বিইউপির ছাত্র আবরার নিহতের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে গ্রেফতারকৃত সুপ্রভাত পরিবহনের বাসটির চালক, চালকের সহাকারী ও কন্ডাক্টর। গ্রেফতারকৃতরা ডিবির কর্মকর্তাদের জানিয়েছে, ১৯ মার্চ ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে ভিক্টোরিয়া পার্ক থেকে সুপ্রভাত পরিবহনের বাসটি নিয়ে রওনা দেন চালক সিরাজুল ইসলাম। কিছুক্ষণ পর গুলশান থানাধীন শাহজাদপুর বাঁশতলা অতিক্রম করার সময় মিরপুর আইডিয়াল গার্লস ল্যাবরেটরি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী সিনথিয়া সুলতানা মুক্তাকে চাপা দেয় তার বাস। গুরুতর আহত হন ওই ছাত্রী। আহত সিনথিয়া এখন কিছুটা সুস্থ।
এ ঘটনার পর সুপ্রভাত বাসের যাত্রীরা সিরাজুলকে আটক করে ট্রাফিক পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। উত্তেজিত হয়ে ওঠে জনতা। এ পরিস্থিতিতে বাসের কন্ডাক্টর ইয়াসিন দ্রæত চালকের আসনে বসে বাসটি চালিয়ে নিয়ে যান। বেপরোয়া গতিতে ছুটতে ছুটতে বাসটি চলে আসে বসুন্ধরার নদ্দা এলাকায়। সেখানে ওই বাসই আবার চাপা দেয় বিইউপির ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরীকে। নির্মমভাবে নিহত হন আবরার। গত মঙ্গলবার চাঁদপুরের শাহরাস্তি থানার একটি ইটভাটা থেকে বাসের কন্ডাক্টর ইয়াসিন আরাফাতকে গ্রেফতার করে ডিবি। ইয়াসিনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার সকাল সাতটায় রাজধানীর মধ্য বাড্ডা এলাকা থেকে চালকের সহকারী ইব্রাহিমকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল দুপুর ১২টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন।
তিনি আরো বলেন, সিনথিয়া সুলতানা মুক্তাকে চাপা দেয়ার পর সুপ্রভাত বাসের যাত্রীরা চালক সিরাজুলকে আটক করে ট্রাফিক পুলিশের কাছে দেন। এ সময় বাসের কন্ডাক্টর ইয়াসিন আরাফাত বাসের মালিককে ঘটনা সম্পর্কে জানান। তিনি মালিককে বলেন, উত্তেজিত জনতা বাসটি জ্বালিয়ে দিতে পারে। এ কথা শুনে মালিক ইয়াসিন আরাফাতকে দ্রæত ঘটনাস্থল থেকে বাস চালিয়ে পালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। এরপর বাসটি নিয়ে বেপরোয়া গতিতে পালিয়ে যেতে থাকেন ইয়াসিন। এ সময় বাসটি আবরারকে চাপা দেয়।
আবদুল বাতেন বলেন, ইয়াসিনকে আদালতে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেখানে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেয়ার পর আমরা জড়িত ব্যক্তিদের নামে এক মাসের কম সময়ের মধ্যে অভিযোগপত্র দেব। ১৯ মার্চ সকালে রাজধানীর বসুন্ধরায় যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে নদ্দা এলাকায় সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাসের চাপায় নিহত হন বিইউপির ছাত্র আবরার। ওই দিন রাতে গুলশান থানায় মামলা হয়। ঘটনার পর সিরাজুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সিরাজুলের ভারী যান চালানোর লাইসেন্স ছিল না। হালকা যান চালানোর লাইসেন্স নিয়ে তিনি বাসের মতো ভারী যান চালাচ্ছিলেন। গ্রেফতারকৃত ইয়াছিন প্রাথমিকভাবে বাসচাপা দিয়ে আবরারকে খুনের বিষয়টি স্বীকার করেছে। এছাড়া, বাস মালিক ননী গোপাল ডিবির নজরদারীতে রয়েছে বলেও জানান আব্দুল বাতেন।