বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে তিন অতিরিক্ত সচিব স্বল্প সুদে গৃহ নির্মান ঋণ উত্তোলন করেছেন বলে অর্থ মন্ত্রণালয় স‚ত্রে জানা গেছে। এ ঋণের জন্য কয়েক শ’ কর্মকর্তার আবেদন পড়লেও এ পর্যন্ত ৩৪ জনের আবেদনপত্রে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার তিনজন কর্মকর্তা বরাদ্দকৃত ঋণের অর্থ উত্তোলন করেছেন।
সূত্র জানায়, গত বছর অক্টোবর থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য স্বল্পসুদে গৃহ নির্মান ঋণ বরাদ্দের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে চাকরিজীবীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। একই সঙ্গে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের চাকরিজীবীদের মধ্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা কাজ করে। পরবর্তী সময়ে গৃহ নির্মাণ ঋণ নীতিমালা ঘোষণা করে সরকার। এই নীতিমালায় বিচার বিভাগীয় চাকরিজীবীদেরও অন্তর্ভ‚ক্ত করে সম্প্রতি নীতিমালায় কিছুটা পরিবর্তনও করা হয়েছে।
নীতিমালা অধীনে যে কোন সরকারি চাকরিজীবী গৃহ নির্মাণ ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই ঋণের সুদের হার হবে ১০ শতাংশ। তবে সুদের ৫ শতাংশ ঋণগ্রহীতাকে পরিশোধ করতে হবে। বাকি ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে পরিশোধ করবে।
শতকরা ৫ শতাংশ সুদে গৃহঋণ পেতে সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে আবেদন করার হিড়িক পড়ে যায়। বিভিন্ন সরকারি ব্যাংক ও বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনে (বিএইচবিএফসি) ইতোমধ্যে স্বল্প সুদে গৃহঋণ পেতে কয়েক শ’ আবেদনপত্র জমা পড়েছে। এর মধ্যে গত বুধবার পর্যন্ত ৩৪টি আবেদন মঞ্জুর করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এই ৩৪টি আবেদনের মধ্যে আবার তিনজন আবেদনকারী তাদের ঋণের অর্থ ব্যাংক থেকে উত্তোলনও করেছেন। যে ৩৪ জন সরকারি চাকরিজীবী গৃহনির্মাণ ঋণের অনুমোদন পেয়েছেন তাদের ৩৩ জন ক্যাডার কর্মকর্তা। বাকি একজন নন-ক্যাডার কর্মকর্তা। নন-ক্যাডার কর্মকর্তা সরকারি এক মন্ত্রণালয়ে পিও (ব্যক্তিগত কর্মকর্তা) হিসেবে কর্মরত।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, যে তিন আবেদনকারী গৃহঋণের অর্থ ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেছেন তারা সবাই অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একেকজনকে ৬৫ থেকে ৭৫ লাখ টাকা ৫ শতাংশ সুদে গৃহঋণ গত জানুয়ারি ও ফেব্রæয়ারি মাসে দেওয়া হয়েছে।
অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যে তিনজন অতিরিক্ত সচিব গৃহ নির্মাণ ঋণ নিয়েছেন তাদের ঋণের সুদের ভর্তুকির অর্থ ইতোমধ্যে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বরাবর ছাড় করা হয়েছে। প্রতিটি ঋণের মাসিক ভর্তুকি বাবদ ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। গৃহঋণের সুদের ভর্তুকির অর্থ বাজেটে রাখা ভর্তুকি ও অন্যান্য খাত থেকে সঙ্কুলান করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
নীতিমালা অনুযায়ী গৃহ নির্মাণ ঋণের সর্বোচ্চ পরিমাণ হচ্ছে ৭৫ লাখ টাকা এবং সর্বনিম্ন ২০ লাখ টাকা। ঋণের বিপরীতে সুদের ওপর সুদ অর্থাৎ চক্রবৃদ্ধি সুদ নেওয়া হবে না। কোনো প্রসেসিং ফি বা আগাম ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে কোনো অতিরিক্ত ফি দিতে হবে না। ঋণ পরিশোধের মেয়াদকাল সর্বোচ্চ ২০ বছর। সরকারি তফসিলি ব্যাংক এবং বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন বাস্তায়নকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, গৃহনির্মাণ কাজের ওপর ভিত্তি করে মঞ্জুরিকৃত ঋণ সর্বোচ্চ চারটি কিস্তিতে ছাড় করা হবে। আর রেডি ফ্ল্যাট অথবা জমিসহ তৈরী বাড়ির কেনার ক্ষেত্রে ঋণের পুরো অর্থ একসঙ্গে দেওয়া যাবে। অনিবার্য কারণবশতঃ মাসিক কিস্তি পরিশোধে দেরি হলে ওই দেরির জন্য আরোপযোগ্য সুদ শেষ কিস্তির সঙ্গে যুক্ত হবে। এ ছাড়া গৃহ নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রথম কিস্তির ঋণের অর্থ প্রাপ্তির সর্বোচ্চ এক বছর পর এবং ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে ঋণের অর্থ প্রাপ্তির সর্বোচ্চ ছয় মাস পর ঋণ গ্রহীতার মাসিক ঋণ আরম্ভ হবে। চাকরিতে চুক্তিভিত্তিক, খন্ডকালীন ও অস্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত কোনো কর্মচারী এ নীতিমালার আওতায় ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবেন না।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোনো কর্মচারী ঋণ নেওয়ার পর স্বেচ্ছায় চাকরি ছাড়লে বা বাধ্যতামূলক অবসর, বরখাস্ত বা চাকরিচ্যুত হলে আদেশ জারির তারিখ থেকে ঋণের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য সুদ বাবদ সরকার কোনো ভর্তুকি দেবে না। এ ক্ষেত্রে ঋণের অপরিশোধিত অর্থ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর পেনশন সুবিধা বা আনুতোষিক সুবিধা থেকে আদায় করা হবে। ঋণগ্রহীতার মৃত্যু হলে তার পারিবারিক পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা থেকে যতটুকু সম্ভব ঋণ পরিশোধ করা হবে। এরপরও ঋণ পাওনা থাকলে উত্তরাধিকারদের কাছ থেকে তা আদায় করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।