয় সেখানে বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন দেখাতে পারে না। শুধুমাত্র সেখানকার বিজ্ঞাপন দেখাতে পারে। বাংলাদেশের কোনো পণ্য দেখাতে হলে সেখানে ট্যাক্স দিয়ে অনুমতি নিয়ে যথাযথ আইন অনুসরণ করে নিয়মকানুন মেনে দেখাতে হয়। ভারতেও পাকিস্তানের কোনো বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারে না। আমাদের দেশে আইন লঙ্ঘন করে এটি করা হচ্ছে। আমরা শুধুমাত্র আইন বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিয়েছি। এ বিষয়ে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, এটি নিয়ে স্বার্থান্বেষী মহল বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। আমরা কোনো টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করি নাই, বন্ধ করার কোনো উদ্দেশ্য নেই। চ্যানেলগুলো বাংলাদেশে প্রদর্শক না হোক বা সেগুলো বন্ধ করার কোনো উদ্দেশ্য নয়, আমরা বন্ধ করার কোনো আদেশ দেই নাই। আমরা শুধুমাত্র বিদেশি চ্যানেলে আইন অনুযায়ী বিজ্ঞাপন না দেখানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম। সে অনুরোধ কার্যকর না হওয়ার কারণে আমরা পয়লা এপ্রিল তাদেরকে নোটিশ দিয়েছি উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আইন যদি কেউ না মানে তাহলে তাদের লাইসেন্স বাতিল হতে পারে।
তাদের দু’বছরের কারাদন্ড হতে পারে এবং অর্থদন্ড হতে পারে, লাইসেন্স বাতিল হতে পারে। আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই, আপনারা যারা সরকারের এই পদক্ষেপের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। মন্ত্রী বলেন, এখানে সাংবাদিক ভাইদের স্বার্থ নিয়োজিত রয়েছে। এই আইন ভঙ্গ করার কারণে আইন বহির্ভূত কাজ করার কারণে টেলিভিশন এবং টেলিভিশনের সাথে সংশ্লিষ্টরাই শুধু নয়, সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনখাতসহ বাংলাদেশের সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ডিস্ট্রিবিউটরদের আমরা পনেরো দিন সময় দিয়েছি, তবে অনেক সময় দেয়া সম্ভব নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ক্লিনফিড চালানোর জন্য তাদেরকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে অথবা তারা যাদের চ্যানেল এখানে ডাউনলিংক করে তাদের সাথে আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এটা তাদেরই দায়িত্ব। তারা সেই শর্তে লাইসেন্স নিয়েছে। সুতরাং আইন কার্যকর করার ক্ষেত্রে আমি আপনাদের সহযোগিতা পেয়ে আসছি। আমি আশা করবো এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। গণমাধ্যমের সাথে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক, কলাকুশলী বিনিয়োগকারী সবার স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য আমরা একযোগে কাজ করবো। এটকো’র সভাপতি অঞ্জন চৌধুরী বলেন, টেলিভিশন শিল্পকে বাঁচাতে আইন মেনে চলতে হবে। বিদেশি চ্যানেলে ডিস্ট্রিবিউটর ও কেবল অপারেটরদের সাথে আলোচনা করে ডিজিটালাইজেশনের জন্য এক বছরের সময়সীমা বেঁধে দেয়া যেতে পারে। ডিবিসি টিভির চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে সরকারের এ উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, এতে বিজ্ঞাপনশিল্প দেশের ভেতরে থাকবে। কেবল নেটওয়ার্কে স¤প্রচারক্রমে দেশি টেলিভিশনগুলো প্রথমে থাকা নিশ্চিত করতে হবে।
এটকোর সভাপতি অঞ্জন চৌধুরী, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোজাম্মেল বাবু ও আরিফ হাসান, বাংলাভিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল হক, সময় টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আহমেদ জোবায়ের, বাংলা টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ সামাদুল হক, আরটিভির চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম এমপি, দীপ্ত টিভির পরিচালক কাজী জাহিন হাসান, চ্যানেল ২৪’র চেয়ারম্যান এ কে আজাদ, ডিবিসি টিভির চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আজহারুল হক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ সংবাদপত্র সম্পাদক ও প্রকাশক পরিষদের সাথে মতবিনিময় করেন তথ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, প্রচার সংখ্যায় কম- বেশি, আকারে ছোট-বড় সকল সংবাদপত্রই গুরুত্বপূর্ণ। প্রচার সংখ্যা কম হলেও গুণগতমানে কোনো সংবাদপত্র এগিয়ে থাকতে পারে। তাই সকল সংবাদপত্রকে বস্তুনিষ্ঠতা ও গুণগতমান বজায় রাখতে সচেষ্ট থাকা প্রয়োজন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ