Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অগ্নিনির্বাপণ সক্ষমতা শূন্যের কোঠায়

নাইমুর রহমান নাবিল : | প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের রেশ এখনো কাটেনি। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বনানীর এফ আর টাওয়ার ট্রাজেডি এবং সবশেষ শনিবার গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেটে অগ্নিকান্ড। রাজধানীবাসীর কাছে রীতিমতো আতঙ্কের নাম যেনো অগ্নিকান্ড। রাজধানীর ব্যস্ততম অংশ পুরান ঢাকার সব চেয়ে ঝুকিপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। প্রায় বিশ হাজার শিক্ষার্থীর এই বিদ্যাপীঠে অগ্নি নির্বাপণ সক্ষমতা প্রায় শূণ্যের কোঠায়। তাই যেকোন দূর্ঘটনায় মারাত্মক প্রণহানির আশঙ্কা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনসহ কোন একাডেমিক ভবনেই অগ্নি নির্বাপণের সু-ব্যবস্থা নেই। সারা বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার রয়েছে মাত্র ১১ টি এবং সবগুলোই মেয়াদোত্তীর্ণ। যার মধ্যে নতুন একাডেমিক ভবনে ৫ টি, বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে ৩ টি এবং প্রশাসনিক ভবনে ৩ টি সিলিন্ডার রয়েছে। এছাড়া কলা ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, রফিক ভবন, অবকাশ ভবনে কোন সিলিন্ডার নেই। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ভবনেই জরুরি নির্গমন পথ নেই। কলা ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ২টি ভবন এবং অবকাশ ভবন থেকে নামার জন্য রয়েছে একটি মাত্র সিঁড়ি। নতুন একাডেমিক ভবন ও বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে একাধিক সিঁড়ি থাকলেও সুবিশাল স্থাপনা হিসেবে তা অপ্রতুল। একাডেমিক ভবনগুলোর মধ্যে অগ্নি নিরাপত্তা ঝুকির শীর্ষে রয়েছে নতুন একাডেমিক ভবন (নিউ বিল্ডিং)। নির্মিতব্য ১৪ তলা এই ভবনের ৯ম তলা পর্যন্ত চালু রয়েছে। ভবনটির নীচ তলায় ২টি, ২য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলায় ১টি করে ৩টি অগ্নি নির্বাপক সিলিন্ডার রয়েছে। সিলিন্ডারগুলো অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। এছাড়া বাকি ছয় ফ্লোরে কোন ধরনের অগ্নি নিরোধক ব্যবস্থা নেই। ভবনটির জন্য তিনটি সিঁড়ি থাকলেও নির্মাণ কাজের অজুহাতে একটি সিঁড়ি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। উন্মুক্ত বাকি দুই সিঁড়ির মধ্যে একটি কোন কোন ফ্লোরে কলাপসিবল গেট দিয়ে আটকানো। যার ফলে শুধুমাত্র একটি সিঁড়ি দিয়ে সবার যাতায়াত করতে হয়। জরুরী নির্গমন পথ না থাকা এবং ভবনের মাঝ বরাবর একমাত্র সিঁড়ি থাকায় অগ্নিকান্ডের মতো দুর্ঘটনায় ঘটতে পারে মারাত্মক প্রণহানি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করার দাবি জানিয়ে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন শওকত জাহাঙ্গীর বলেন, অগ্নি নির্বাপণে যথাযথ সক্ষমতা অর্জন করতে দৃশ্যমান কিছু করতে হবে। আমরা ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের পক্ষ থেকে নতুন একাডেমিক ভবনে জরুরী নির্গমন পথ নির্মাণের জন্য ভিসি বরাবর লিখিত আবেদন জানাবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড.মীজানুর রহমান বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্নি নির্বাপণে সু-ব্যবস্থা নেই। তবে আমাদের নতুন ক্যাম্পাসে সকল ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তাছাড়া এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সকল পদক্ষেপ নেবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী সুকুমার চন্দ্র সাহা ইনকিলাবকে বলেন, আমরা অগ্নি নির্বাপণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে লিখিত দিয়েছি। সে অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ পেলে দ্রæত কাজ শুরু করব। উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৬ সালের ১৭ মে নতুন একাডেমিক ভবনের ষষ্ঠ তলায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। একাডেমিক কার্যক্রম না চলার কারনে কোন ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ