Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইলিশের বাজারে বৈশাখী উত্তাপ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

৮০০-৯০০ গ্রামের প্রতিটি ১৬০০-২০০০ টাকা
১ কেজি-১২০০ গ্রামের প্রতিটি ২৮০০-৩০০০ টাকা


আর মাত্র ৮ দিন পরেই পহেলা বৈশাখ। বাংলা বর্ষবরণ উৎসবকে সামনে রেখে রাজধানীর ইলিশের বাজারে লেগেছে বৈশাখী উত্তাপ। দিন যতো এগিয়ে আসছে, উত্তাপ ততোই উত্তাপ বাড়ছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, পহেলা বৈশাখে ইলিশের নগরকেন্দ্রিক চাহিদাকে পুঁজি করে ফায়দা লুটছে এক শ্রেণির পাইকারি ও খুচরা মাছ ব্যবসায়ী। এজন্যই ইলিশের দাম ক্রমেই বাড়ছে।
রাজধানীর কাওরানবাজার, যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুর, মহাখালী, গুলিস্তানের ঠাটারি বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে এখন ইলিশের ছড়াছড়ি। বাজারগুলোতে ইলিশের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। ক্রেতাদের কাছে টানতে বিক্রেতারা হাঁক ডাক লেগেই আছে। ও ভাই নিয়া যান, মামা নিয়ে যান, নিয়ে যান। দাম কমায় দিমু। সামনে আরও দাম বাড়বে। এখন নিয়া ফ্রিজে রাখেন, এ মাল আর পাইবেন না-ইত্যাদি। দাম কমিয়ে দেয়ার কথা বললেও বিক্রেতাদের দাম হাঁকানো দেখে তার কোনো আভাস দেখছেন না ক্রেতারা। ক্রেতাদের ভাষ্য, বৈশাখকে উপলক্ষ্য করে ইলিশের বাজার রীতিমতো চড়া। ওজন যত বেশি তার দামও আকাশচুম্বী।
যাত্রাবাড়ী বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ইলিশের আমদানী ও বিক্রি দুটোই বেড়েছে। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের প্রতিটি ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে ১৬০০ থেকে দুই হাজার টাকা। এই ওজনের ইলিশ কিছুদিন আগেও ৮শ’ থেকে ১২শ’ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। এছাড়া মেঘনার ৯০০ থেকে ১ কেজি ওজনের প্রতি ইলিশ দুই হাজার থেকে ২২শ’ টাকা হাঁকছে বিক্রেতারা।
এক কেজি ১০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের বড় ইলিশও বাজারে দেখা গেছে। বিক্রেতারা দাম চাইছে প্রতি কেজি ২৮শ’ থেকে তিন হাজার টাকা। আর দেড় কেজি বা দুই কেজির কাছাকাছি ওজনের ইলিশের প্রতি কেজির দাম চাওয়া হচ্ছে সাড়ে চার হাজার টাকা। তবে ছোট সাইজের ইলিশ এখনও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই আছে। ৫০০ গ্রামের নিচে এক হালি ইলিশের দাম দুই হাজার টাকা।
বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে ‘তাজা’ বলে যেসব ইলিশ বিক্রি হচ্ছে তার বেশিরভাগই কয়েক মাস আগে মজুদ করা হিমায়িত ইলিশ। বাড়তি লাভের আশায় পয়লা বৈশাখের দুই সপ্তাহ আগে থেকে সেগুলো বাজারে ছাড়া হয়েছে। এছাড়া বাজারে আমদানি করা মিয়ানমারের ইলিশও প্রচুর বিক্রি হচ্ছে।
কাওরানবাজারের ইলিশ বিক্রেতা শামীম বলেন, বৈশাখ এলে ইলিশের চাহিদা বাড়ে। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন। বৈশাখী বাজার ধরার জন্য তারা আপাতত ইলিশ মজুদ করে রাখছে। বৈশাখের দুইদিন আগে তারা বাজারে মাছ ছাড়বে ভালো দাম ও বেশি লাভের আশায়। তাই বাজারে এখন বার্মিস ও সাগরের ইলিশে ভরা। এই ইলিশ নদীর ইলিশের তুলনায় স্বাদ ও গন্ধ কম হওয়ায় এদের চাহিদা কম। তিনি বলেন, বৈশাখের আগে নদীর ইলিশ আসলেও দাম থাকবে আকাশচুম্বি। এছাড়া বাজারে ইলিশের ক্রেতাও অনেক কম। কারণ এখন আগে থেকেই সবাই ইলিশ সংরক্ষণ করে রাখে।
শনিরআখড়ার ইলিশ ব্যবসায়ী বারেক ব্যাপারি জানান, ইলিশের বিক্রি এখনও তেমন বাড়েনি। তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ইলিশের চাহিদা বাড়বে। তখন এর দামও বাড়বে। তিনি বলেন, এখন আমরা আড়তের আগের মালই কিনতে পারছি। তাছাড়া এখন তো আগের মতো ইলিশ ধরা পড়ছে না। তাই আড়তদাররা আগের মাছ দিয়ে বাজার ধরার চেষ্টা করছে। আমরাও সেই আগের মাছই বিক্রি করছি।
বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রাজধানীতে ইলিশ মূলত চার ধাপ পেরিয়ে ক্রেতার হাতে পৌঁছে। প্রথম দফায় জেলের কাছে থেকে আসে স্থানীয় পাইকারের কাছে। সেখান থেকে ঢাকার আড়তে। তারপর আড়ত থেকে পাইকাররা মাছ কিনে নেয়। সেখান থেকে পরবর্তীতে খুচরা বাজারে মাছ বিক্রি হয়। এতো হাতবদলের কারণে দেখা যায় ইলিশের দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বাড়তি যোগ হয়ে যায়।



 

Show all comments
  • কাসেম ৫ এপ্রিল, ২০১৯, ৪:১৩ এএম says : 0
    এটা আমাদের দেশের পুরতন সমস্যা
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইলিশ

২০ নভেম্বর, ২০২২
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ