Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুমিল্লা নগরে যানজট

সিএনজি-অটোরিকশা ইজিবাইক গলার কাঁটা

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম | আপডেট : ১২:২৯ এএম, ১১ এপ্রিল, ২০১৯

পথ আছে কিন্তু সামনে এগুবার বা ডানে-বামে যাওয়ার উপায় নেই। ব্যস্ত ঘড়ির কাঁটাও থমকে যায় যানজটে পড়ে। কুমিল্লা নগরীতে যানজট যন্ত্রণায় নাগরিক দুর্ভোগ দিন দিন বেড়েই চলেছে।
প্রতিদিন নগরীতে যানজটের এ অবস্থা দেখলে মনে হবে দেখার কেউ নেই। বিশেষ করে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক নগরবাসীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নগরবাসী এ দুটি বাহন ঘিরে প্রতিদিনের যানজট যন্ত্রনার ত্রাহি অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে চায়।
কুমিল্লা শহরের একপ্রাপ্ত থেকে আরেকপ্রান্তে স্বল্প ভাড়ায় দ্রুত যাতায়াতের সুবিধার কারণে নগরবাসী সিএনজি অটোরিকশা ও ইজিবাইক ব্যবহার করেন। কিন্তু এসব বাহনের চালকরা সড়কে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করায় নগরজুড়ে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হয় সীমাহীন যানজট। আর প্রতিদিনের যানজটের দুর্ভোগ এখন নগরবাসীর নিত্যসঙ্গী। ঘর থেকে স্বাচ্ছন্দ্যে বের হয়ে গন্তব্যে যথাসময়ে পৌঁছানো যায়না।
নগরীর সড়কে বর্তমানে অবৈধ ১০ হাজার ইজিবাইক, ৫ হাজারের বেশি বৈধ-অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে। তার ওপর বৈধ অবৈধ মিলিয়ে প্রায় ৩৫ হাজার সাধারণ রিকশা রয়েছে। নগরীতে ওইসব বাহনের অনিয়ন্ত্রিত চলাচল প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যারাত পর্যন্ত কয়েক দফা যানজট সৃষ্টি করছে।
যানজট নিয়ন্ত্রণে রীতিমত হিমশিম পোহাতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশসহ কমিউনিটি ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের। ইতোমধ্যে প্রধান সড়ক এবং ড্রেনেজ উন্নয়ন কাজ শুরু হওয়ায় নগরবাসীর চলাচলে কিছুটা দুর্ভোগ সৃষ্টি হলেও সিএনজি অটোরিকশা ও ইজিবাইকগুলো উন্নয়ন কাজচলা সড়কগুলোর মোড়ে মোড়ে ষ্ট্যান্ড গড়ে তুলে পথচারি চলাচলে দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে।
নগরীর কান্দিরপাড়ের পূবালী চত্বর, লিবার্টি মোড়, মনোহরপুরের মাতৃভান্ডারের মোড়, দেশওয়ালীপট্রি মোড়, বজ্রপুর মোড়, রাজগঞ্জ ট্রাফিক মোড়, কোতয়ালী থানা রোড, মোগলটুলি মোড়, জজকোর্টের সামনে, চকবাজারের ফয়সল হাসপাতালের মোড়, চকবাজার বেবীষ্ট্যান্ড, লাকসাম রোডের রামঘাট, হোটেল সালাউদ্দিন মোড়, টমসম ব্রীজ, ঝাউতলা সড়কের ফয়েজুন্নেছা স্কুলের প্রবেশ মুখের মোড়, নজরুল এভিনিউয়ের কালীমন্দিরের সামনে থেকে নাসির টাওয়ার পর্যন্ত এলাকায় প্রতিদিন যখন তখন যানজটে পড়ে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। সিএনজি অটোরিকশা ও ইজিবাইকের যত্রতত্র পার্কিং এবং সড়কের ওপর এলাপাতাড়ি করে রাখার কারণে প্রতিনিয়ত যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। নিজেদের ইচ্ছেমতো নগরীর রাস্তার মোড়ে মোড়ে ওইসব বাহনের চালকরা অবৈধ ষ্ট্যান্ড গড়ে তুলেছে।
এদিকে কান্দিরপাড়ের মতো একটি জনবহুল এলাকা সিএনজি অটোরিকশার ষ্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে। কেবল কান্দিরপাড় এলাকাই নয়, নগরীর বিভিন্ন এলাকার মোড়ে মোড়েও ইজিবাইক, সিএনজি অটোরিকশার ষ্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। সিএনজি অটোরিকশা ও ইজিবাইকের বিশৃঙ্খল চলাচলের কারণে যানজট সৃষ্টির পাশাপাশি পথচারিদেরও চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
প্রতিদিনই কয়েক দফা যানজট কবলে পড়ে শিক্ষার্থীরা ও সরকারি-বেসরকারি কর্মজীবীরা সঠিক সময়ে যেমন স্কুল, কলেজ ও অফিসে পৌঁছতে পারেন না তেমনি ছুটি শেষে বাড়ি ফিরতেও দেরি হয়। যানজটে আটকা পড়া অ্যাম্বুলেন্স নগরীর কোন এলাকা থেকে রোগী নিয়ে হাসপাতাল কিংবা হাসপাতাল থেকে মুমূর্ষু রোগী ঢাকায় নিতে নগরীর রাস্তা পার হয়ে মহাসড়কে উঠাও কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। নগরীর প্রতিদিনের যানজটের দৃশ্য দেখলে মনে হবে, এ বিষয়টি ট্রাফিক বিভাগের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ