Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চলছে খাল দখলের উৎসব

ভোলায় পানির সমস্যায় চাষাবাদ ব্যাহত

ভোলা থেকে মো. জহিরুল হক | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ভোলা জেলার খাল দখল করে স্থাপনা নির্মান চলছে। খাল ভরাট হওয়ার ফলে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে কৃষি উৎপাদন। ভোলা জেলার বিভিন্ন স্থানে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় এসব চিত্র। প্রবাহিত খালের মধ্যে অবৈধভাবে পাকা পিলার তুলে দোকান নির্মাণ করছেন স্থানীয়রা। প্রকাশ্যে এ ঘর তুলেলও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তেমন একটা ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেই মনে করছে সাধারন মানুষ। ফলে স্থানীয় সচেতন লোকজনের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানান, বোরহান উদ্দিন উপজেলার মনিরাম বাজারের পশ্চিম পাশের সিকদারহাট যাওয়ার পাকা সড়কের পাশে, লালমোহন উপজেলার গজারিয়া বাজার, শিমুলতলী বাজার, লালমোহন হাসপাতাল খাল, ভোলা-চরফ্যাশন সড়কের দুই পাশ, ভোলা সদর, চরফ্যাশন ঊপজেলার সড়কের দুই পাশের চিত্র দেখলেই অনুমান করা যায় কিভাবে খাল দখল হচ্ছে। মনে হয় যেন প্রতিযোগীতা করে খাল দখলের উৎসব চলছে। কিভাবে অবৈধ দখলদাররা এসব সরকারি খাল দখল করে স্থায়ীভাবে পাকা ঘড়-বাড়ি, দোকান পাট তৈরি করে জবর দখল করে আছেন। ১০-১২ ফুট প্রশস্ত খাল দিয়ে এক সময় নৌকা চলাচল করত। মালামাল পরিবহন করা হত। কিন্তু এখন সেসব জায়গায় খাল ছিল এরকম চিহ্ন দেখা যায় না। ভোলার খালের ২০-২৫ ফুটের দখল করে পাকা পিলার তুলে ঘর নির্মাণ করছেন দখলকারীরা। স্থানীয় লোকজন জানায়, এসব খালে এক সময় জোয়ারের সময় ভরা যৌবন ছিল আর এ তা মরা খালে পরিনত হয়ে গেছে। যেসব খাল থেকে এলাকার কৃষি জমির পানির চাহিদা পূরণ করে পাম্পের সাহাজ্যে কৃষি কাজে সেচের কাজে পানি ব্যবহার হত। কিন্তু এখন তা সম্ভব হচ্ছে না। এতে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে বোরো চাষাবাদ বন্ধ হওয়ার পথে একমাত্র এসব খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানির সঙ্কটের কারনে। এসব খাল ভরাট করে ফেলছে দখলবাজরা।
কিন্তু একদল দখলবাজ একের পর এক দখল করে ফেলেছে। ফলে খালগুলো ভরাট হয়ে নাব্যতা হারিয়ে ফেলেছে। যার ফলে শুষ্ক মৌসুমে খালে পানি থাকে না। আর পানির জন্য চাষাবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন খাল ভরাটের ফলে পানির সঙ্কটের কারনে অনেক জায়গায় কৃষি কাজ বিশেষ করে বোরো ধান চাষ বন্ধ হওয়ার পথে। এ সময় রাস্তার দুই ধার ছিল বরো ধানের সবুজ ক্ষেত। কিন্ত এখন আর তেমন চোখে পরে না। অনেক জায়গায় দখলবাজরা প্রভাবশালী হওয়া প্রতিবাদ করার সাহস করেন না কেউ।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বিভিন্ন উপজেলায় অবৈধ দখলদারদের তালিকা করা হচ্ছে। শীগ্রই তারা সরজমিনে যাবেন। অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। অন্যদিকে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় সচেতন মহলে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। কিছুদিন পূর্বে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান রুমি লালমোহন ওয়েস্টার্নপাড়ার কিছু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করলে এলাকার জনমনে আশা পোষণ করেছিল তা অব্যাহত থাকবে। কিন্তু তা আর হয়নি।
এ ব্যাপরে জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম সিদ্দিকি ইনকিলাবকে বলেন, আমরা শীগ্রই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করে খাল দখলসহ সরকারি জায়গায় নির্মানকৃত সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার ব্যাবস্থা নিব। আমি ইতোমধ্যে সকল নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এ ব্যাপারে কঠোরভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ