Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নভঙ্গ

মীর রাসেল, চবি থেকে : | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. এমদাদুল হকের স্বপ্ন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার। গত ২৭ তারিখে নিজ বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষার দিতে বিশ্ববিদ্যলয়ে এসেছিলেন। এসময় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। পরে পরীক্ষার সময় শেষ হয়ে এলে শিবির কর্মী সন্দেহে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে মৌখিক পরীক্ষা হয়ে গেছে তাই এ বিষয়ে আর কোন সুযোগ নেই। এর ফলে শিক্ষক হওয়া স্বপ্ন ভেঙে গিয়েছে এমদাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এমদাদুল হক ২০০৮-০৯ শিক্ষা বর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণীবিদ্যা বিভাগে ভর্তি হন। স্নাতকে বিভাগের সর্বচ্চ ৩.৮৮ সিজিপিএ পেয়ে প্রথম শেণীতে প্রথম হন এবং স্নাতকোত্তওে ৩.৯৬ সিজিপিএ পেয়ে প্রথম স্থান লাভ করেন। ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক জার্নালে তার তিনটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। শিক্ষা জীবনের সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক ২০১৫ এবং বাংলাদেশ জুলজিক্যাল সোসাইটি পদক ২০১৫ লাভ করেন।
এমদাদুল হক বলেন, ২৭ তারিখ সাড়ে নয়টার দিকে মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এ আর মল্লিক প্রশাসনিক ভবনে আসার পরে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ছাত্র আনোয়ার হোসেন ও মোকসেদ আলি আমার দিকে এগিয়ে আসে এবং কুশলাদি জিজ্ঞেস করে। তাদের সাথে ছিলেন, আনোয়ার হোসেন, আসিফ মাহমুদ শুভ, মোকসেদ আলি ওরফে মীলু প্রামানিক, জাহিদুল হাসান, রফিকুল ইসলাম, আসির উদ্দিন, শরীফ উদ্দিন। পরে তারা আমাকে বলে আপনি আমাদের সাথে কথা বলে আসেননি তাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। ছোট ভাইদের কিছু দাবিদাওয়া আছে সেটা মিটাতে হবে পরীক্ষা দিতে হলে। আমি দিতে অনিহা প্রকাশ করলে তারা আমাকে মারধর করতে থাকে এবং কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে নিয়ে যায়। সেখান থেকে প্যাগোডায় নিয়ে গিয়ে মারধর করে। এসময় মাথায় পিস্তল ধরে বলে এ কথা কাউকে বললে মেরে ফেলবে। পরে বেলা ১২ টার দিকে পুলিশে দেয় আমাকে।
অভিযুক্ত কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীর কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, সে যেটা বলেছে সেটা মিথ্যা কথা। ২০১২ সালে ডাবল মার্ডারের সময় শিবিরের হয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি।
তবে লিপিকা চন্দ ও সাইফুল ইসলাম নামের এমদাদের দুই বন্ধুর কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, ও এ ধরণের কোন ছাত্র সংগঠনের সাথে জড়িত ছিল না। সবসময় লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখিছি তাকে।
প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. মো. ইসমাইল মিয়া বলেন, সে কোন ছাত্র সংগঠনের সাথে জড়িত ছিল এটা আমার জানা নেই। তবে আমার মনে হয়েছে সে যাতে শিক্ষক না হতে পারে এই জন্য কেউ দুর্ভিসন্ধিমূলক ভাবে এটা ঘটিয়েছে।
এমদাদের সাথে শিবিরের কোন সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল উদ্দিন জাহংগীর বলেন, ওগুলা বলতে পারব না। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অভিভাবকের হাতে তুলে দিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্টার কে এম নুর আহমদ বলেন, ভাইবা বোর্ড গঠিত হয় একবারের জন্য। তাই একবার ভাইবা হওয়ার পরে আর কারো ভাইবা নেয়া সম্ভব নয়।



 

Show all comments
  • NANNU CHOWHAN ৩১ মার্চ, ২০১৯, ৯:৩৩ এএম says : 0
    University te eaishob satroliger shontrashider shontrashi totporotar jonno eakta medha shokti eaivabe je naki vobishshote aro medhar karigor hoyte parto ta shesh hoye gelo boroi afsos,ar koto eai shob shontrshi karjo kolap amader shohojjo korte hobe ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ