পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশ্বব্যাপী ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। শুধু ২০১৮ সালে সারা পৃথিবীতে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৯৬ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে বছরে এক কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ মারা যাবে। কিন্তু সুখবর হলো, গত ২০ বছরে ক্যান্সার গবেষণায় অনেক অগ্রগতি হয়েছে। ক্যান্সার আক্রান্ত হবার পর সুস্থ হয়ে ফিরে আসার সংখ্যাও বাড়ছে প্রতি বছর। সেই সঙ্গে বিজ্ঞানীরাও ক্যান্সার শনাক্ত ও চিকিৎসার নতুন নতুন উদ্ভাবন নিয়ে আসছেন।
২০১৮ সালে নোবেল পুরষ্কার পাবার পর ক্যান্সার গবেষণা নিয়ে আলোচনা বেড়েছে। ক্যান্সার যদি প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা যায়, তবে এতে মারা যাবার সম্ভাবনা কমে যায়। চিকিৎসকেরা বলছেন, প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার শনাক্ত করার ইঙ্গিত পাওয়া যেতে পারে মানুষের রক্তে। কানাডার প্রিন্সেস মার্গারেট ক্যান্সার সেন্টারের গবেষকেরা ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তের নমুনায় জেনেটিক কোন পরিবর্তন হয়েছে কিনা তা বের করার নতুন এক পন্থা উদ্ভাবন করেছেন। এতে নির্দিষ্ট কোন জিন কাজ করছে কিনা বা কোনটি হঠাৎ কাজ বন্ধ করেছে কিনা, সেটি বোঝা যাবে। এর ফলে ক্যান্সার উপস্থিতি শনাক্ত করা সম্ভবই হবে না কেবল, বরং সেটি কোন ধরণের ক্যান্সার তাও জানা যাবে।
শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দিয়েই ক্যান্সার আক্রান্ত কোষকে ধ্বংস করার প্রক্রিয়া এখন খুবই জনপ্রিয়। ২০১৮ সালে জিম অ্যালিসন মেডিসিনে নোবেল পেয়েছেন তার উদ্ভাবিত নতুন প্রক্রিয়া যাকে ‘পেনিসিলিন মূহুর্ত’ নামে সবাই চেনে তার জন্য। এই প্রক্রিয়া ক্যান্সার চিকিৎসার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে বলে বলছেন সংশ্লিষ্টরা। এর মূল কথা হচ্ছে, আমাদের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এমনভাবে সাজানো হবে যাতে এটি শরীরের তৈরি হওয়া ক্যান্সার কোষগুলোকে অগ্রাহ্য করবে আর একই সময়ে শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলো সেসব কোষ ধ্বংস করতে থাকবে।
গবেষকেরা দেখেছেন, যাদের শরীরে ছোট ছোট টিউমার থাকে বা বিশেষ করে ত্বকের ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছেন, এমন মানুষের শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে ক্যান্সার আক্রান্ত কোষকে ধ্বংস করার প্রক্রিয়া ভালো কাজ করে। যাদের শরীরে ‘ভালো’ ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বেশি থাকে, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্যান্সারের সঙ্গে বেশি লড়াই করতে পারে। এই উদ্ভাবনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই কারনে যে, প্রক্রিয়াটি মানুষ চাইলে তার খাদ্য আর ব্যয়ামের মাধ্যমে বেশি কার্যকর করে তুলতে পারে।
ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, স্কটল্যান্ডে ১০ বছর আগে এক টিকাদান কর্মসূচী চালু হয়েছে, যার মাধ্যমে অল্পবয়সী নারীদের সার্ভিক্যালে ক্যান্সার হওয়া অনেকটাই ঠেকিয়ে দিয়েছে। সেখানকার ১২ ও ১৩ বছর বয়েসী স্কুলের মেয়েদের রুটিন করে টিকা দেয়া শুরু হয়, যা সেক্সুয়ালি ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়া আটকাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, ঐ টিকার ফলে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যান্সার প‚র্ব কোষের ধ্বংস সম্ভব। আরেক সম্ভাবনাময় আবিষ্কার হতে যাচ্ছে, জিন থেরাপি দেবার ঔষধ। কিমরিয়া নামে এই ওষুধ এখন লিউকেমিয়া আক্রান্ত অল্প বয়েসী শিশুদের, যাদের অন্য কোন ওষুধে কাজ হচ্ছে না, তাদের চিকিৎসায় কাজে লাগানো হয়।
ফিলাডেলফিয়ায় আবিষ্কার হওয়া এই ওষুধের মাধ্যমে রোগীর একটি স্বাস্থ্যকর টি-সেল মানে রক্তের শ্বেত কণিকার একটি উপাদান যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় কাজে লাগে, তাকে অপসারণ করে, সেটিকে ক্যান্সার কোষ শনাক্তে কাজে লাগানো হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্যান্সারে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব। যে বিষয়ে ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে, যেমন সিগারেট, অ্যালকোহল, অতিরিক্ত ওজন, এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার বাদ দিতে হবে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যকর একটি জীবনযাপন প্রক্রিয়া বেছে নিতে হবে ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়াতে চাইলে। সূত্র: বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।