Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অগ্নিঝুঁকিতে ব্যাংকের কয়েক শ’ শাখা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ২ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

প্রত্যেক ব্যাংককে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা সত্তে¡ও আগুনের ঘটনা থেকে রেহাই পাচ্ছে না ব্যাংকিং খাত। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ৬৫০টি শাখা আগুনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের গবেষক ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বলেন, সব ব্যাংকের উচিত এখন সর্তক হওয়া। ব্যাংকগুলোতে শুধু টাকা-পয়সাই থাকে না, এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রও থাকে। এ কারণে প্রত্যেক ব্যাংকের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। হঠাৎ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে জান-মাল কিভাবে রক্ষা করতে হবে, তাও প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা জোরদার করতে আমাদের ব্যাংকের সব শাখাকে আবারও নির্দেশনা দেবো। প্রত্যেক শাখায় যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালায় যে কোনও ব্যাংকের শাখা স্থাপনে বাধ্যতামূলকভাবে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আগুনের ঝুঁকিতে রয়েছে তফসিলি ব্যাংকগুলোর ৬৫০টি শাখা, এর মধ্যে ২৭৫টি শাখা রয়েছে উচ্চমাত্রার ঝুঁকিতে। বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকের মধ্যে পাঁচটি দেশি ও বিদেশি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ও রয়েছে। অবশ্য তাজরীন ফ্যাশনসে আগুনের ঘটনার পর বাংলাদেশ ব্যাংক তফসিলি ব্যাংকগুলোর অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছিল। এরপর সোনালী ব্যাংকসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে আলাদাভাবে তাদের শাখা ব্যাংকে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট মোকাবিলায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশনা দিয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, তফসিলি ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রক হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন নির্দেশনায় আগুনের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংক এরই মধ্যে ব্যাংকগুলোর অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে সোনালী ব্যাংককে দেওয়া এক নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, শাখাগুলোতে স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা স্থাপনসহ প্রতিবছর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরামর্শ মোতাবেক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা হালনাগাদ রাখতে হবে। এছাড়া, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা সন্তোষজনক আছে কিনা, তার প্রত্যয়নপত্র দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক আরও বলেছে— চেস্ট বা সাব-চেস্ট শাখাগুলো যত দ্রুত সম্ভব ঘিঞ্জি আবাসিক এলাকামুক্ত স্থানে স্থাপন বা স্থানান্তর করতে হবে। এর আগে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে নারায়ণগঞ্জে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের একটি শাখায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত হন। ওই বছরই বাংলাদেশ ব্যাংকের ৩০ তলা ভবনের ১৪ তলায় আগুনের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিস দেশের বিভিন্ন ব্যাংকের ৭০০ শাখা পরিদর্শন করেছে। এর মধ্যে ৬৪৭টি শাখার অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা দুর্বল দেখতে পেয়েছে তারা। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষের মতে, আগুন লাগলে এসব শাখা পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ৭০০ শাখার মধ্যে মাত্র ৫০টি শাখার অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা সন্তোষজনক পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। জানা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক লি. বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার প্রধান কার্যালয়গুলো আগুনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
উল্লেখ্য, ব্যাংকগুলো প্রযুক্তিনির্ভর সেবার দিকে ঝুঁকছে। এজন্য তাদের রয়েছে ডেটা সেন্টার ব্যবস্থাপনা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, অনেক ব্যাংকের ডেটা সেন্টারগুলোও আগুনের ঝুঁকির বাইরে নয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ