Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হত্যার পর মুক্তিপণ চায় ঘাতকরা

ডেমরায় মাদরাসাছাত্র খুন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

রাজধানীর ডেমরায় মাদরাসাছাত্র মনির হোসেনকে (৮) শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলোÑ মাদরাসার প্রিন্সিপাল আব্দুল জলিল হাদী (৪২) এবং তার দুই সহযোগী মো. আকরাম হোসেন (২২) ও আহাম্মদ শফি তোহা (১৬)। গত মঙ্গলবার রাতে তাদের তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মুক্তিপণের কারণে শিশুটিকে অপহরণ ও হত্যা করার কথা তারা স্বীকার করেছে ঘাতকরা। গতকাল বুধবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলেনে ডিএমপির ওয়ারী জোনের পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফরিদ উদ্দিন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত ৭ এপ্রিল সকাল ৭টায় মনির ও তার দুই ভাইবোন মাদরাসায় পড়তে যায়। বেলা ১১টায় মাদরাসা ছুটি হলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রিন্সিপাল ও তার দুই সহযোগী শিশু মনিরকে অপহরণ করে। তারা শিশুটিকে মাদরাসার পাশের নির্মাণাধীন মসজিদুল আয়েশায় নিয়ে যায়। প্রিন্সিপাল আব্দুল জলিল হাদী মাদরাসায় শিক্ষকতার পাশপাশি ওই মসজিদেও ইমামতি করতেন।
ডিসি বলেন, সেখানে নেওয়ার পর শিশুটি কান্না শুরু করে। তখন একজনে শিশুটির মুখ চেপে ধরলে সে আরও জোরে চিৎকার করে। তখন হাদীর গামছা দিয়ে মনিরের চোখ-মুখ বেঁধে ফেলা হয়। এক পর্যায়ে শিশুটির শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা গেলে তারা হাত-পা বেঁধে একটি সিমেন্টের বস্তায় ভরে সিঁড়ির পাশে রেখে দেয় শিশুটিকে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ছেলেটিকে হত্যার পরে বস্তাবন্দি করেও পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মনিরের বাবা সাইদুল হকের কাছে ওইদিন রাতে ফোন করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তোহা। সে মুক্তিপণের টাকা মসজিদের লাশ রাখার খাটিয়াতে রেখে যেতে বলে। পরে মনিরের বাবা এক লাখ টাকা জোগাড় করে মসজিদে নিয়ে গিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে কাউকে না পেয়ে ইমাম হাদীর কাছে টাকাগুলো রেখে যায়। সারারাত অপেক্ষার পরেও ছেলেকে ফিরে না পেয়ে পরদিন টাকা নিয়ে চলে যান তিনি।
এদিকে গত ৮ এপ্রিল বিকাল ৫টায় মসজিদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার সিঁড়ির মাঝখান থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় শিশু মনিরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর সন্দেহভাজন হিসেবে প্রিন্সিপাল হাদী ও ছাত্র তোহাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
ডিসি ফরিদ বলেন, প্রথমে স্বীকার না করলেও গত মঙ্গলবার বিকালে অপহরণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে প্রিন্সিপাল ও তোহা। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুরান ঢাকার মালিটোলা থেকে আকরামকে গ্রেফতার করা হয়। আকরাম গত বছর মসজিদুল আয়েশায় তারাবির নামাজ পড়িয়েছিলেন। মনিরের বাবার মামলার প্রেক্ষিতে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ